পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©Ꮼe অভিপ্রেতবলিয়া প্রকাশ । অতএব দেখা উচিত, যে, যে-সব পুরুষ ও নারী এই সত্যাগ্রহে যোগ দিয়াছেন বা ইহার নেতৃত্ব করিতেছেন, তাহাদের এরূপ উচ্চ কাৰ্য্যের মত চারিত্রিক ও অন্যবিধ যোগ্যতা আছে কি না। এবিষয়ে নজর থাকা উচিত । তারকেশ্বরের মত ক্ষুদ্র জায়গার পক্ষে পতিত নারীর সংখ্যা অত্যন্ত অধিক । খবরের কাগজে পড়িয়াছি, যে, বর্তমান ও ভূতপূৰ্ব্ব মোহান্তদের চরিত্রের ফলে অনেক নারীর চরিত্রভ্রংশ ঘটায়, অংশতঃ, এই অবস্থা হইয়াছে ; দ্বিতীয়তঃ, অধিকসংখ্যক যাত্রী ও দর্শক আকর্ষণ করিবার জগুও, শুনিয়াছি, মন্দিরের কর্তৃপক্ষ পূৰ্ব্বে এইরূপ অবস্থা ঘটাইয়াছে। সত্যাগ্রহীরা ইহার কি প্রতিকার করিয়াছেন বা করিতেছেন, তাহা জানিতে ইচ্ছা হয়। স্থানটি তীর্থস্থান । ইহার নৈতিক হাওয়া সাত্ত্বিক ও পবিত্র হওয়া চাই । পতিত নারীরা যাহাতে সদ্বপায়ে জীবিকা অর্জন করিতে পারে, তাহার ব্যবস্থা সত্যাগ্রহীরা করুন। খবরের কাগজে পড়িয়াছি, যে, তারকেশ্বরে যে-সকল নারী সত্যাগ্ৰহ করিতেছেন, পতিতা নারীরাও র্তাহাদের দলভুক্ত এবং তাহারা অবাধে সকলের সঙ্গে মিশিতেছে। ইহা সত্য কি না, জানি না। সত্য হইলে, ইহা বাঞ্ছনীয় নহে ; কারণ ইহাতে সামাজিক পবিত্রতা সংরক্ষিত ও বৰ্ধিত না হইনিষ্ট হইবার সম্ভাবনাই বেশী। যদি অন্য উপায়ে তারকেশ্বরের সমস্তার সমাধান সম্ভবপর হয়, তাহা হইলে একটা দেশব্যাপী চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা জাগাইয়া রাখা, এবং যুবকদের যে সময় স্বার্থত্যাগপ্রবৃত্তি, শক্তি ও হিতৈণষার অধিকতর স্বফলদায়ক ব্যবহার হইতে পারে, হুজুগে তাহার অপচয় হইতে দেওয়া অঙ্কুচিত। এত গোলমাল ও উত্তেজনায় একান্ত আবখ্যক নানা হিতকর কার্য্য অবহেলিত হয়। " তারকেশ্বরে ও জেলে গুণ্ডামি লর্ড লিটন সম্প্রতি একটা বক্তৃতায় বলিয়াছেন, যে, তারকেশ্বরের ব্যাপারটা একটা বিরাটু ছলনা মাত্র । প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড একথায় সায় দেওয়া যায় না। মোহাস্তের বিরুদ্ধে ও তাহার মন্দির ও জমিদারীর বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে যে একটা সত্য এবং সত্যের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত দেশব্যাপী ক্রোধ ও উত্তেজনা জন্সিয়াছে, তাহা অস্বীকার করিবার জো নাই । শত শত ব্যক্তি যে সরল বিশ্বাসে তারকেশ্বরের অবস্থার উন্নতির জন্য অনেক স্বার্থত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করিয়াছেন, ইহার জন্য যে অনেকের প্রাণসংশয় পৰ্য্যস্ত হইয়াছে, তাহাও স্বীকার করিতে হইবে। নেতার সত্যাগ্ৰহ প্ৰবৰ্ত্তন কি উদ্দেশ্যে করিয়াছেন, সে-বিষয়ে মতভেদ থাকিতে পারে। কিন্তু ইহা নিশ্চয়ই কেবলমাত্র র্তাহাদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উপায়স্বরূপ অবলম্বিত হইয়াছে, সদভিপ্রায় কিছুই নাই এরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিবার মত যথেষ্ট তথ্যজ্ঞান আমাদের নাই। ইহা হয়ত অংশত রাজনৈতিক চাল। কিন্তু তারকেশ্বরের সংস্কার যে খুবই আবশ্যক হইয়াছিল, তাহা বাঙালী কেহ মানেন না বলিয়া অবগত নহি । উপায়-সম্বন্ধে মতভেদ আছে ও হইতে পারে। লর্ড লিটন্‌ সত্যাগ্রহটাকে ত একটা বিরাট্‌ ঠকামি বলিয়াছেন ; কিন্তু তারকেশ্বরে এত সশস্ত্র গুণ্ডার আবির্ভাব ও অত্যাচার কেন অবাধে হইয়াছিল, তাহার কোন খবর ও কৈফিয়ং তিনি লইয়াছিলেন কি ? অস্ত্রীআইন কি ইহাদের জন্য অভিপ্রেত নহে ? গুণ্ডামির বিরুদ্ধে কৰ্ত্তব্য গবর্ণমেণ্ট, পক্ষ হইতে কিছুই করা হয় নাই, বলিতেছি না ; কিন্তু যথেষ্ট নিশ্চয়ই করা হয় নাই । তাহার পর সত্যাগ্রহী নারীদের উপরও পুলিশের লাঠি চালান, তাহাদিগকে টানাহেঁচড়া, তাহাদের বিবস্ত্রীভবন, এবং সেই অবস্থায় তাহাদিগকে হাজতে রাখিয়া দেওয়া, ইহা কি অনিবাৰ্য্য ছিল ? নারী পতিত হইলেও তাহাদের প্রতি দুর্ব্যবহার অমার্জনীয়। অবশ্য লাঞ্ছিত নারীরা সকলেই পতিতা শ্রেণীর নহেন। এখানে কিন্তু ইহাও বলা দরকার, যে, এরূপ টানাহেঁচড়া ও ধস্তাধস্তির মধ্যে নারীদের যাওয়া উচিত নয় । এরূপ কাজের পক্ষে পুরুষের শক্তিই উপযোগী ও যথেষ্ট । বাকুড়া ও আর কয়েকটি জেলে সত্যাগ্রহী কয়েদীদিগকে নিষ্ঠুরভাবে প্রহার করা হইয়াছে। অন্ত দুর্ব্যবহারও হইয়াছে। যাহারা প্রহার করিয়াছে এবং