পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] যাহাদের হুকুমে করিয়াছে, তাহাদের কোন সাজা হইয়াছে বলিয়া কাগজে পড়ি নাই। জেলের বাহিরে একজন বেসরকারী লোক অন্য একজন বেসরকারী লোককে আঘাত করিলে যেরূপ শাস্তি হয়, জেলের ভিতরেও কয়েদীদের উপর সেইরূপ অত্যাচারের দণ্ড ঠিক সেইরূপ হওয়া ত চাই’ই, বরং কিছু বেশী হওয়া উচিত। কেহ জেলের নিয়মভঙ্গ করিলে জেলের অধ্যক্ষের বিচার ও আদেশ অনুসারে কোন কয়েদীর শাস্তি হইলে সে-বিষয়ে আলোচনা অবশ্ব অন্তরকমে করিতে হইবে,—যদিও অধ্যক্ষের হুকুম-অনুসারে হইয়াছে বলিয়াই যে-কোনরকম শাস্তি সঙ্গত ও বৈধ মনে করা যাইতে পারে না । কোন কোন জেলে সত্যাগ্রহীদিগকে র্কাকর-ও পোকা-মিশ্রিত চালের ভাত এবং সিদ্ধ ঘাসের মত স্বাদবিহীন তরকারী দেওয়া হয় । তাহাতে র্তাহারা প্রায়োপবেশন করিবেন, কিম্ব পীড়িত হইবেন, ইহা আশ্চর্য্যের বিষয় নহে । কয়েদীদের প্রতি এইরূপ ব্যবহারকরায় গবর্ণমেণ্টের কোন উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় না, কেবল বর্বরতার অখ্যাতি রটে। গবর্ণমেণ্ট তাহাদের প্রতি দুর্ব্যবহার করিবার হুকুম দিয়াছেন বলিয়া কোন প্রমাণ নাই। কিন্তু দুর্ব্যবহার বন্ধ করিবার জন্য যথেষ্ট উপায়ও ত অবলম্বিত প্ৰয় নাই । জেলে কঠোর নিষ্ঠুর ব্যবহার দ্বারা কোন-প্রকার “অপরাধ” কোন দেশে কমে নাই,—রাজনৈতিক “অপরাধ” ত কমেই নাই। শত বৎসর পূৰ্ব্বে ইংলণ্ডে লঘুগুরু প্রায় দু’শ রকম অপরাধের জন্য প্রাণদও হইত ; কিন্তু তাহাতে অপরাধপ্রবণত কমে নাই ;—কমিয়াছে শিক্ষাবিস্তার ও অন্যান্য স্বসভ্য উপায় দ্বারা । সভ্য ও স্বাধীন দেশসকলে রাজনৈতিক অপরাধ কমিয়াছে, জনসাধারণের শিক্ষা, অধিকার ও দায়িত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গে ; জুলুম, জবরদস্তি, কঠোর আইন ও অমান্থষিক শাস্তির দ্বারা নহে । - তারকেশ্বরের সত্যাগ্রহের বিষয় লিখিতে গিয়া একটি সাধারণ কথা আমাদের মনে উদিত হইয়াছে, তাহা বলা আবশ্যক। জাতীয় জীবনে এমন সময় কখন কখন আসে,

  • S-S o

বিবিধ প্রসঙ্গ—সিরাজগঞ্জে গোপীনাথ-সম্বৰ্দ্ধনা ぐやり> যখন রাষ্ট্রীয় শক্তির অবাপ্য হইয়া বিদ্রোহী হওয়! আবশ্যক এবং উচিত বিবেচিত হইয়া থাকে। অবাধ্য ও বিদ্রোহী না হওয়াটাই তখন অধৰ্ম্ম । কিন্তু সাধারণতঃ রাষ্ট্রীয় বিধি ও নিয়ম এবং কর্তৃপক্ষের তাদেশ মানি ; চলাই কৰ্ত্তব্য, কেননা, যেমন বিধির আনুগত্য ব্যতিরেকে জড়জগৎ চলে না, তেমনি সভ্যসমাজও চলে না । বিধি-সঙ্গত উপায়ে কোন অনিষ্টকর অবস্থার প্রতিকার না হইলে অগত্য বিদ্রোহের পথ অবলম্বন করিতে হয় । কিন্তু প্রথমে বিধিসঙ্গত উপায়ই অবলম্বনীয় । তারকেশ্বরে তাহা হইয়াছে কি না, নেতার ধীর-শাস্তভাবে ভাবিয়া দেখিবেন । সিরাজগঞ্জে গোপীনাথ-সম্বৰ্দ্ধনা এই বিষয়ে আষাঢ় সংখ্যায় আমাদের মন্তব্য মুদ্রিত হইয়া যাইবার পর “সারথি” কাগজে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ইংরেজী অনুবাদ অক্ষুধায়ী বাঙ্গলা প্রস্তাবটি আমরা দেখিতে পাই । সেইটি ও তাহার আগের প্রস্তাবটি ঐ কাগজ হইতে নীচে উদ্ধ ত করিতেছি । ১ । এই সন্মিলন বঙ্গের স্বসস্তান অশ্বিনীকুমাব দত্ত, নলিনীনাথ রায়, পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়, চারুচন্দ্র ঘোষ, আশুতোষ চৌধুরী এবং আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়গণের পরলোক গমনে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করিতেছে, এবং তাহদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদন জ্ঞাপন করিতেছে । ২ । এই সন্মিলন সর্বপ্রকার হিংসভােব বর্জন ও অহিংসভাবকে মূলনীতিস্বরূপ গ্রহণ করিয়াও মৃত গোপীনাধ সাহার আত্মত্যাগের উচ্চ আদর্শ হৃদয়ঙ্গম করিয়া মাতৃভূমির স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাপ্ত হইয়াও যে মহান স্বাথ ত্যাগ করিয়াছে তল্লিমিত্ত তাহার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করিতেছে । প্রস্তাবটি প্রথমে যে-ভাষায় কাগজে ওরূপে বাহির হইয়াছিল, সিরাজগঞ্জের অধিবেশনে উহা মোটামুটি সেই আকারেই উপস্থাপিত ও গৃহীত হইয়াছিল বলিয়া আমরা মনে করি, এবং তাহা মনে করিবার কারণও আমরা গত সংখ্যায় লিখিয়াছিলাম। কিন্তু আমরা ঐ অধিবেশনে স্বয়ং উপস্থিত ছিলাম না। সুতরাং আমাদের ভ্রম হইবার সম্ভাবনা আছে মনে করিয়া আমরা তর্কের খাতিরে উপরে মুদ্রিত রূপ ও ভাষাই উপস্থাপিত ও গৃহীত প্রস্তাবের ভাষা ও রূপ বলিয়া ধরিয়া লইতেছি। কিন্তু তাহাতে আমাদের গত মাসে প্রকাশিত মস্তব্যের বিশেষ কোন পরিবর্তন করা আবশ্ব্যক বোধ হইতেছে না ;