পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৮ গির্জাহীন পল্লী একপ্রকার নাই বলিলেই চলে। গিজার মোহস্ত,পল্লীর কিষাণ, রাজমিস্ত্রী, মুচি, গোয়ালাদের উপর একছত্র শাসন-ভোগ করে। ক্যাথলিক নরনারীর চিস্তায় পুরুত, ঠাকুর সাক্ষাং দেবতা বিশেষ । বার মাসে তের পাৰ্ব্বণের ব্যবস্থা ইহাদের আধ্যাত্মিকতার মামুলিকতা। লুগানো হ্রদের এক কিনারায় মোর্কোতে শহর বা পল্লী। কাষ্টাঞোলা হইতে ষ্টীমারে চড়িয়া পল্পীট দেখিয়া আসা টুরিষ্ট মাত্রের সখ। মন্দিরটা উল্লেখযোগ্য । লুথানো সহরের ভিতর নানাসম্প্রদায়ের বিভিন্ন গির্জা ত আছেই। অধিকন্তু টেসিনের খাটি স্বদেশী অর্থাৎ ইতালীয় গির্জাও চোখে পড়ে । - মন্দিরগুলার ভিতরে ইতালীয় চিত্রকরদের আঁকা ছবি আছে, বলাই বাহুল্য। লুইনির আঁকা *মা মেরী” শিল্পীদের মহলে সুপরিচিত। হোটেল হেলহোর্টুসিয়াতে ঘরে বসিয়াই কাষ্টাঞোলার গির্জাটা চৌপর দিন-রাত দেখিতেছি। রবিবার সকালে আর দুপুরবেলা খাওয়া-দাওয়ার পর ঘণ্টা-ধ্বনি কানে প্রবেশ করে । আর রাস্তায় দেখি মন্দিরযাত্রী পল্লীবাসীদের সারি। ধর্মের আওতা ক্যাথলিক-মহলে বেশী কি হিন্দু-মহলে বেশী ভাবিয়া-চিন্তিয়া বিচার করিবার বিষয়। ( २२ ) “ফিও (ফুল), “ফিও” বলিয়া এক পাচছয় বৎসরের ইতালীয় বালিকা প্রায়ই আসে, হোটেলে বেগুনী ফুল বেচিতে। ইহার ভাই যায় স্কুলে, আর বাপ কাজ করে সড়কে রাজমিস্ত্রীর। হোটেলের অনতিদূরেই পাহাড়ের গায়ে উহাদের বাড়ী । একদিন ইহার মার সঙ্গে সুখদু:খের কথা হইল । শুনিলাম, "হোটেলওয়ালা আমাদিগকে বিপদে-আপদে সাহায্য করে। ইহার ছেলে-মেয়ের জাম-কাপড় পুরানো হইয় গেলে আমার শিশুরা সেইসব পায়। দেখিতেছি, পাড়াপড় শীদিগকে মনে রাখা ভারতীয় পল্লী-পঞ্চায়তেরই একচেটিয়া সদগুণ নয়। প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৬১ | [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বইস্ ইতালীয় নাপিতনী এক ব্যবসায়ী তাহার স্ত্রীকে বায়ুপরিবর্তনের জন্য হোটেলে রাখিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্রে ফিরিয়া গেল । স্ত্রী, স্বামী ছাড়িয়া একলা থাকিতে রাজি নয় । কান্নাকাটি চলিতেছে দিনরাত। লুগানো হইতে বাজেল পৰ্য্যন্ত টেলিফোনে কথাবাৰ্ত্ত হয় প্রতিদিন । ছেলেপুলেদেরকে ফেলিয়া দূরদেশে নিজ স্বাস্থ্যমুখ ভোগ করা এই স্নইসনারীর চিন্তায় বিলাস ও পাপবিশেষ। সুরতীয় নারীদের ভিতর র্যাহারা অতি সতী তাহারা এই স্বইস্-ব্যবসাদারের পত্নীকে হারাইতে পারিবেন কি ? আমাদের দেশে যেমন সীতা, সাবিত্রী ইত্যাদি পতিব্ৰতার কাহিনী আছে সেইধরণের কাঁহনী ইয়ােরোপের সাহিত্যে গণ্ডা-গণ্ড শুনিতেছি । জাৰ্ম্মান নরনারীরা সেইসকল আদর্শ সম্মুখে রাখিয়াই জীবন গড়িয়া তুলিতে শিখে ।