পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ রবীন্দ্র-সাহিত্যে বাংলার পল্লী-চিত্র వరి) থেকেও আমরা সেই সময়ের এবং তার আগেকার কালের গ্রাম্যজীবনের চমৎকার চিত্র পাই । বাংলা দেশের গৃহস্থদের মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো ব'লে যে একটি কঠিন অন্তবেদন আছে, তার চমৎকার চিত্র রয়েছে এই ছড়াটিতে —“বাপ কঁীদেন, মা কঁীদেন’•••ইত্যাদি। বাপ মা ত কদবেনই কিন্তু— বোন কানে বোন করেন থাটের পুরে ধীরে - সেই যে বোন গাল দিয়েছেন ভাতারখাকী ব’লে । এই ছড়াগুলি কতকালের কে জানে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন কেমন ক’রে এইগুলি এবং হর-গৌরী’ 'কৃষ্ণ-রাধা বিষয়ক আরওঁ অনেক ছড়ার ভিতর দিয়ে বাংলার চিরন্তন আনন্দ-বেদনাগুলি রূপ পেয়ে এসেছে। এ ছাড়া ‘স্বদেশ’, ‘স্বদেশী সমাজ সমাজ ‘শিক্ষা' ইত্যাদি পরের লেখাগুলিতেও আমরা সংস্কারকের চোখে তৎকালীন পল্লীষ্টীবনের চিত্র কিছু কিছু পাই। আগেই বলা হয়েছে—রবীন্দ্রনাথের লেখা গায়ের জীবনের কথা নিয়ে বিচার করতে গেলে বরাবর মনে রাখতে হবে তিনি কখনই গায়ের এক জন ছিলেন না, মাত্র কিছুদিনের জন্ত গায়ের বাইরের এক জন ছিলেন । সুতরাং এ চিত্রগুলিকে চিত্র-ছাড়া ফটোগ্রাফির বিচার দিয়ে দেখতে গেলে এগুলির উপর অষ্ঠায় করা হবে । এ-কথা বললে অপ্রসঙ্গিক হবে না, যে, রবীন্দ্রনাথ নিজেও এ-কথা বেশ ভাল ক’রে জানতেন। তার সাহিত্যজীবনের প্রথম দিকের বন্ধু শ্ৰীশচন্দ্র মজুমদার যখন ‘ফুলজানি’ উপন্যাসখানি লিখলেন তখন রবীন্দ্রনাথ তাকে লেখেন— বাংলার অন্তদেশবাসী নিতান্ত বাঙালীদের মুখ-দুঃখের কথা এ পর্য্যন্ত কেহই বলেন নি।---আমাদের, এই চিরপীড়িত, ধৈর্যাশীল, ধজনবৎসল বাস্তুভিটাবলম্বী প্রচণ্ডকৰ্ম্মশীল পৃখিবার এক নিভৃত প্রান্তবাস শাস্ত বাঙালীর কাহিনী কেউ ভালে'ক'রে বলে নি।-- আপনার লেখার মধ্যে সেই বাংলার সন্ধান পাওয়া মায় । , আপনার লখার মধ্যে বাংলার ছেলেমেয়ের প্রতিনি গৃহের মধ্যে যে রকম কথা কয় ও যে রকম কাজ করে তাই দেখতে পাওয়া যায়। অন্ত কারও অর্থব ক্ষুদ্র আমার লেখায় সেইটি হবার ধে! মেই।” ছিন্নপত্র---১১-১৭ পূ- ) -- - ५द्र मां लिङ्ग অনেকখানি থাকলেও খানিকটা মন্ত্রত সত্য ছিল । . . . পৗশল লক্তে ও মান ত্ৰি মৰি - গ্রাম্য গৃহস্থ:দর কথাই সব নয়, পল্লীর মধ্যে প্রবলপ্রতাপ জমিদারও থাকেন এবং অতি সহজ কারণে রবীন্দ্রনাথ যেখানে এই রকম কোন চিত্র এ কেছেন সে চিত্র সাধারণ গ্রাম্য জীবনের চিত্রের চেয়ে বেশী বাস্তব হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ঠাকুৰ্মা গল্পের নয়ানজোড়ের বাবুরা তাদের গায়ে লাগবে ব’লে তারা ঢাকাই মসলিনের কাপড়ের পাড় ছিড়ে পরতেন, বিড়ালের বিয়েতে লাথ টাকা খরচ করতেন, রাত্রে দিনের আলো করবার জন্তে আতসবাজির ওপর আকাশ থেকে সাচ্চ রূপেীর জরি ছড়িয়ে ফেলতেন। গোযোগের মুকুনালালের বর্ণনা একবার পড়লে আমার কথার সত্যতা অক্ষরে অক্ষরে প্রতীয়মান হবে পুরাতন কালের প্রথামত মুকুন্দলালের জীবন দুই মহলা । এক মহলে গার্হস্থ্য, আর এক মহলে ইয়ার্কি। অর্থাৎ এক মহলে দশকৰ্ম্ম, আর এক মহলে একাদশ অকৰ্ম্ম । ঘরে আছেন ইষ্ট:দবতা আর মুরের গৃহিণী। সেখানে পূজা-অৰ্চনা, অতিথি সবা, পাল-পাৰ্বণ, ব্ৰতউপবাস, কাঙালা-বিদায়, ব্রাহ্মণ-ভোজন, পাড়-পড়শী, গুরু-পুরাঞ্ছিত। ইয়ার-মহল গৃহ-সীমার বাইরেক্ট, সেখানে নবাব। আমল, মজলিসি সমারোহ সরগরম ইত্যাদি । আমরা আমাদের আলোচনা প্রায় শেষ ক’রে এনেছি। এ-কথা মনে হ’তে পারে যে, হ':ন’ক ক্ষেত্র রবীন্দ্রসাহিত্যের মাত্র একদেশ ভাগে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তা বটে, কিন্তু সেটা অবশ্যম্ভাবী, কারণ উপরিউক্ত সময়ের মধ্যেই আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায়। এর পরই বলা যেতে পারে রবীন্দ্রনাথের কৰ্ম্ম বা ব্রতঞ্জীবন আরম্ভ হ’ল (শাস্তিনিকেতনে ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রম স্থাপিত হয় ১৯০১এর ২২শে ডিসেম্বর তারিখে ) এবং বাংলার এক পল্লী-আবেষ্টনী থেকে আর এক সম্পূর্ণ বিভিন্ন রকমের পল্লী-আবেষ্টনীর মধ্যে র্তার কৰ্ম্মক্ষেত্র স্থানান্তরিত হ’লেও জীবন ও ভাবধারা নূতন পথে চলতে আরম্ভ করল। সমস্ত অবসর দিয় শুধু বাংলার পল্লীচিত্র দেখা ও আঁকা, এর আর সময় রইল না। বহু পরে রচিত *ङ्ग् উৎসবের পালাগুলিতে শুধু ছয় ঋতুর যে রূপগুলি ধরা দিয়েছে, সেগুলিকেও পল্লীচিত্রেয় পর্যায়ে ফেললে, ভুল করা হবে i* ; : - . ‘রাজগদক পুরস্কার প্রাগুণ