পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১৮ কর্তা সেদিকে কোন কাপণ্য করেন নাই। কিন্তু সেগুলি এখন কোন কাজে লাগিবে ? নিজের মেয়ে নাই যে পরিবে, ছেলেও নাই যে ঘরে একটি বউ লইয়া আসিবে। ডিনি বরং ঐ হাজার-বারো-শ টাকার কাপড় জ্বালাইয়া দিবেন, তবু ঐ উনানমুখী সতীনপো-বেীদের দিয়া যাইতে পরিবেন না। থাক তাহার সঙ্গেই এ-সব, যে-বাড়িতে আশ্রয় পাইবেন, সে-বাড়ির বেী-ঝিদের দিলে বরং তাহদের মন পাওয়া যাইবে গহনা এতদিন গায়ে পরিয়াছেন ত যথেষ্ট, কিন্তু সেগুলির উপর তাহার অধিকার আছে কি ? কৰ্ত্ত ছিলেন হিসাবী মানুষ, বড়গিল্পীর সিন্ধুক ভৰ্ত্তি গহনা ছিল, তাহার ভিতর হইতেই বেশ গা-সাজান অনেকগুলি গহন তিনি ছোটগিল্পীকে বাহির করিয়া দিয়াছিলেন । অনর্থক স্যাক্রাকে একরাশ টাকা বানি দিয়া হইবে কি ? ছেলের বউরা স্বর্গগত। শাশুড়ীর গহনা সৎ-শাশুড়ীর অঙ্গে দেখিয়া রাগে জলিয়া যাইত, কিন্তু মুখ ফুটিয়া কিছু বলিবার উপায় ছিল না । স্বামীদের কাছে নালিশ করিলে তাহার বলিত, “তোমরাও ত অনেক পেয়েছ বাপু, তা অত হিংসে কেন ? ওটা যমের বাড়ি যাক, তারপর সবই তোমাদের হবে ।” ছোটগল্পী যমের বাড়ি ত গেলেন না, কিন্তু পাছে গহনা লইয়া বীপের বাড়ি পলায়ন করেন, সেই ভাবনায় তিন বেী অত্যন্ত সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিল। বড়বে। একবার সৎ-শাশুড়ীর দরজা ঘুরিয়া আসিয়াছে, সে আর যাইতে রাজী হইল না । বলিল, “লাভ হ’লে সকলের হবে, আমি একলা নিমিত্তের ভাগী হব কেন ?” অগত্যা মেজবৌ এবার চলিল । সাহস সঞ্চয় করিয়া লোজাসুজি নবদুর্গার ঘরে ঢুকিয়া পড়িয়া বলিল, “জিনিযপত্তর গোছান হয়ে গেল নাকি ?” নবদুর্গ রাগ দমন করিবার চেষ্টা করিতে করিতে বলিলেন, “একলা হাতে যতদূর হবার তা হয়েছে।” আজ আর র্তাহার রাগকে কেই বা গ্রাহ করে ? মেজবোঁ বলিল, “তোমার ছেলে বলছিলেন কি, গহনানীটিগুলো যেন নিতে গিয়ে পথে বিপদ বাধিও না । রাস্তাঘাট ভাল না, তার উপর একলা যাচ্ছ ” এই ভয়ই এতক্ষণ নবদুর্গা করিতেছিলেন। সতীন e৫ প্রবাসী সঠe ఎన98S পুত্ররা তাহাকে শুষ্ঠ হাতেই বাড়ির বাহির করিয়া দিতে চায়। বাপের বাড়ি হইতে তিনি সোনার মাকড়ী আর মাথার ফুল কাটা ভিন্ন কোন সোনার গহনাই পান নাই। বুড়া বরকে অমন লক্ষ্মীরূপিণী মেয়ে ধরিয়া দেওয়া হইল, আবার সোনার গহনাও দিবে ? অত আর না । নবদুর্গার সারা অঙ্গে যে পঞ্চাশ-ঘাট ভরির সোনার গহন ঝক ঝক্‌ করিত, সবই এ-বাড়ির দেওয়া । কৰ্ত্তা যদি গড়াইয়া দিতেন, তাহা হইলে কোন ছোটলোকের বেটীকে আর কথা বলিতে হইত না । কিন্তু এ বে সতীনের গহনা, ঠাহীর দাবি কোথায় এগুলির উপরে ? জোর করিয়া কিছু বলিতে গেলে শেষে অপমানিত হইয়া বিদায় হইতে হইবে। কাজ কি বাপু ? গহনার বক্সট বড় ট্রাঙ্ক হইতে বাহির করিয়া তিনি ঠক্‌ করিয়া মেঝের উপর বসাইয়া দিলেন । তাহার ভিতর হইতে ফুল কাটা ও মাকড়িগুলি বাছিয়া লইতে লইতে বলিলেন, “নিয়ে যাও গে, তোমাদের গহনাতে আমার কােজ নেই, বুকে ক’রে আগলে রাখ। হাতের নোয়াই যখন ঘুচল, তখন ও-সব ছাইভষ্মে আমার কাজ কি ?” মেজবোঁ অনেমে আটখানা হইয়া গহনার বাক্সটি উঠাইয়া লইয়া প্রস্থান করিলেন । এগুলি উদ্ধারের আশা তাহারা ভরসা করিয়া এতদিন করিতে পারেন নাই । তিন বউয়ে ভাগ-বাটোয়ার লইয়া মহা ব্যস্ত হইয়! পড়িলেন । ছেলেরাও আসিয়া যোগ দিলেন । গোলমালের মধ্যে নবদুর্গ বিদায় হইয়া গেলেন। গহনা পাওয়ায় সকলে তখন এত খুশী যে সৎ-মা ঘটিবাট লইয়া পলায়ন করিতেছে কিনা তাহ আর কেহ দেখিতে আসিল না । বহু বৎসর পরে নবদুর্গ মামার বাড়ি ফিরিয়া আসিলেন । স্বামী বিবাহের পর সেই যে লইয়া গিয়াছিলেন, আর ফিরিয়া পাঠানোর নাম করেন নাই। বাড়ির গৃহিণীর অত বড় সংসার ফেলিয়া সারক্ষিণ হটর হটর করিয়া মামার বাড়ি যাওয়া পোষায় না, তা আবার বীপের বাড়িও না । তাহার একটা মানসস্ত্রম ছিল ত ? নবস্তৃর্গার মা এ সংসারে আশ্রিত বিধবা ভগিনী ছিলেন, তাহার আর কিইবা প্রতিপত্তি ? অনেক ঝগড়া-বাটি করিয়া বড় মামাতো