পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পোষ মুক্তি vENEVE “কি কাজ দাদা ? গ্লাসে কি একটা পদার্থের সহিত সোড়া মিশাইতে ‘এস । পথে যেতে যেতে বলব।’ মিশাইতে তাহাই ভাবিতেছিল । এই ভাবনার অন্ধকারে মুরলী কহিল, আমার কয়েক দিনের মধ্যে এক হাজার কার দরকার । টাকাটা তুমিই চেয়ে দাও । তোমাকে চামার নিজের বাড়িতেই নিয়ে যাচ্ছি।’ নিৰ্ম্মলা কিছুক্ষণ ভাবিয়া ব্যাপারটা বুঝিল । সে আর মস্তই ভুলিয়ছিল, ভুলিতে প্রস্তুত । কিন্তু সেই তুচ্ছ চনার প্রসঙ্গ লইয়া পিতার অপমান ভোলে নাই। বিশেষতঃ বা এখন মৃত্যুশয্যায়। বলিল, “ছোটদা, ওঁদের কাছে Fছু চাইতে আমার আত্মসম্মানে বাধে ।” মুরলী কহিল, কিন্তু আমার সে টাকাটার এত প্রয়োজন যে, তামার আী সন্মানে বধিলেও আমি চাইতে অনুরোধ করব । র চেয়ে বেশী আর কিছু ব’লতে পারব না । মি বুঝতে পারবে আমি কত অসহায় ।”

  • আচ্ছা চল ? তাহারা যখন ধৰ্ম্মতলার বাড়িতে পৌছিল তখন সেড়ির আর সমস্ত ঘর অন্ধকার । কেবল যামিনীয় শয়নক্ষে আলো জলিতেছে। সেইমাত্র একটু আগে দেবীপ্রসাদ সিয়া খবর দিয়া গিয়াছে শেয়ার-মার্কেটে তাহার অনেক কী লোকসান পড়িয়ছে। তাহার উপর সেই যে দুইতন দিন আগে মুহূর্তের জন্ত নিৰ্ম্মলাকে দেখিয়াছিল সেই ইতে যামিনীর মন অশাস্ত, চঞ্চল । প্রতি নিমেষে তাহার ন হইতেছে সেখানে ছুটিয়া যায়, তাহীকে আর একবার খে । কিন্তু প্রত্যেকবারেই একটা ভয়ের মত হইতেছে ।

• যদি সে সমস্ত জানিতে পারে, যদি সে ঘৃণা করে । তাই হার মনে সাহসও নাই, শাস্তিও নাই । - যামিনীর অনেক গুণ ছিল, কিন্তু তাহার মহদোষ সে তিরিক্ত দুৰ্ব্বল । তাহার মত ধরণের মানুষরা যদি ৗবনের সফলতার সোপানে একবার উঠতে আরম্ভ করে বে আর কোন দিকে তাকায় না, কিছু ভাবে না ; প্রফুল্ল ন উৎসাহে ভর করিয়া উঠিতে থাকে। কিন্তু যদি কোন fরণে একটুখানি শ্বলন হইয়া পড়ে, অমনি অন্ধকারে tহাদের সারা চিত্ত আচ্ছন্ন হইয়া যায়। অবিরত ভাবিতে কে, "আমার সব গেল, আমার সব গেল |’ ঘামিনীও উজ্জ্বল আলোকিত শূন্ত ঘরে এক বসিয়া এর থেকেই সে অন্ত দিনের চেয়ে অনেক বেশী মদ খাইয়া ফেলিয়াছিল । দুয়ারের কাছে মুরলীর সঙ্গে যখন নিৰ্ম্মল! আসিয়া দঁাড়াইল তথন হাতের গ্লাসটা ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া আপন মনে কি বিড়বিড় করিয়া বকিতেছিল। গ্লাসের পানীয় মেঝের উপর ছড়াইয়া পড়িয়া তীব্ৰ য়্যালকোহলের গন্ধে সমস্ত ঘর এবং বাহিরের হাওয়াকে ভারাক্রান্ত করিয়া তুলিয়াছিল। পায়ের আওয়াজ পাইয়া মুদিত চক্ষেই কহিল, “কি বাবা দেবীপ্রসাদ, আবার এসেছ ? এবারে কি খবর মাইরি বলছি সত্যি ক’রে বল দেখি ” নিৰ্ম্মল সেই অন্ধকার বারানাতে দাড়াইয়াই অফুষ্ট কণ্ঠে কহিল, "ছোটদা, ও যে মাতলি ! আমি ঘরে যাব না।’ ব্যাপার দেখিয়া মুরলী নিজেও অবাক কম হয় নাই । তথাপি কহিল, ‘ভয় কি ? তুমি ঘরে যাও । ওঁকে শুশ্রুষা ক’রে সুস্থ করাও ত দরকার । না-হয় আজ আমরা রাত্তিরটা এখানেই থাকব । ত!’হলে আমি একবার কেবল বাড়িতে গিয়ে খবর দিয়ে আসি । আর সতীশকে ব’লে আসি, সে রাত্রিবেলায় বাবার কাছে থাকবে ।” নিৰ্ম্মল মুরলীর পাঞ্জাবির খুট চাপিয়া ধরিল । ভীত আৰ্ত্ত কণ্ঠে কহিল, "ছোটদা আমার ভারি ভয় করছে। আমার হাত-পা কঁপিছে। তুমি আমাকে এ-বাড়িতে এক ফেলে কোথাও ঘেও না । আমি•••ন না, মাতালে কি করে ছোটদা ? ও কি আমায় মারবে ? মুরলী ক্ষণকালের জষ্ঠ নিজের চিস্তা বিস্তুত হইয়া নিৰ্ম্মলার মুথের দিকে চাহিল । তাহার চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়িতে লাগিল । নিঃশ্বাস ফেলিয়া কহিল, "আচ্ছ, বাড়ি ফিরে চল, কিন্তু আমি কেবল ভাবছি বোন, নিজের স্বামীকে দেখে তোমার এত ভয় । এর পরে দুর্ভর দিনরাত্রি তোমার কাটবে কি করে ? 3 মিথিলের মুখে খবর পাইয়া যামিনী অপরাধীর মত চঞ্জকান্তের শোকাওঁ বাড়ির দ্বারপ্রাস্তে আসির, আবার জাড়াইল। পূর্বদিন রাজিতে মুরলী বিষ খাইয়া আত্মহত্য করিয়াছে । কাহাকেও কোন কারণ বলিয়া যায় নাই ।