পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

qSbr “বিশেষ অনুরোধক্রমে দেশীয় প্রাচীন অক্ষরের পরিবর্তে ইজরেজী অক্ষর ব্যবহারকরণ বিষয়ে এতদেশীয় লোকেয়দের প্রতি এক আবেদন পত্র আমরা এই সপ্তাহে প্রকাশ করিলাম।---আমারদের সন্মত মিত্রগণ ও আমরা যদ্যপি এতদ্রুপ অক্ষর পরিবর্তনের ঔচিত্য বিষয়ে এবং তাঁহাতে কৃতকাৰ্য্যতার সম্ভাবন বিষয়ে ঐ পত্র লেখকের প্রতিকুল বোধ হয় তথাপি ঐ নিয়মের পক্ষে যে অতিপ্রবল যুক্তিক্রমে যাহা কহ যাইতে পারে তাহার চুম্বক আমারদের পাঠক মহাশয়েরদের নিকটে প্রস্তাব ఏ98S করণের যে এই সুযোগ হইল ইহাতে আমারদের পয়মানন্দ অাছে ফলতঃ এই নূতন নিয়মের দোষগুচক দুই এক পত্র পুৰ্ব্বে আমরা দর্পণে প্রকাশ করিয়াছি এবং ঐ পত্র যদ্যপিও লঘুতর তথাপি তাহ। প্রকাশ করণের এই উত্তর আমাদের দর্পশে অবশ্যই প্রকাশ করিতে হইল। যদ্যপি এই নতন নিয়মের দ্বারা এতদ্দেশীয় তাবৎ প্রচলিত অক্ষরের সমূলোৎপাটন না হয় তবু উদ্যোগাভাব বলিয়া যে ঐ নিয়ম নিষ্ফল হইবে এমত কহ। যাইতে পারা যায় না ।” সাহিত্যের ভাষা ও বস্তু গ্রীসীতা দেবী মানুষের জীবনের নানা কৰ্ম্মক্ষেত্রে, অর্থাৎ সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রেই দুইটি সম্পূর্ণ বিভিন্ন ধৰ্ম্ম কাজ করিতেছে দেখা যায়। এক রক্ষণশীলতার ধৰ্ম্ম, আর একটি নুতনকে আহবান করিয়া আনার ধৰ্ম্ম । এই দুইটিরই প্রয়োজন আছে । সময়-বিশেষে একটি আর একটির অপেক্ষা অধিক প্রয়োজনীয় হইয়া উঠে । পুরাতন যাহা-কিছু তাহাই শুধু আঁকড়াইয়া ধরিয়া ক্রমাগত তাহারই জয়গান করিলে যেমন চলে না, নুতন যাহা-কিছু তাহাকেই নিৰ্ব্বিচারে ডাকিয়া আনিলেও সেইরূপ চলে না । আমাদের আজ বঙ্গসাহিত্যের বিষয় আলোচনা করিবার দিন। সাহিত্যকে নানা দিক দিয়া দেখিয়া, নানাভাবে তাহার আলোচনা করিয়া অনেকে অনেক কথা লিথিয়াছেন। আমি ইহার মধ্যে সংক্ষেপে খালি কয়েকটি কথা বলিতে চাই । বাংলা-সাহিত্যের বর্তমান অবস্থায় আজ আমরা কোন ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিব ? পুরাতন যাহা ছিল, দ্বিধামাত্র না করিয়া, তাহার দিকে সমালোচকের দৃষ্টিতে একেবারেই না-তাকাইয়া, ভিন্নদেশীয় সাহিত্যের সহিত তাহার তুলনামাত্র না-করিয়া, তাহাকেই রক্ষা করিবার চেষ্টা করিব, না কোথায় ইহার অভাব, কোথায় ইহার ক্রটি তাহা বিশ্লেষণ করিয়া সে ক্রটিগুলি মোচনের চেষ্টা করিব ? সাহিত্যের ভাষা এবং সাহিত্যের বস্তু দুইটির বিষয়ই এখন ভাবিবার সময় আসিয়াছে। সাহিত্যের তাষা কি হওয়া উচিত তাহা লইয়া ত আজকাল যথেষ্ট আলোচনা চলিতেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো স্থিরসিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় নাই | দারুণ সংস্কৃতগন্ধী পুরাতন যে বাংলা ভাষা আমরা শিশুকালে দেখিয়ছি, এবং এখনও মধ্যে মধ্যে দেখিতেছি, তাহাই কি রক্ষা করিবার চেষ্টা করা হইবে, না, অতি হাল্কা ও পলুকা, মেরুদণ্ডহীন, প্রাদেশিকতাদুষ্ট অভিনব যে বাংলা ভাষার আজকাল আবির্ভাব হইয়াছে তাহাকেই যথার্থ বাংলা ভাষা বলিয়া বরণ করিয়া লইতে হইবে ? উভয় পক্ষেই মহামহ রর্থী তর্ক করিতে প্রস্তুত আছেন । আমাদের মত যাহার যুদ্ধে অবতীর্ণ হইতে নারাজ, তাহারা ব্যাকুল ভাবে অপেক্ষা করিতেছেন এই তর্কযুদ্ধের ফলাফলের জন্ত । কিন্তু ভাষা ও সাহিত্যের নিজস্ব একটা প্রাণশক্তি আছে, উহা কাহারও অপেক্ষ না-করিয়া কাজ করিয়া যায় । সম্ভবতঃ ইহারই ফলে আমরা ঐ উভয় শ্রেণীর ভাষা ভিন্নও বাংলা ভাষার আর একটি রূপ দেখিতে পাইতেছি, যাহাতে কাজ বেশ চলিয়া যাইতেছে, এবং যাহাকে লইয়া কোন তুমুল তর্ক বাধিয়া উঠিবারও সস্তাবনা দেথা যাইতেছে না । এই ভাষার গঠনপ্রণালী পুরাতন বাংলার মত, কিন্তু শব্দসম্ভার এত গুরুভার নয়, সচরাচর যে-ভাষায় আমরা কথা বলি, তাহার সহিত সাদৃপ্ত ইহার অনেকটাই আছে। ইহা পড়িতে চক্ষু কাতর এবং মন ভারাক্রাস্ত হয় না এবং শিশুদিগকে এই