পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sour. ఏం&S পৃথিবীতে পাপী নানারূপ মুখ অনুভব করিতেছে ও পুণ্যকারী দুঃখ ভোগ করিতেছে—কিন্তু, ইহা দৃশ্যতঃ সত্য বলিয়৷ বিবেচিত হইলেও বাস্তবিকপক্ষে সম্পূর্ণরূপে সত্য নয়, কারণ পাপপুণ্যের বিপাক বা পরিপাক প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত পুরুষের প্রত্যয়ে এইরূপ বিসদৃশ ভাব পরিদৃষ্ট হইয়া থাকে মাত্র । ‘ধৰ্ম্মপদ গ্রন্থে ( পাপবগ গে ) এইরূপ উপদেশ আছে,— “তোমার নিকট পাপকৰ্ম্ম আসিবে না, এই মনে করিয়া তুমি পাপকে অবস্থা করিও মা ; তোমার নিকট পুণ্যকৰ্ম্ম উপস্থিত হইবে মা ইহা মনে করিয়া পুণ্যকেও অবজ্ঞা করিও না। কারণ, বিন্দু বিন্দু করিয়া জলপাতে যেমন জলকলস পরিপূর্ণ হইতে পারে, তেমনি মুর্থ বা অজ্ঞানী ব্যক্তি অল্প অল্প পাপ সঞ্চয় পূর্বক, এবং ধীর বা জ্ঞানী ব্যক্তি তেমনি অল্প অল্প পুণ্য সঞ্চয় পূর্বক যথাক্রমে পাপ ও পুণ্যে পরিপূর্ণ হইতে পারে। প্রভূত-ধনবিশিষ্ট বণিকের যেমন স্বল্পসংখ্যক সঙ্গী সঙ্গে থাকিলে, ভয়সস্কুল পথ পরিত্যাগ বিধেয় এবং যেমন জীবনাভিলাষী ব্যক্তির পক্ষে বিষ-বর্জন বিধেয়, তেমন পুদৃগলের বা জীবের পক্ষেও পাপ-বর্জন সৰ্ব্বদা কাৰ্য্য ।” কারণ, কি অস্তরীক্ষে, কি সমুদ্রতলে কি পৰ্ব্বতগুহায়— জগতে এমন কি কোন নিভৃত স্থান আছে, যেখানে পাপ অনচরিত থাকিতে পারে ? তাই, সেই শাস্ত্রে আরও উপদেশ खुछ्रे-- গন্তুমেকে উপপজ্জস্তি নিরয়ং পাপকম্মিনে । সগ গং স্বগতিনে যস্তি পরিনিব্বস্তি অনাসবা । ( পাপবগ গো-১১ । ) এই শ্লোকে কৰ্ম্মবাদ সম্বন্ধে বৌদ্ধগণের বিশ্বাসটি কুন্দর ভাবে উল্লিখিত পাওয়া যাইতেছে। তাহাদের ধারণা এই যে, “পাপ আচরণ করিয়া কেহ কেহ পুনর্জন্ম জন্য গর্ভ পরিগ্রহ করিয়া থাকে, কেহ কেহ নরকে গমন করে, কিন্তু, পুণ্যকৰ্শ্বকারীরা স্বর্গে গমন করেন এবং ‘আসব বা আশ্রব-রহিত ( অর্থাৎ বিষমবাসনাবিহীন) ব্যক্তিগণ নিৰ্ব্বাণ প্রাপ্ত হন।” এক কথায় বলিতে গেলে, পুদগল সৰ্ব্বদাই ‘কৰ্ম্মস্সকো অর্থাৎ কৰ্ম্ম-পরতন্ত্র। বৌদ্ধগণের নিত্য প্রত্যবেক্ষণের মধ্যে এই ভাবনাটিও নিয়ত ভাবিতে হুইবে বলিয়া উল্লিখিত আছে, যথা,— “যং কৰ্ম্মং করিস্সামি কল্যাণং বা পাপকং বা তন্ম দায়াদে ভবিস্সামি” “আমরা কল্যাণ কৰ্ম্ম বা পাপ কৰ্ম্ম যেটারই আচরণ কল্পিব, ভানুরূপ ফল-ভাগী বা "দায়াদ অর্থাৎ উত্তরাধিকারসূত্রে তৎফলভাগী হুইব ।” স্বতরাং তাঁহাদের মতে কৰ্ম্মই ( ফলরূপে) জীবের বা পুদুগলের অনুধাবন করিয়া নব-সৃষ্টির হেতু হইয়া দাড়ায় । পরমসৌগত মহারাজাধিরাজ অশোক ভীষ্ম অনুশাসনে পাপ পুণ্য কৰ্ম্ম সম্বন্ধে গ্রজাবর্গের ধর্শ্বোস্থতিকামনায় নিজ মত দ্বারা পরিপোষিত যে উপদেশবাণী প্রায় আড়াই হাজার বৎসর পূৰ্ব্বে প্রস্তরস্তম্ভলিপি রূপে উৎকীর্ণ করাইম রাখিয়াছেন তাহা হইতে কয়েকটি বাক্য এই প্রসঙ্গে উদ্ধৃত হইতে পারে। নীতিমূলক কৰ্ম্ম আচরণ করার উপদেশ যে বৌদ্ধধৰ্ম্মের একটি বিশেষত্ব, তদ্বিষয়ে মহারাজ অশোকের এই কথাগুলি জলস্ত নিদর্শনরূপে গৃহীত হওয়ার যোগ্য । ধৰ্ম্ম কি ? এই প্রশ্নের উত্তরে সম্রাট ( দ্বিতীয় স্তম্ভলিপিতে ) লিথাইতেছেন— “কিয়ং চু ধামে তি P অপাসিনথে বহুকয়াণে দয়া দানে সচে সোঁচয়ে Б o v ‘ধৰ্ম্ম কাহাকে বল যাম ? ( উত্তর ) অপাদানব (বা মতান্তরে অপাশ্রব ) অর্থাৎ দোষরাহিত্য, বহুকল্যাণ, দয়া দান সত্য ও শৌচ । তৎপরে সম্রাট ( তৃতীয় স্তম্ভলিপিতে ) আরও লিথাইয়াছেন যে, সৰ্ব্বসাধারণের পক্ষে পাপপুণ্যের প্রত্যবেক্ষণ নিত্যকরণীয় হইলেও, ইহা বড়ই কঠিন কাৰ্য্য। কোন কোন পাপ চিত্তবৃত্তি আদিনব-গামিনী বা দোষোৎপাদনকারিণী বা পরলোক-নাশ-বিধামিনী, প্রজাবৰ্গকে তদ্বিষয়ে সাবধান রাখিবার জন্য তিনি সেই সেই বুত্তিগুলির একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা লিপিবদ্ধ করাইয়াছেন । তিনি লিথাইতেছেন প্রত্যেক ব্যক্তিই— “কেবল স্বকৃত কল্যাণ বা পুণ্যকৰ্ম্মই দেখিয়া থাকে (এবং বলয় থাকে) ‘আমি এমন কল্যাণ কাৰ্য্য করিয়াছি । কিন্তু, সে কিছুতেই তাঁহার স্বকৃত পাপ কাৰ্য্য দেখিতে চায় মা ( এবং বলিয়া থাকে না ) আমি এমন পাপ কাৰ্য্য করিয়াছি এবং ইহা আমার পরিফ্লেশের বা ভবিষ্যৎ অনিষ্ট্রের কারণ হইয়া দাড়াইবে । বাস্তবিক এইরূপ অনুভূতি দুষ্প্রত্যবেক্ষ্য৷ অর্থাৎ পাপ-পুণ্যের এমন পরিমাপের প্রত্যবেক্ষণ কঠিন কাৰ্য্য। (অতএব ) সকলেরই এইটি লক্ষ্য করিয়া রাখা উচিত যে, চণ্ডত নিষ্ঠুরতা, ক্রোধ, মান, ঈৰ্ষা–এইরাপ মনোবৃত্তিগুলির আচরণ মানুষের পরিফ্লেশের কারণ হইয়া থাকে এবং সকলকেই সৰ্ব্বদা সাবধানে থাকিতে হইবে যেন, এই পাপবৃত্তিগুলি তাহাদিগকে পরিভ্রষ্ট মা করিয়া ফেলে। আরও লক্ষ্য রাখা উচিত—কোন কৰ্ম্মটি ঐহিক সুখদুঃখের ও কোনটি পারত্রিক স্বথদুঃখের নিদান ।” তবেই দেখা যাইতেছে যে, বৌদ্ধগণের মতেও তাহাই স্বকৰ্ম্ম, যাহা পারত্রিক মঙ্গলকর এবং যাহাদ্বারা সৰ্ব্বসত্বের প্রতি কল্যাণ আচরিত হইতে পারে। বৌদ্ধশাস্ত্রেও অভিহিত হইয়াছে যে স্বকৰ্ম্মকারী ব্যক্তিগণ জনাসক্ত হইয়া কৰ্ম্ম করিলে তাঁহার ফলে পুনর্জন্মরহিত হইয়া নির্বাণ বা বন্ধনমুক্তি লাভ করিতে সমর্থ হয়, অর্থাৎ কৰ্ম্মাচরণ দ্বারাই কৰ্ম্মজনিত বন্ধন ছিন্ন করিতে পারা যায়। মিলিদ-পঞ হো