পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

” আষাঢ় - লুই পাগুয়র ও র্তাহার গবেষণা se প্রবেশ করান সত্ত্বেও কিছুমাত্র কুফল হইল না, তখন তাহার • বিশ্বরে সীমা রহিল না। তীক্ষণুদ্ধি পাস্তম্বর বুঝিলেন যে, প্রথমে প্রাণীগুলির শরীরে মদীভূত জীবাণু (attenuated virus or vaccine ) or oth offo বলিস্থাই তাহারা পরে তীব্র জীবাণুর তেজু সহ করিতে সমর্থ হইল। পান্তর এই ব্যাপারের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলেন এই, যে, মীভূত জীবাণু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করাইবার ফলে ঐ সকল প্রাণীর শরীরে কত গুলি বিরুদ্ধশক্তিসম্পন্ন জীবাণুর স্বষ্টি হয়। শেষোক্ত জীবাণুগুলি ভবাতে ঐ রোগের কোনও তীব্র জীবাণু শরীরে প্রবেশ করিলে, তাহাদিগকে ধ্বংস করিম্বা শরীরকে নীরোগ রাধ। কিন্তু পুরাতন ইতিহাস আলোচনা করিলে আমরা দেখি-ত পাই যে, লুই পাস্তরের জন্মের বহু পূৰ্ব্ব হইতেই প্রায় সকল দেশেই বসন্ত রোগের হীত হইতে রক্ষা পাইবার জন্য টীকা গ্রহণ করার ব্যবস্থা ছিল । আমাদের দেশের প্রাচীন গ্রন্থে দেখিতে পাই, সহস্ৰাধিক বৎসর পূৰ্ব্বে ভারতবর্ষে বসন্তের বীজ নরদেহে প্রবেশ করাই কৃত্রিবভাবে বসন্ত রে গের স্বাক্ট করা হইড এবং এইভাবে তাহাকে আজীবন এই ধ্যাধি হইতে মুক্ত করা হইত। ভারত-গভর্ণমেণ্টের স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপদস্থ কৰ্ম্মচারী এস, পি, জেমু বসন্ত রোগ সম্বন্ধে বিস্তৃত অল্পসদ্ধান করিস্থা উক্ত রোগ ও তাহার প্রতীকার সম্বন্ধে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন । ভিনি *RIA Small-pox and Vaccination in British India গ্রন্থে দেখাইমাছেন যে, পুব্লীকান্স হইতে বাংলা দেশে বসন্ত রোগের প্রতীকাম্বেরূপ টীকা গ্রহ৭ করিবার প্রণালী প্রচলিত ছিল । অবহু কতকগুলি লোক ধৰ্ম্মসংস্কারের জন্তু টকা লুইত না, কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে তৎকালীন প্রথানুসারে টীকা লইবার পদ্ধতি খুবই প্রচলিত ছিল। উক্ত গ্রন্থকার লিথিয়াছেন, ধে ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে প্রত্যেক আটটি বা দশটি পরিবারের জন্য একটি করিয়া টীকাদার ছিল ; তাহারা তৎকালীন দেশীয় প্রথানুসারে লোকদিগের শরীরের মধ্যে বসস্তরোগের বীজ প্রবেশ করাইম টকা দিত। উক্ত বৎসরে কেবলমাত্র কলিকাতা শহরেই আটষটি জন টীকাদারের নাম ও ঠিকানা পাওয়া গিছে। হিসাব করিখ দেখা যায় যে ঐ সময়ে শতকরা একাণী জন লোক দেশীয় প্রথা অবলম্বন করিয়া বসস্তরোগের প্রতীকারস্বরূপ টীকা গ্রহণ করিত। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাংলা দেশে টকা লইবার যে পদ্ধতি . প্রচলিত ছিল তাহার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ এস্থলে চিত্তাকর্ষক হইবে। হলওয়েল (Holwell)এর ১৭৬৭ খৃষ্টাব্দে লিপিবদ্ধ প্রবন্ধ হইতে ইহা গৃহীত । তখনকার দিনে একদল ব্রাহ্মণ ছিল, যাহাঁদের ব্যবসামই ছিল লোকদিগকে টাকা দেওয়া। তাহারা তিন-চারি জন একত্র হইয়৷ এই উদ্দেশ্যে বাহির হইত এবং তাঁহাদের ভ্রমণের সময় ও স্থান এরূপভাবে নিৰ্ব্বাচন কল্পিত ঘাহাতে তাহার তাঁহাদের গন্তব্য স্থানগুলিতে বসম্বরোগের সংক্রমণ আরম্ভ হইবার কয়েক সপ্তাহ পূৰ্ব্বে পৌছাইতে পারে। বাংলা দেশে তাহারা সাধারণতঃ ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম ভাগ হইতেই টকা দেওয়া আরম্ভ করিত। বাংলা দেশের অধিবাসীরা বুঝিতে পারিত ধেকোন সময়ে এই সকল টকাদারের আবির্ভাব হইবে, এবং ওজন্য তাহারা এই সময়ের একমাস পূৰ্ব্ব হইতেই মৎস্য, ঘৃত ও দুগ্ধ প্রভৃতি জিনিষ আহার্যক্সপে গ্রন্থ৭ করিত না, কারণ এই সমস্ত নিয়ম পালন না করিলে তাহার টীকা লইতে পারিত না । বখন টীকাদার ব্রাশ্বশের ফল আসিন্ধা বাড়ি বাড়ি টকা দিতে আরম্ভ কল্পিত, তাহার কোনও লোককে টকা দিবার পূৰ্ব্বে সে ঐ নিয়মগুলি যথাবথরূপে পালন করিয়াছে - কিনা, তদ্বিষম্বে বিশেষ আহসন্ধান করিত। শিওদিগকে টাকা দিবার পূৰ্ব্বে কটি গুটি দ্বারা টীকা দিড়ে হইবে, সে সম্বন্ধে তাহদের পিতামাতার সন্মতি লওয়া হইত। যাহারা টকা লইবে তাহদের অভিপ্রান্থমত শরীরের যেকোনও স্থানে টকা দেওয়া হইত বটে, কিন্তু প্রায়ই টকাদারের অভিপ্রাক্ষ-অনুসারে -সাধারণতঃ পুরুষের কমই হইতে হাতের কন্দ্রীর মধ্যভাগে যে-কোন জায়গা এবং স্ত্রীলোকের ঘাড়ের উপরিভাগের ধেকোন জায়গা মনোনীত করা হইত। টাকার স্থান ক্ষত করিবার পূৰ্ব্বে টকাদার হাতে এক টুকরা পরিষ্কার শুষ্ক কাপড়, লইখা টীকা দিবার স্থান আট-দশ মিনিট ধরিয়া বেশ করিম ঘপিয়া দিত এবং তাহার পরে একটি ক্ষুদ্র যুদ্বারা একটি রৌপ্যমুদ্রার আকৃতি পরিমাণ স্থান ব্যাপিয়া অনেকবার খুব সামান্ত সামান্ত আঘাত করিয়া একবিন্দু রক্ত বাহির করিত। তখন