পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্টি-প্রদীপ শ্ৰীবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পূৰ্ব্বানুবৃত্তি : জিতু, নীতু ও সাঁতার পিতা চা বাগানে কাজ করতেন ও স্ত্র পুত্র কন্তু লইয়া বিদেশেই থাকতেন চিরকাল তিনি নাস্তিক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম মানিতেন না, পানদোষও ছিল । চা-বাগানে থাকিবার সময় মিশলর মেমের বাসায় আসিয়া ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেলাই শিখাইত। মদ খাইয়া কাজে অবহেলা করার ধরণ হঠাৎ তার চাকরি যায় এ অবস্থায় দাড়াইবার বা মাথা গুজিবার স্থান নাই, স্ত্র পুত্র কন্যা লইয়া কপর্দকশূন্থ অবস্থায় তিনি অত্যন্ত বিপদে পড়িয়া গেলেন। BBBBB BBBB BBBB BB BBB BB gKS KBB BBBS বাধা হন । ગ বাবা কলকাতা থেকে দুপুরে বাড়ি ফিরলেন । কাপড় জামা এত মমূল কখনও বাবার গায়ে দেখিান । আমায় কাছে ডেকে বললেন-শোন জিতু, এই পুটুলিটা তোর মাকে দিয়ে আয়, আমি একবার ও-পাড় থেকে আসি ৷ ভটচাঁধিদের নসিার কারখানায় একটা লোকের নামে চিঠি দিয়েচে- ওদের দিয়ে আসি । আমি বললাম—এখন যেও না বাবা । চিঠি আমি দিয়ে আসবো’খন, তুমি এসে স-টা খাও,-বাবা শুনলেন না, চলে গেলেন। বাবার মুখ শুক্নে, দেখে বুঝলাম যে-জন্তে গিয়েছিলেন তার কোনো জোগাড় হয়নি, অর্থাৎ চাকুরি । চাকরি না হলেণ্ড আর এদিকে চলে না। হাতের টাকা ক্রমশঃ ফুরিয়ে এসেচে। আমরা নীচের যে ঘরে থাকি, গরুবাছুরেরও সেখানে থাকতে কষ্ট হয়। আমরা এসেছি প্রায় মাস-চারেক হ’ল, এই চার মাসেই যা দেখেচি শুনেচি, তা বোধ করি সারা জীবনেও ভুলবো না । যাদের কাছে জেঠিম, কাকীমা দিদি বলে হাসিমুখে ছুটে যাই, তারা যে কেন আমাদের ওপর এমন বিরূপ, কেন তাদের ব্যবহার এত নিষ্ঠুর, ভেবেই পাই নে এর কোনো কারণ । আমরা তো আলাদা থাকি, আমাদের খরচে আমাদের রায় হয়, ওঁদের তো কোনষ্ট অসুবিধের মধ্যে আমরা ফেলিনি, তবু কেন বাড়িম্বন্ধু লোকের আমাদের ওপর এত রাগ ? আমার বাবার আপন ভাই নেই, ওঁরা হলেন খুড়তুভজাঠতুত ভাই। ব্যাঠামশায়ের অবস্থা খুবই ভাল-পাটের বড ব্যবস আছে, দুষ্ট ছেলে গদিতে কাজ দেখে, ছোট একটি ছেলে এখানকার স্কুলে পড়ে, আর একটি মেয়ে ছিল সে আমাদের আসবার আগে বসস্থ হয়ে মারা গিয়েচে । মেজকাকার তিন মেয়ে ছেলে হয়নি বড় মেয়ের বিয়ে হয়েচে আর দুষ্ট মেয়ে ছোট। ছোটকাকার বিয়ে হয়েছে বেশী দিন নয়-- বেী৪ এখানে নেই। চোটকাকা অত্যন্ত রাগী লোক, বাড়িতে সৰ্ব্বদা ঝগড়াঝাটি করেন, গানবাজনার ভক্ত, ওপরের ঘরে সকাল নেই সন্ধে নেই হারমোনিয়ম বাজাচ্ছেন । জ্যাঠাষ্টমার বয়স মায়ের চেয়ে বেশ কিন্তু বেশ সুন্দর-— একটু বেশী মোটাসোটা । গায়ে ভারী ভারী সোনার গহন । এর বিয়ের আগে নাকি জ্যাঠামশায়ের অধস্থা ছিল খারাপ - তারপর জাগতম এ বাড়িতে বধুরূপে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ংসারে উন্নতিরও স্বত্রপাত। প্রতিবেশীর খোসামোদ করে বলে--আমার সাম্নেই আমি কত বার শুনেচি–তোমার মত ভাগিামাণি ক'জন আছে বড়-বোঁ ? এদের কি-ই বা ছিল, তুমি এলে আর সংসার সব দিক থেকে উথলে উঠলে, কপাল বলে একেই বটে। .সাম্নে বলা নয়-এমন মন আজকাল ক’জনের বা আছে ? দেওয়ায়-থোওয়ায়, খাওয়ানোয়মাথানোয়--"আমার কাছে বাপু হক্‌ কথা। --মেজখুড়ীম ওর মধ্যে ভাল লোক । কিন্তু তিনি কারুর সপক্ষে কথা বলতে সাহস করেন না, তার ভাল করবার ক্ষমত। নেই, মন্দ করবারও না । মেজকাক তেমন কিছু রোজগার করেন না, কাজেই মেজখুড়ীমার কোনো কথা এ বাড়িতে থাটে না । বছরখানেক কেটে গেল। বাবা কোথাও চাকৃরি পেলেন না। কত জায়গায় হঁাটাইটি করলেন, শুকুনে মুখে কত বার বাড়ি ফিরলেন । হাতে যা পয়সা ছিল ক্রমে ক্রমে ফুরিয়ে এল।