পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| - - মরুপথে - v994 সোমেন্দ্ৰ হাসিয়া উঠিল, তাহার দুই চোখের দৃষ্টিতে একটু বেন ছেলেমান্বষী অহঙ্কার ফুটিয়া উঠিল। সে বলিল, "সত্যিই অদ্ভুত । কিন্তু আমি এতে অনেক হুবিধাও পেয়েছি। অনেক বন্ধু আমার জীবনে এই কারণে প্রবেশ করেছেন, আপনাকেও হয়ত আমি বন্ধুক্ষপে পাব।" শকুন্তলা তাহার দিকে একটি চকিত অর্থপূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া কহিল, "তা আপনি বহু দিন আগেই পেয়েছেন। অল্পবয়সে আপনি কি রকম গৰ্ব্বিত আর গম্ভীর ছিলেন আপনার তা মনে আছে ? লোকের দিকে কেমন একদৃষ্টি চেয়ে থাকতেন এবং তারা ফিরে তীকালে মুখটা আপনার লাল আর বিরক্ত হয়ে উঠত ? সেই ধে একদিন সন্ধ্যায় গানের রিহাসলের পর আমাকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন, আপনার মনে আছে ? আমার সঙ্গে সারাপথ একটা কথাও বলেন নি ।” “সে নীরবতার কারণটা ধে আমার মন্ত্রমুখভাব, তা হয়ত আপনি তখনই বুঝেছিলেন ?” শকুন্তলা বলিল, “আমার কিন্তু মনে হয়েছিল আপনি ঢং করছেন, তখনকায় ছেলেদের ঐ এক রোগ ছিল। কিন্তু আপনার ঐ রকম ব্যবহারে আমি একটু অবাকও হয়েছিলাম, কারণ নিঃসম্পৰ্কীয়া মেয়ে আপনি টেরই দেখে থাকবেন, আপনার দাদার গানের রিহাস লগুলিতে তাদের সঙ্গে আলাপও ছিল নিশ্চয়।" সোমেন্দ্র মাথা নাড়িয়া বলিল, “মোটেই না। আমি ওঁ্যদের চোখে দেখতাম মাত্র । যাদা মাঝে-মাঝে আমাকে ডেকে পাঠাতেন গানের সঙ্গে পিন্ধানো বাজাতে, অথবা রিহাসলে কারুর অনুপস্থিতির ফণক ভরাতে । গাড়ীটাড়িও মাঝে মাঝে ডেকে দিতাম, কিন্তু আমায় নিয়ে কেউ সময় নষ্ট করত না। দাদার সঙ্গে সাদৃশ্বের কথাটা কেউ কেউ বলত বটে।” শকুন্তলা বলিল, “আমিও সেট তখন লক্ষ্য করতাম, কিন্তু আপনার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদৃশ্বটাও বেড়েছে। এটা একটু আশ্চর্য না? আপনাদের দু-জনের জীবন একেবারে দুরকম। শুধু পারিবারিক সাদৃশু এটা নয়, সত্যিই ধেন র্তার ব্যক্তিত্ব এখন আপনার মুখের ভিতর দিয়ে উকি মারে । এটা বাস্তবিক একটু রহস্যময়।" জানলার লাল পর্দাগুলি হাওয়াস উড়িয়া উড়িয়া পড়িতেছিল, সোমেন্দ্র তাহার কাকে ফাকে বাহিরের রৌজদখ মন্ত্রগুপ্তের দিকে চাহিদা ছিল। কিছু পরে সে বলিল, . “ছোটবেলায় এই জিনিষটাতে আমার একটু গোপন লজ্জা ছিল। অবগু এটা ঘুচে যাক, তাও আমি চাইতাম না। আমার মায়ের সঙ্গে সম্পর্কেও এই সাদৃশ্বের ছায় গিয়ে পড়েছিল। দাদা খুব অল্প বয়সে একবার বিলাত চলে যায়, যা একেবারে তখন ভেঙে পড়েন। আমাদের প্রত্যেকের গম্বন্ধে কৈানো কৰ্ত্তব্যের ক্রটি তিনি করেন নি, কিন্তু সকলেই জানত যে বড়ছেলেটির জন্তে বাকি কটিকে তিনি বানের জলে ভাসিয়ে দিতে পারেন। সন্ধ্যার সময় মাঝে মাঝে তিনি আমাকে কাছে ডেকে আমার মূখখন তার বুকের উপর চেপে ধরতেন। তখনই বুঝতাম যে তিনি দাদার কথা ভাবছেন । শকুন্তল বলিল, “বেচার আপনি ! বাস্তবিক তেজেন্দ্র বাবু মামুযের ভালবাসা ষে-পরিমাণ পেয়েছেন, তা আর কেউ কখনও পায়নি বোধ হয়। র্তার খবর কি ? খবরের কাগজে ছাড়া আর ত তার কোনো খবরই আমি এখন পাই না। মাঝে তিনি আলজিয়াসে বেড়াতে গিয়েছিলেন, শুনেছিলাম। বাব, পৃথিবীর কোন দেশ আর বাকি রাখলেন না।" - সোমেন্দ্ৰ হাসিম্বা বলিল, “সত্যি, দাদার নিজের দেশে বাস আর হয়ে উঠে না । দরজী দিয়ে কাপড় করাতে, আর গোটকয়েক চেক কাটতে তাকে মধ্যে মধ্যে আসতে হয় বটে।* - শকুন্তলা বলিল, “তিনি ঐ-দ্বেশী স্বরে একটা নূতন গীতিনাট্য লিখছেন বলে শুনেছিলাম, এতদ্বিনে সেটা বেরিমে গেছে বোধ হয় । শেষ যখন আমাকে চিঠি লেখেন তখন আমার সহখের খুব বাড়াবাড়ি, সেটার উত্তর দিতে পারি নি। তারপর আর চিঠিপত্র পাই নি।" সৌমেন্দ্র পকেট হইতে একখানা চিঠি বাহির করিয়া বলিল, “এইটা মাসখানেক আগে লিখেছেন । সময়-মত পড়ে দেখবেন ।” - শকুন্তলা চিঠিখান হাতে করিয়া বলিল, "অনেক খঙ্কবা, এটা আমার কাছেই থাকু। এখন আমায় একটা কিছু বাজিয়ে শোনাবেন কি ? যা আপনার খুলী। যদি নূতন কিছু স্বর উঠে থাকে তাই শোনান।" সোমেন্দ্র গিয়া পিন্ধানোর সম্মুখে বসিল। শকুন্তলাও