পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুথিবীর বৃহত্তম জন্তু শ্ৰীঅশেষচন্দ্র বসু, বি-এ পৃথিবীর বৃহত্তম জীবের সম্বন্ধে প্রশ্ন করিলে অনেকেই হয়ত ঠঠীর বিযয় চিন্তা করিবেন, কিন্তু হস্তীর অন্ত্রপক্ষাও বৃহদাকার প্রাণী যে পৃথিবীতে বিদ্যমান আছে তাহ বোধ হয় অনেকেই প্রথম চিন্তীয় ধারণা করিতে পরিবেন না । এই বৃহত্তম জীবের পূৰ্ব্বপুরুষের স্থলচর হইলেও ইহবা এক্ষণে মহাসমুদে আশ্রয় লইয়া পৃথিবীর সপ্লবিধ জীবজন্তুর মধ্যে আকার-আয়তনে প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে। পৃথিবীর এই বৃহত্তম জীবের সাধারণ নাম তিমি এবং বৈজ্ঞানিক নাম সিটেসিয়া (Cetacea) । দেহের বিপুলতীয় স্থলচর জলচর সর্ববিধ প্রাণীকে অতিক্রম করিয়া ঠতার মহাজলধির কুক্ষিতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে । তিমি ও সীলকে সাধারণতঃ মৎস্ত বলিয়া উল্লেখ করা হয় । কিন্তু বাছড়কে পক্ষী বলিলে যেরূপ ভ্রম হয় তিমি ৪ সালকে মৎস্ত বলিলেও তদ্রপ ভ্ৰমে পড়িতে হয় । জলে অবস্থান করিলেও তিমির আদেী মৎস্ত-জাতীয় নহে। চতুপদ জীবের সহিত ইহাদের বাহ্যিক কোন সাদৃশু না থাকিলেও দেহের আভ্যপ্তরিক গঠনে অনেক বিষয়ে উহাদের সহিত তিমির মিল আছে । তিমির ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, প্লীহা, যকৃত, পাকস্থলী, অস্ত্র, মুত্রনালী এবং জননেন্দ্রিয় চতুষ্পদ প্রাণীদের অনুরূপ। চতুষ্পদ প্রাণীদিগর মত ইয়ূর ফুসফুসের দ্বার স্বাসপ্রশ্বাস কাৰ্য সম্পন্ন করে । চতুষ্পী জীবের মতই ইহাঙ্গের হৃৎপিণ্ড চারিটি কেনে বিভক্ত। এই হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়া ইহাদেৱ বিপুল কলম্বরে উষ্ণ শোণিত ধারা প্রবাহিত হয়। ইহাদের পাখন, পর, মস্তক প্রভৃতির অস্থির সহিত চতুষ্পদের কঙ্কালের সদৃশ আছে। ইহাদের দেহের দুই পার্গের পাখনার অস্থিগুলি লক্ষ্য করিলে বেশ বুঝিতে পারা যায় যে, উহা মৎস্তের সধারণ পাখনার মত নহে। এই পাখনার কঙ্কাল দেখিতে আমাদর হস্তের কঙ্কালেরই মত। ইহার মধ্যে স্কন্ধাস্থি, উৰ্দ্ধ ও নিম্ন বাহুর অস্থি, এবং পঞ্চাঙ্গুলির অস্থিসকল স্পষ্টই দেখিতে পাওয়া যায়। পাখন দুইটিকে ইহার হস্তের মতই ব্যবহার করে । স্তন্যপান করাইবার সময় স্ত্রী-তিমিরা শাবককে পাখনার দ্বারা টানিয়া লয় এবং ভীত বা তাড়িত হইলে ইহা দ্বারা শাবককে ধরিয়া পলায়ন করে । চতুপদদিগের মতই তিমির শাবক প্রসব করে এবং উহাকে এক বৎসরকাল স্তন্যপান করাইয়া থাকে। এই সকল কারণে মনে হয় তিমিদের পূৰ্ব্বপুরুষের স্থলচর জীব ছিল এবং সেকালের অতিকায় গোধা, অতিকায় সরীসৃপ এবং অতিকায় চতুপদদিগের মত পৃথিবীর শৈশবে মেদিনী বিকম্পিত করিয়া বিচরণ করিত । যে আদিম মানবের অত্যাচালে মামিথ বা অতিকায় হস্তী প্রভৃতি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে সেই অসভ্য মৃগয়াজীব আমমাংসভোজী মমৃয্যের তাড়নাতেই বোধ হয় সে-যুগের তিমিরা সাগরগর্ভে আশ্রয় লইতে ব:ধা হইয়াছিল। শেষে যুগযুগান্তরের ক্রম-বিবর্তনের ফলে তাহাদের পূৰ্ব্বাঙ্কতি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হইয়া জলে বাসোপৰোগী হইবার নিমিত্ত মৎস্যের মত হইয়া গিয়াছে এবং হস্ত দুইটি পাখনায় ও দেহের শেষাংশ মৎস্যপুচ্ছের মত রূপান্তরিত হইয়া পড়িয়াছে । জলে আসিয়া বাস করার নিমিত্ত তিমির দেহের আকারপরিবর্তনের সহিত উহাদের অস্থিসমূহের গঠনও বিভিন্নরূপ হইয়াছে। ৬০ ফুট দীর্ঘ তিমির ওজন প্রায় ১,৯০০ মণ বলিয়া অনুমান করা যায়। গ্রীনলাও-তিমিদের ওজন প্রায়ই এক শত টন বা প্রায় ২,৭৫০ মণ হইতে দেখা যায়। হস্তীর সহিত তুলনা করিলে এই প্রকার একটি তিমিকে প্রায় ৮৮টি হস্তী অথবা ৪৪০টি বৃহৎ ভল্লুকের সহিত ওজন সমান হইতে দেখা যায় । ইহাপেক্ষা বৃহৎ তিমির ওজন যে কিরূপ তাঁহা অনুমনসাপেক্ষ । এই প্রকার বিপুল দেহের অস্থিগুলি হস্তিকঙ্কালের মত নিরট হইল তিমিকে জলে অীর সন্তরণ দিত হইত না । এই বিশল দেহক সমুদ্রর জলের মধ্যে ভাসমল রাথিবীর