জ্যৈষ্ঠ দেশের অর্থ যায় কোথায় ? నిes টেলিগ্রাফ, রাস্তা, খাল সেতু ইত্যাদি কার্ধ্যে অর্থব্যয়ের জন্ত ক্রমশঃ ঋণ গ্রহণ করিতে লাগিলেন । ফলে যে ইংরেজকে পূর্বে এ-দেশের রাজা-রাজড়া অবধি অধিক স্বদ ও ছুটুবাদে টাকা ধরে দিয়া বিশ্বাস করিত না, সেই ইংরেজ ক্রমশঃ দেশের প্রজার নিকট হইতে ঋণস্বরূপ অর্থ গ্রহণ করিতে লাগিগ । সে-সময়ে দেশে বহু অর্থ জমিয়া থাকায় ঐ সকল অর্থ গবর্ণমেণ্টের ঋণ-ভাণ্ডারে যাইতে আরম্ভ করিল ; বাংলারই বহু টাকা গবর্ণমেণ্টের ঋণে প্রথম প্রথম ন্যস্ত হয় । ফলে বাঙালী ঘরের গচ্ছিত সম্পদ বাহির করিয়া দিয়া কাগজের মালিক হুইয়৷ এখন বসিয়া আছে । এ-দেশের ধনীর। এই ভাবে গবর্ণমেণ্টের ‘কেন গোলাম’ হইয় পড়ে । ইহার পর গবর্ণমেণ্ট যখন পোষ্টাপিসের মারফৎ নিভৃততম গ্রামসমূহে অবধি সেভিংস্ ব্যাঙ্কের কার্ধ্য আয়ম্ভ করিল, তখন গরিবের গচ্ছিত ও উদ্ধৃত্ত অর্থ ক্রমশঃ গবর্ণমেণ্টের ভাণ্ডারজাত হইল এবং নামমাত্র স্বদে তাহাদের ঐ টাকা খাটিতে লাগিল। এই টাকা পূৰ্ব্বে দেশীয় মহাজন ও ব্যবসাদারদের দোকানে রাখিয়া তাহার। যেখানে শতকরা মাসে আট আনা হইতে বার আনা স্থদ পাইত, পরে সেই স্থলে তাহারা মাত্র বাধিক তিন টাকা বার আন স্বদে টাকা রাখিয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়িয়া বাচিল । এই হারে স্বদ ১৮৯০-৯১ সাল অবধি প্রচলিত ছিল ; তাহার পর ১৮৯৪ সালে ১লা এপ্রেল হইতে ইহা হ্রাস করিয়া ৩ye করা হয় । এখন বাধিক শতকরা ৩ টাকা মাত্র স্বদ দেওয়া হয়। দেশের ছোটখাট ব্যবসাদারের অর্থাগমের পথ এইরূপে রুদ্ধ হওয়ায় ব্যবসা করিবার টাকা আসিবে কোথা হইতে ? সেভিংস্ ব্যাঙ্কের মারফৎ কত কোটী কোটী টাকা গবর্ণমেণ্ট, এবং তাহাদের মারফৎ বিদেশী ব্যাঙ্ক৪ গ্রহণ করিতেছে! এই সব উপায়ে বিদেশী সওদাগরগণ যে কি অজস্র টাকার লেন-দেন করিতে সমর্থ হইয়াছে তাহা এক বিরাট আধুনিক অর্থনৈতিক ইতিহাসের কথা ! সেভিংস ব্যান্ধের সমস্ত টাকাটাই গরিব লোকের উদ্বৃত্ত অর্থ সেই অর্থ অধিকাংশ স্থলেই স্থানীয় কারবারিগণের হাতে থাকিত এবং তাহারই সাহায্যে তাহাদের ব্যবসা বিস্তৃতির স্বষোগ হইত। এই-সব কারবারিগণ খুৰ বিশ্বাসী ছিল এবং সেজন্ত তাহাদের হিসাবপত্র রাখা, রসিদাদি দেওয়া লওয়ার এত ব্যয়বহুল ‘হাঞ্জামা' ছিল না ; কাজেই তাহদের কার্য্যপ্রণালী অতি সরল ও ব্যয়হীন ছিল । এ-রকম ব্যাঙ্কের কাজের জন্ত তাহাদের মোটা মোট মাহিনী দিয়া হিসাব-পরীক্ষকাদি রাখিতে হইত না এবং চেকবহি, পাসবহি ছাপিয়া মুদ্রাকরের উদর পূরণ করিতে হইত না । বিশ্বাস, ধৰ্ম্মবিশ্বাসই তাহাদের ব্যসুস্বল্পতার কারণ ছিল। প্রকৃতপক্ষে এ-দেশে সেভিংস ব্যাঙ্ক স্বষ্টি ও তাহার কাযjবিস্তুতি হওয়ায় দেশের ছোট ছোট ব্যবসায়িগণ মারা পড়িয়াছে। এই সেভিংস ব্যাঙ্কে কত টাকা থাটে এবং কত টাকা সুদ গবর্ণমেণ্টকে দিতে হয় তাহার হিসাব-আলোচনা করিলেই বুঝা বাইবে যে যদি এই টাকা দেশের কারবারিগণের নিকট পূর্বের ন্যায় জমা থাকিত তাহ হইলে দেশের বাণিজ্যের কত শ্ৰীবৃদ্ধি হইত। কিন্তু সে কথা বুঝিবে কে ? আর কি সে ধৰ্ম্মবিশ্বাস, আত্মবিশ্বাস, প্রতিবাসীর প্রতি বিশ্বাস আছে ? সে বিশ্বাস নষ্ট হইল কেন ? কে সেই বিশ্বাস নষ্ট করিল, সে-কথা কি কেহ একবার ভাবিয়া দেখিবেন ? যে-দেশে চন্দ্র স্থধ্যকে সাক্ষী রাখিয়া লোকে লেন-দেন করিত, ঘে-দেশে লোকে দেবতা প্রতিষ্ঠা করিয়া ধৰ্ম্মগোলায় এবং পর্বতগহবরে ধান্তাধি ফসল গচ্ছিত রাখিত এবং দেবতা সাক্ষী করিয়! আবস্তক-মৃত সেই শস্তাদি লেন-দেন করিত, আজ সেই দেশের লোক খং, তমস্থক, বন্ধুকী জিনিবও জমি না রাখিয়া ত’ টাকা পায়ই না এযং তাহা দিয়াও অনেক সময় লোকে টাকা ধার পায় না ! এ অবস্থা হইল কেন ? ইহা করিল কে এবং কি প্রকারে, তাহা কি ভাবিবার সময় এখনও আসে নাই ? দেশের অর্থ কোথায় এবং কেন এ-দেশে ব্যবসায়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করা দুরূহ হইয়াছে তাহা কি ভাবিবার বিষয় নহে ? সেজন্ত একবার সেভিংস ব্যাঙ্কের হিসাব আলোচনা করিয়া দেথা যাক । ১৯৩১ সনের মার্চ মাসে সমগ্র ভারতে ২৪,৭৭,৬১৩ জন লোকের টাকা সেভিংস্ ব্যাঙ্কে জমা ছিল এবং ঐ টাকার পরিমাণ ছিল ৩৭,১২,৬৬,••• টাকার কিছু উপর এবং মাথাপিছু প্রত্যেকের গড়পড়তা
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৯
অবয়ব