পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

West, ১৫ প্রবাসী eৈ ఏO8O চেয়ে রয়েচে । তখনই ধড়মড়িয়ে উঠে বসল, তার পর নীচে সে রাত্রে ঘরের বাহিরের সকল দরজায় খিল আঁটিয়৷ নেমে ধাড়াল। i #. : 蠶 s i যোগেশের মা মৃদুস্বরে ননদকে বলিলেন, তাকুরঝি, বউ-মা মূৰ্চ্ছা যায় নি ত? কথাটা উমেশের কানে গেল। তিন বিরক্ত ভাবে কহিলেন,—কবিরাজ নাড়ী দেখে বললে মরে গিয়েচে, সে কি মুখ ধু না কি ? মরে গেলে পর ছোট বউমাকে দানোয় পেহ্মেচে । এ রকম আগে কত হ’ত, আমরা কত শুনেচি, সেকালে দানোম পেলে তাকে বাঁশের খোচা দিয়ে চিলুতে ফেলে পুড়িয়ে দিত, এখন ত তা হবার জো নেই, চৌকিদার শাসালে আমাদের ধরে থানায় নিয়ে যাবে। এখন সে দানোয় পেয়ে ঘুরে বেড়াবে, কবে কার ঘাড় মটকাবে। আমাদের পিছনে পিছনে আসছিল, আমি চেচিয়ে উঠলাম তখন দাড়িয়ে রইল। আজ রাত্রে কেউ আর বাড়ির দরজা খুলবে না। উমেশ কথা কহিতেছেন এমন সময় জন-কয়েক যুবকের সঙ্গে একজন রোজা আসিয়া উপস্থিত। উমেশ বাহিরে আসিলে রোজা বলিল,—দানোম পেলে কি তাকে ছেড়ে দিতে আছে, তা হলে গ্রামের লোকের বিপদ হবে। আমি বাড়ান করলে দানে ছেড়ে যাবে, তার পর সহজ মরা মানুষের মতন সংকার করলেই হবে। আমি শুনেই তাড়াতাড়ি এসেচি । উমেশ বলিলেন,-সে যে মশানে আছে, সেখানে রাত্রে কে যাবে ? রোজ দম্ভ করিয়া বলিল—তাতে আর কি হয়েচে ? আমি একাই যেতে পারি, কিন্তু চিনিয়ে দেবার জন্য ত কাউকে চাই । যুবকের বলিল,—বেশ ত, আমরা তোমার সঙ্গে যাচ্চি। কয়েকটা মশাল জোগাড় করিয়া তাহার। মশানে গেল, চারিদিকে খুঁজিয়া কোথাও কাহাকে দেখিতে পাইল না। সরোজিনীকে বামার সহিত তাহার বাড়িতে যাইতে কেহ দেখে নাই। রোজা আর যুবকের ফিরিয়া আসিলে উমেশ বলিলেন,— আমি যা ভেবেছিলাম তাই হয়েচে । দানোয় পেলে কোথায় চলে স্বাম, কোথায় মিলিয়ে যায়, কে জানে। এখন আমাদের আর কারুর কোন বিপদ না হলে বাচি । উমেশ শয়ন করিলেন। পর দিবস প্রভাত হইলে পর উমেশের মনে নানারূপ দুর্ভাবনা উপস্থিত হইল। যোগেশকে কি সংবাদ দিবেন, সরোজিনীর পিত্রালয়ে কি.লিখিবেন ? তাহার মৃত্যু হইয়াছে লিখিলেই কি চলিবে ? উমেশের মনে দারুণ সংশয় উপস্থিত হইল। যদি সরোজিনী না মরিয়া থাকে, যদি সে কোথাও চলিয়া গিয়া থাকে ? সে লেখাপড়া জানে, যদি সে যোগেশকে কিংবা তাহার পিতামাতাকে পত্র লেখে তাহা হইলে ত তাহার মৃত্যুসংবাদ মিথ্যা প্রমাণিত হইবে। উমেশ বিষম ভাবনায় পড়িলেন। কিছু একটা উপায় স্থির করিবার জন্ত তিনি কবিরাজের বাড়ি গমন করিলেন। কবিরাজ মহাশয় একটা খলের সম্মুখে বসিম বড়ি প্রস্তুত করিতেছিলেন। উমেশ বলিলেন,—ব্যাপার শুনেচেন ত ? কবিরাজ বড়ি পাকান স্থগিত করিয়া বলিলেন,–এ ত স্পষ্ট ভৌতিক ব্যাপার। মরা মানুষ কি চিলুর উপর উঠে বসে, না তার পর হেঁটে বেড়ায় ? আমি দেখলুম নাড়ী নেই, নিঃশ্বাস বইচে না, মানুষ আর কি রকম করে মরে ? দানোম পাওয়া ভৌতিক ব্যাপার নম্ন ত কি ? —শুধু তাই নয়, তার পর যখন রোজাকে সঙ্গে করে তাকে মশানে খুঁজতে গেল, তখন তাকে আর দেখতে পেলে त्रं । ---তা হলেই হ'ল, মরে ভূত হয়েচে। ভূতপেত্নী কি আর সব সময় দেখা যায় ? উমেশের সন্দেহ ঘুচিল না। বলিলেন,--তার দেহ কি হ’ল ? তাকে ত আর দাহ করা হয় নি। দানোয় পেয়েচে বলে তাকে ধরে পোড়াতে যাচ্ছিল, কিন্তু চৌকিদার যখন ভয় দেখালে যে সবাইকে থানায় নিয়ে যাবে তখন আর কেউ এগুলো না । কবিরাজ এ কথার কোন উত্তর করিতে পারিলেন না, তিনি ইংরেজের আইনের নিন্দ করিতে লাগিলেন। বলিলেন,— দানোয় পেলে মনে হয় বেঁচে আছে কিন্তু সত্যি ত আর বঁাচে না । দানোয় পেলেও পোড়াতে দেবে না । উমেশ মাখা চুলকাইয়া বলিলেন, আমি ত বিষম সমস্তায় পড়েচি ।