পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ SS)8O জোর করিয়া তর্ক চলে না। হরেনকে বাধ্য হইয়া উঠিয়া আসিতে হইল । 尊 বাড়ি আসিয়া হরেন ভাবিতে লাগিল, প্রমথ কি তবে ত্রয়োদশীতে লেখা পাঠায় বলিয়াই তাহার লেখা ফেরৎ আসে না ? তবে কি সত্যই এ তিথির কোন গুণ আছে ? সেও কি তবে দেখিবে একবার ত্রয়োদশীতে তাহার লেখা পাঠাইয়া ? কিন্তু পরক্ষণেই সে আপন মনে বলিয়া উঠিল, তা হতে পারে না, এ-সব কুসংস্কার কুসংস্কার । কয়েক দিন ধরিয়া এই দুইটি বিরুদ্ধভাব তাহার মনের মধ্যে দোল খাইতে লাগিল । কিন্তু মাসিকে গল্প ছাপাইবার নেশ। তাহকে পাইয়া বসিয়াছিল। সে নিজের মনকে বুঝাইল, সে তো আর সত্য সত্যই তিথিনক্ষত্র মানিতে যাইতেছে না। শুধু একবার পরীক্ষা করিয়া দেখিবে বই তো নয় । ইহাতে আর দোষ কি ? তাই শেষ পর্যন্ত সৰ্ব্বসিদ্ধি ত্রয়োদশীরই জয় হইল । জ্ঞানত এই সে প্রথম পাঞ্জি দেখিয়া তিথি মানিয়া এক আনার ডাকটিকিট সহ রেজেক্টারী ডাকে খ্যাতনামা এক মাসিকের সম্পাদকের কাছে তাহার নূতন ধরণে লেখা গল্পটি পাঠাইয় क्षेिल । গল্প ফেরৎ আসিবার সম্ভাবিত সময় উত্তীর্ণ হইয়া যাওয়া সত্ত্বেও গল্প ফেরৎ না আসাতে হয়েনের মনে আশার সঞ্চার হইল। বুঝি বা তাহার গল্প এবারে মনোনীত হইয়াছে। বুঝি বা ত্রয়োদশীর সত্যসত্যই সিদ্ধিদানের ক্ষমতা আছে। কিন্তু মনোনয়ন সংবাদ না-আসা পৰ্য্যন্ত একেবারে নিশ্চিন্ত হইতে পারিল না। প্রত্যঙ্গ সে ডাকপিয়নের আশায় বসিয়া থাকিত। এমনি করিয়া প্রায় দুই মাস কাটিল । এবারে সে সম্পাদককে তাগিদ দিবে ভাবিতেছিল। কিন্তু আর এক দিন অপেক্ষা করিয়া দেখি’ ভাবিতে ভাবিতে অারও সাত দিন কাটিল। এমন সময়ে হঠাৎ একদিন এক পুলিস কৰ্ম্মচারী আসিয়া ওয়ারেন্ট দেখাইয়া তাহাকে থানায় ধরিয়া লইয়া গেল এবং সেখান হইতে সদরে চালান করিল। সদরে গিয়া হরেন শুনিল একজন যুবক কিছুদিন পূর্বে আত্মহত্যা করিয়াছিল । এ-সম্বন্ধে তদন্ত করিতে গিয়া যুবকটির বাড়িতে এ সম্পর্কে হরেনের লেখা চিঠি পাওয়া গিয়াছে। হুরেনের মুখ দিয়া অতর্কিতে বাহির হইল, এ যে রীতিমত ডিটেকটিভ উপন্যাস । নিদিষ্ট তাটি খে বিচার আরম্ভ হইলে হরেনকে কোটে লইয়া গিয়া কাঠগড়ায় দাড় করান হইল এবং প্রথামত শপথ করান হইল। তারপর হাকিম র্তাহার পরিচয়াদি লইবার পর জিজ্ঞাসা করিল-আপনি মণিময় স্থায় ব’লে কোন যুবককে জানতেন ? হরেন বলিল-আজ্ঞে না । হাকিম । সেই যে পলাশপুরে যে যুবক আত্মহত্যা করেছিল । তাকে আপনি জানতেন না ? হরেন । আজ্ঞে না । হাকিম তখন একখানি চিঠি দেখাইয়া হরেনকে জিজ্ঞাসা করিল—দেখুন তো এ হাতের লেখা আপনার ব’লে মনে হয় কি ? - হরেন চিঠি দেখিয় স্তম্ভিত হইয়া গেল। শেষ যে গল্পটি পাঠাইয়া নিদিষ্ট সময়ে ফেরৎ না পাওয়াতে সে আশা করিয়াছিল এবারে পত্রিকা-সম্পাদক তাহার গল্প মনোনীত করিয়াছে, এ যে সেই গল্পেরই এক পৃষ্ঠা । তাহার এক জায়গায় লেখা ছিল— ভাই মণিময়, তোমার মনের এ অবস্থায় তোমার কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে আমার মতামত চাহিয়াছ । তোমার গভীর দুঃখে সত্যই আমি দুঃখিত। কিন্তু তোমায় কোন পরামর্শ আমি দিতে পারিলাম না। তোমার মনই তোমায় পথ দেখাইবে ।-- 舉 豪 豪 舉 তোমার ধৈর্ধ্য অসীম যন্ধু। তোমার মত অবস্থায় পড়িলে আমার কিন্তু আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকিত না। হরেন হাকিমকে বলিল - অামি একজন লেখক । চিঠির উত্তর-প্রত্যুত্তরে একটি গল্প লিখে এক মাসিকের সম্পাদকের নামে পাঠিয়েছিলাম। এ তারই এক অংশ। হাকিম। আর সে সম্পাদকের সঙ্কে আপনার শক্রতা ছিল। তাই আপনাকে ৰিপদে ফেলবার জন্ত এই চিঠিখানি তিনি পুলিসের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই তো আপনি বলতে চান ?