পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ ভক্তের ভগবান 8Գo জড়াইয়া ধরিয়া পরম কাতরতার সহিত গোলদার কহিল, “যা বলচু, দেখবেন একবার চেষ্টা করে ?” তীব্রভৃষ্টিতে নিশীথ লোকটার মুখের দিকে নিম্যেমাত্র চাহিয়া দেখিল, তাঙ্গর পর কি ভাবিয়া পকেট হইতে একথান দশ টাকার নোট বাহির করিয়া বঁ-হাঁতে সেখান মাটিতে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল, সঙ্গে সঙ্গে ডান হাতে বিরাশী শিকা ওজনের এক থাপ্পড় কসাইল লোকটার গালে ! গালে হাত বুলাইতে বুলাইতে গোলদার নোটখানা কুড়াইয়া লইল, রাগ করিল না একটুও, বরং প্রসন্ন হাস্তে কৃতজ্ঞতার ভঙ্গীতে নিশীথের দিকে চাহিয়া বলিল, “আপনার মহাশয় বেক্তি, আপনাদের দয়াতেই ত বেঁচে আছি--নইলে ম্যাদিনে কোতায় যে যেভুন – শ্মশানঘাটের ঠিকেদারের নাম মৃত্যুঞ্জয় । মৃত্যুঞ্জয়ের “যালানি কাষ্ঠের” গোলাতে সে নিজে ছাড়া আরও দু-জন কৰ্ম্মচারী থাকে। পালা করিয়া কাঠ খি কলসী গামছ পাটকাঠি ইত্যাদি বিক্রয় করাই তাছাদের কাজ । সেদিন সন্ধাবেল মৃত্যুঞ্জয় তাড়াতাড়ি করিয়া বাড়ি ফিরিল, দোকানে রহিল বনমালী। মৃত্যুঞ্জয়ের ছোট ছেলেটার বয়স পাচ বৎসর । সে আজ সাত আট দিন যাবৎ গগু-দেড়েক ফোড়াতে কষ্ট পাইতেছে---- মৃত্যুঞ্জয়ের আর দুশ্চিন্তার অবধি নাই ! বহু আয়াসেও ফোড়াগুলা কিছুতেই ফাটে না । মৃত্যুঞ্জয় চারবার হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ডাকিয়াছে, য়্যালোপাথকে দেখাইয়াছে দুইবার, কবিরাজকে একবার দর্শনী দিয়াছে, কিন্তু স্ফোটকগোষ্ঠ বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় নাই । গোল হইতে বাহির হইয়া “হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারখানা” হইতে মৃত্যুঞ্জয় একখান ‘সরল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎস।” কিনিল, পরে সেখান হইতে প্রস্থান করিয়া এক স্ববৃহৎ পুস্তকালয়ে প্রবেশ করিয়া বলিল, “আমায় একখানা য়্যালোপাতি চিকিচ্ছের সোজা বই দিতে পারেন, ইংরিজীতে নয়, বাংলায়,— এই সোজা সোজা কয়েকটা অমুখের নাম থাকে তাহলেই হয়, ধরুন যেমন ফোড়ী-টোড়া—” বলিয়া সে নিৰ্ব্বোধের ন্যায় খানিকটা হাসিল । - “পারিবারিক চিকিৎসা” এবং একখানা “গাছ-গাছড়ার গুণ” কিনিয়া লইয়া মৃত্যুঞ্জয় সে দোকান হইতে বাহির হইল। রাত্রি আটটার সময় সে যখন বাড়ি ফিরিল তপন দেখা গেল হাটুর উপর কাপড় গুটাইম লইম সে মালকোচ মারিয়াছে--কাপড়টা যেমন অপরিচ্ছন্ন তেমনই তাহার দুর্গন্ধ ! গায়ের ছেড়া ময়লা জামা ঘামে ভিজিয়া পচা ডোবায়ু চুবানো কম্বল হইয়া উঠিয়াছে ! কাধের উপরে এক প্রকাও গটরি, তিনখান বই, নানাপ্রকার ফল, কতকগুলা ওষুধ এবং তুল৷ ইত্যাদিতে সেট। তখন গন্ধমাদনের রূপ ধারণ করিয়াছে ! পা টিপিয়া টিপিয়া অতিশয় সস্তপণে মৃত্যুঞ্জয় গৃহপ্রবেশ করিল। বারাণায় গার্টার মামাইয়া রাপিয়া ফিসফিস্ করিয়া স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিল, “হাবল কেমন আছে ?” “ভালোই---” বিনোদিনীকে সাবধান করিয়া দিয়া মৃত্যুঞ্জয় কহিল, “আস্তে কথা কও, কতবার তোমাদের বারণ করতে হবে ?” গল| নামাইয়া অভ্যস্ত মৃত্যুম্বরে বলিল, - “ফোড়াগুলো ফেটেছে ?” "|- " মৃত্যুঞ্জয় আবার ধমক দিমু| উঠিল, “আস্তে কথা কও ন ছাই !--আজকে রাত্তিরে ফার্টুবে কি ? তোমার কি রকম মনে হচ্ছে ?” বিনোদিনী উত্তর দিল, “ঠিক বুঝতে পারছিনে।" একটু চুপ করিয়া থাকিয় মৃত্যুঞ্জয় পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, “হাবল আমার জন্তে খুব কেঁদেছিল না ?” “कड़े न ख्--” নিমেষে মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ গাঢ় বেদনায় কালে হইয়া গেল-- ইতস্তত: করিম সে কহিল, “মন পোড়ে বইকি,—ছেলেমানুষ তাই চুপ করে থাকে, নইলে দিনরাত মন পোড়ে বট কি ?” একটু থামিয়া বলিল, “হেরিকেনটায় একটু বেশী করে তেল ভরে দিও, বই-টইগুলো রাত্তিরে পড়ে দেখব । ও শালার ডাক্তারদের বিশ্বেস নেই, নিজে হাতেই করব এবার সব " বলিয়৷ গায়ের জাম ছাড়িয় বারান্দার দড়িতে ঝুলাইম্ব রাখিল, গামছাট লইয়া কলতলায় চলিয়া যাইতে যাইতে ফিরিয়া আসিয়া কহিল, “শোন—” বিনোদিনী রায়ারের দিকে যাইতেছিল, পড়িয়া কহিল, “কি ?” tांप्लाझेब्र