পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষ্ট্ৰীপ্রভাতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল আমি বাসিয়াছি এষ্ট বস্থধারে ; রাত্রি দিবসের পাত্রে আলোকে আঁধারে অবিরাম পান করি এর স্তন্যস্থধা অrজও তৃষ্ণ মিটে নাই ; আজও স্নেহস্কুধা বক্ষে মোর জেগে আছে । যত দেখি চেয়ে নিত্য মা’র মুখপানে, চিত্তে উঠে ছেয়ে আরতির ধুপগন্ধ ; ভাষাহীন স্তবে কণ্ঠ মৌন হয়ে রয়। কে আমারে কবে – কারো যা পড়ে না চোথে মোর চোখে কেন তারা পড়ি প্রতিপদে—স্বপ্ন রচে হেন ? গ্রামান্তে প্রান্তর মাঝে কেন দ্বিপ্রহরে শুচিস্মিত মাতৃমূৰ্ত্তি মোর চোখে পড়ে হেমস্তের শস্তক্ষেত্রে P প্রদোষ বেলায় স্বনিবিড় মহারণ্যে বিটপিমেলায় তপস্বিনী জননীরে প্রশান্ত নয়নে চাহিয়া থাকিতে দেখি কেন অন্যমনে ? কেন মহাম্বুধি-বক্ষে চলোৰ্ম্মিনিকরে লক্ষ কোটি তরঙ্গের শিখরে শিখরে ভৈরবী মায়েরে দেখি ? মাতা বন্ধমতী বারে বারে লভিয়াছে আমার প্রণতি নিত্য নবরূপে তা’র ; পুষ্পে পর্ণে তৃণে নিত্য নুব উপহারে নিত্য নব ঋণে বাধিছে নিবিড় ক’রে মোরে প্রতিদিন । আমি তার মুগ্ধ ভক্ত চির স্নেহাধীন। পুত্রের আসনখানি দাবি করিবারে স্থাবর জঙ্গম জড় মা’র পরিবারে আমি করিয়াছি পণ যেই দিন হতে, সেই দিন অকস্মাং দুনিবার স্রোতে বাধ মোর ভেঙে গেছে আচারে বিচারে,— সমাজে সংসারে ঘরে । মাতা বলি ষারে আনন্দে নিয়েছি ভাগ, তার বেদনার বিষপাত্ৰ হ’তে যদি একটি কণার ভাগ লয়ে যেতে পারি, ধন্য হ’ব তলে— নীলকণ্ঠ দেবতার পূজা পুণ হবে । আজি মোর চক্ষে পড়ে বিপুল বিশালা ধরিত্রীর বক্ষ-জুড়ি কোটি বন্দীশাল কতরূপে কত দিকে তুলিয়াছে মাথ৷ লোভ দিয়া হিংস দিয়া দন্ত দিয়া গাথা কত না ভেদের গওঁী ! কুৎসিত কামনা কি সৌম্য সুন্দর বেশে কহিছে, “থামো না। আর আগে যেতে নাই ।” কেন এই ভেদ ? সে-কথা জানিতে মানা, ভাবিতে নিযেধ ! ভাষা দিয়া শাস্ত্ৰ দিয়া রুচি দিয়া গড়া অর্থহীন নিযেধের উদ্যত প্রহর চারিদিকে জেগে আছে ; দুৰ্ব্বলের পরে সবলের অত্যাচার দৃপ্ত দম্ভভরে আপনার দ্যাঘ্য স্বত্ব করিছে প্রমাণ পশুবলে নখদন্তে । পশুর সমান মাতুষে অবজ্ঞা করি রাথি দুর্দশায় মাহুষ সভ্যতা গড়ে, নগর বসায় ; অমানুষ ভোগপুরী রচি তুলে নিতি আত্মীয়ের তপ্তরক্তে ভিজাইয়া ক্ষিতি ; আমি ধরিত্রীর পুত্র, এরে বিধাতার বিধি বলে নতশিরে করিতে স্বীকার লজ পাই ; অবিচারে পারিনে মানিতে. আপনার প্রাপ্য বলি ; ধিক্কারে গ্লানিতে চিত্ত মোর ভরি উঠে অপমানে যবে লাতি ভুলিতে চায় বিলাসে উৎসবে ।