পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ । জালিয়াe 636. হাসিয়া কথা কয়।...আর একটু দূরে লতা-জড়ান পুরাণ আমগাছের দু-পাশ দিয়া রাস্তাটা ফিরিয়া দু-দিক দিয়া বাহির হইয়া গিয়াছে...আমগাছের শিকড়ের কাছে ইট, চুড়ি, খোলাস্কুচি, রাংচিত্রের পাতার ছড়াছড়ি, তাহার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট পায়ের মেলা দাগ .. মনটি এইখানে আটকাইয়। যায় - যেন নিজেকেই দেখা যায়-গাছের তলায় লুব্ধদৃষ্টিতে চাহিয়া আছে। অন্যমনস্কতা থেকে হঠাৎ সজাগ হইয়া বধূ হাসিয়া বলে, * তা বলে আপনি যেন ভাববেন না বাবা যে আমি সেখানে কচি মেয়েদের মত পাড়ায় পাড়ায় খেলাঘর রচে কাটাব । সে ভয় আপনার একটুও নেই বলে দিচ্চি। কিন্তু দেরি করলে হবে না, হঁ্য ।” মন ভুলাইবার দিকে স্বামীর চেষ্টারও ক্রটি নাই । ছোট বোন ক্ষাস্তমণির ওপর হঠাৎ অত্যধিক স্নেহপ্রবণ হইয়। পড়িয়াছে। বলে “ক্ষেষ্ঠী চিড়িয়াখানায় একটা নতুন জন্তু এসেচে, যাবি না কি দেখতে ?” ক্ষান্তমণি উৎসাহের সহিত বলে - “হঁ্য যাব।” তাহার পর হঠাৎ একটু সঙ্কুচিত হইয়। মিনতি করে – “একটি কথা রাখবে দাদা ?” কি কথ! আবার " “বোঁদিকেও...” আর শেষ করিতে সাহস করে ন! । “হঁ্যাঃ, অত লোকের ঝক্কি বওয়া, সে আমার কুষ্ঠাতে লেথেনি ।” এই করিয়া চিড়িয়াখানা, মিউজিয়াম, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হইয়া গিয়াছে। রাত্রে স্বামী উৎসাহভরে বলে -- “এইবার কি দেখবে বল,— ডালহৌসী স্কোয়ার, হাওড়া ষ্টেশন...” বধু নাসিক কুঞ্চিত করিয়া বলে—“কিছু না।”- বলিয়৷ ফিরিয়া শোয়। অনেক সাধাসাধি চলে। “কলকাতায় এত দেখবার জিনিষ রয়েচে, দেশবিদেশ থেকে লোক আসচে দেখতেগড়ের মাঠ, গঙ্গার জাহাজ, কত বড় বড় বাড়ি-ওপরে চাইতে গেলে ঘাড় উলটে পড়ে...” “পড়ুক গিয়ে ঘাড় উলটে যার সাধ আছে, আমার কলকাতার কিছু ভাল লাগে না ; আমায় বাড়ি দিয়ে এসে ” “কলকাতার কিছুই ভাল লাগে না ?—আমরাও তে৷ কলকাতার-- আমিও তো...” ঝাঝিয়া উত্তর হয়--"তোমাদের কাউকেও ভাল লাগে ন। ; ধার। কলকাতা ভালবাসে তাদের দু-চক্ষে দেখতে পারি না।” দারুণ নিরাশার কথ। । পরের দিন ভগ্নীস্নেহুে আবার জোয়ার আসে। প্রশ্ন হয় “কই রে ক্ষেষ্ঠী, শিবপুরে রামরাজাতলার মেলা ফুরিয়ে এল, একদিনও তো গেলিনি ? দিবি পাড়াগেয়ে পাড়াগেয়ে জায়গাটি-- আমার তো বডড ভাল লাগে।” আজ তিন বৎসর দাদার পোসামোদ করিয়া ফল হয় মাষ্ট ; বলিলেই--"অঙ্গ পাড়াগ, এদো ডোব।” -বলিয়৷ নাক সি টকাষ্টয়াছে। আজ বিধি এত অন্তকূল ! ক্ষাস্তমণি হাতের কাজ ফেলিয় ছুটিয়া হাজির হয়। “হ্যা দাদা, যাব। ..আর একটি কথা দাদা শুনবে ?--বৌদিদিকেও নিয়ে চল দাদা, আমার দিব্যি। আহ, বেচারী গো পাড়াগায়ের কথা বলতে বলতে আত্তোহার হয়ে ওঠে...” দাদ রাগিয় বলে--"ওঃ-ই, আপনি পায় ন! আবার শঙ্করাকে ডাকে...ওষ্ট জন্তে কোথাও তোকে নিয়ে যেতে ইচ্ছে হয় না।” 3. রামরাজা কি বাতাইচণ্ডী তল হইতে ফিরিয়া ফল হয় উন্ট। পিজরার পার্থী একবার ছাড়া পাষ্টয়া আবার পি জরায় বদ্ধ হইলে যেমন অতিষ্ঠ হষ্টয় ওঠে, মেয়েটির অবস্থা হয় সেই রকম। প্রাণটা আইটাই করে। প্রতি মুহূৰ্ত্তে বেলপুকুরের কোন-না-কোন একটা ছিন্ন দৃপ্ত চোখের সামনে ভাসিয় ওঠে ; কথায় কথায় ভুল হয় ঝিকে ডাকিতে বাপের বাড়ির দাসী “পদীপিসীর” নাম মুখে আসিম্বা পড়ে, ননদকে ডাকিতে বাহির হইয় পড়ে-“সই !” ননদ দু-একবার ভুলটা ভুলের হিসাবেই ধরে, শেষে-- “এই যে আসি সই”-বলিয়া হাসিতে হাসিতে সামনে আসিয়৷ দাড়ায়। বলে-“মরণ !—বলি, তোমার হয়েচে কি আজ ? দাদা এলেই বলব-তোমার বুনে হরিণকে বনে ছেড়ে দিয়ে сфоїl (" - -