পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“সত্যমৃ শিবম্ সুন্দরমূ” “নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ” २०* डॉथ ॥ ২য় খণ্ড অগ্রহায়ণ, ১৩৩০ l ২য় সংখ্যা সমস্যা যে ছাত্রেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা-পরীক্ষায় বসে, তাদের সংখ্য দশ বিশ হাজার হয়ে থাকে, কিন্তু তাদের সকলেরই পক্ষে একই প্রশ্ন, এক কণলীতে একই অক্ষরে ছাপানো। সেই একই প্রশ্নের একই সত্য উত্তর দিতে পারলে তবে ছাত্রের। বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পদবী পায়। এইজন্যে পার্শ্ববৰ্ত্তী পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে উত্তর চুরি করেও কাজ চলে। কিন্তু বিধাতার পরীক্ষার নিয়ম এত সহজ নয়। এক এক জাতির কাছে তিনি এক-একটি স্বতন্ত্র সমস্যা পাঠিয়েছেন। সেই সমস্যার সত্য মীমাংসা তারা নিজে উদ্ভাবন করলে তবেই তারা তার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাবে ও মান পাবে। ভারতকেও তিনি একটি বিশেষ সমস্যা দিয়েচেন, যতদিন না তার সত্য মীমাংসা হবে ততদিন ভারতের দুঃখ কিছুতেই শান্ত হবে না। আমরা চাতুরী খাটিয়ে যুরোপের পরীক্ষাপত্র থেকে উত্তর চুরি করুচি। একদিন বোকার মত করছিলুম মাছি-মারা নকল, আজকে বুদ্ধিমানের মত করূচি ভাষার কিছু বদল ঘটিয়ে। পরীক্ষক বারে বারে তার পাশে নীল পেন্সিল দিয়ে যে গোল গোল চিহ্ন কাটুচেন তার সবকটাকেও একত্র যোগ করতে গেলে বিয়োগান্ত হয়ে ওঠে। বায়ুমণ্ডলে ঝড় জিনিষটাকে আমরা দুর্য্যোগ বলেই জানি । সে যেন রাগী আকাশটার কিল চড়- লাথি ঘুষোর আকারে আসতে থাকে । এই প্রহারটা ত হ’ল একুটা লক্ষণ । কিসের লক্ষণ ? আসল কথা, যে-বায়ুস্তরগুলো পাশাপাশি আছে, যে প্রতিবেশীদের মধ্যে মিল থাকা উচিত ছিল, তাদের মধ্যে ভেদ ঘটেচে । এক ংশের বড় বেশি গৌরব, আর-এক অংশের বড় বেশি লাঘব হয়েচে । এ ত সহ হয় না, তাই ইন্দ্রদেবের বজ গড়গড় করে ওঠে, পবনদেবের ভেপু হু হু করে হুঙ্কার দিতে থাকে। যতক্ষণ প্রতিবেশীদের মধ্যে সাম্যসাধন না হয়, হাওয়ায় হাওয়ায় পংক্তি-ভেদ ঘুচে না যায়, ততক্ষণ শান্তি হয় না, ততক্ষণ দেবতার রাগ মেটে না । যাদের মধ্যে পরস্পর মিলে চলবার সম্বন্ধ, তাদের মধ্যে ভেদ ঘটুলেই তুমুলকাও বেধে যায়। তখন ঐ যে অরণ্যটার গাষ্ঠীৰ্য্য নষ্ট হয়ে যায়, ঐ যে সমুদ্রট পাগলামি করতে থাকে, তাদের দোষ দিয়ে বা তাদের কাছে শান্তিশতক আউড়িয়ে কোনো ফল নেই । কান পেতে শুনে নাও, স্বর্গে মৰ্ত্ত্যে এই রব উঠল, “ভেদ ঘটেচে, ভেদ ঘটেচে ।” এই হাওয়ার মধ্যে যে কথা, মাহুষের মধ্যেও তাই ।