পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇSఆ প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৯ [ २०* छां★, २झ थe রথযাত্রা আমার স্নেহাস্পদ ছাত্র শ্ৰীমান প্রমথনাথ বিশির কোনও রচনা হইতে এই নাট্যদৃশ্বের ভাবটি আমার মনে আসিয়াছিল । ঐ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১ নাগরিক মহাকালের রথযাত্রায় এবার যে রথ অচল হয়ে রইল । কিছুতেই নড়লেন না। কা’র দোষে হ’ল তা জানি, গণৎকার গুণে বলে দিয়েচেন । ২ নাগরিক হয়ত কারো দোষ নেই, হয়ত মহাকাল ক্লান্ত, আর চলতে রাজি নন। ১ নাগরিক আরে বল কি ? চলতে রাজি না হলে আমাদের চলবে কি করে ? ঐ দেখন, রথের দড়িটা পড়ে আছে, কত যুগের দড়ি—কত মামুষের হাত পড়েচে ঐ দড়িতে, এমন করে ত কোনোদিন ধুলোয় পড়ে থাকেনি । ৩ নাগরিক রথ যদি না চলে, আর ঐ দড়ি যদি পড়ে থাকে তাহলে ও যে সমস্ত রাজ্যের গলায় দড়ি হবে । ৪ নাগরিক বাবা রে, ঐ দড়িটা দেখে ভয় লাগচে, মনে হচ্চে ও যেন ক্রমে ক্রমে সাপ হয়ে ফণী ধরে উঠবে । ৩ নাগরিক দেখ না ভাই, একটু একটু যেন নড় চে মনে হচ্চে । ১ নাগরিক আমরা যদি না নড়াতে পারি, ও যদি আপনি নড়ে’ ওঠে, তাহলে যে সৰ্ব্বনাশ হবে। ৩ নাগরিক তাহলে জগতের সব জোড়গুলো বিজোড় হয়ে উঠবে রে । তাহলে রথটা চলবে আমাদের বুকের পাজরের উশ্বর দিয়ে। আমরা ওকে নিজে চালাই বলে’ই ত ওর চাকার তলায় পড়িনে। এখন উপায় ? ১ নাগরিক ঐ দেখনা, পুরুতঠাকুর বসে মন্ত্র পড়চে । ২ নাগরিক রথযাত্রায় সব আগেই ঐ পুরুতঠাকুরের দলরাই ত দড়ি ধরে প্রথম টানটা দিয়ে থাকেন। এবার কি শুধু মন্ত্র পড়ে’ই কাজ সারবেন নাকি ? ৪ নাগরিক চেষ্টার ক্রটি হয়নি। ভোরের বেলা সেই অন্ধকার থাকৃতে সবার আগে ওঁরাই ত একচেটি টানাটানি করে’ নিয়েচেন । কলিযুগে ওঁদের কি আর তেজ আছে রে ? ৩ নাগরিক ঐ দেখ, আমার কেমন মনে হচ্চে ঐ রশিট যেন যুগ-যুগান্তরের নাড়ীর মত দব দব করচে। ১ নাগরিক আমার মনে হচ্চে ঐ রথ চলবে কোনো এক পুণ্যাত্মা মহাপুরুষের স্পর্শ পেলে । ২ নাগরিক আরে, রথ চালাতে পুণ্যাত্মা মহাপুরুষের জন্যে বসে থাকলে শুভলগ্নও ত বসে’ থাকবে না । ততক্ষণ আমাদের মত পাপাত্মাদের দশা হবে কি ? ১ নাগরিক পাপাত্মাদের দশ৷ কি হবে সেজন্যে ভগবানের মাথাব্যথা নেই। ২ নাগরিক বলিস কি রে! পুণাত্মার জন্যে এ জগৎ তৈরি হয়নি। তা হলে যে আমরা অতিষ্ঠ হতুম। স্বাক্টটা আমাদেরই জন্যে। দৈবাং দুটো একটা পুণাত্মা দেখা দেয় ; বেশিক্ষণ টিকতে পারে না—আমাদের ঠেলা খেয়ে বনে জঙ্গলে গুহায় তাদের আশ্রয় নিতে হয়। ১ নাগরিক তাহলে তুমিই দড়াটা ধরে টান দাও না, দাদা, দেখা যাক রথ এগোয়, না দড়াটা ছেড়ে, না তুমিই পড় মুখ খুব ড়ে।