পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৪ প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩e• [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড বাকুড়া সারস্বত সমাজের উদবোধন-পত্র ও সপ্তসিন্ধু প্রদেশে সরস্বতীব যে স্তুতি একদা উদৗরিত হইয়াছিল, সেই স্তুতি আমাদের সারস্বত সমাজকে পালন করুন। যিনি স্মৃতি-জ্ঞান-বুদ্ধি-শক্তিস্বরূপিণী যিনি সর্ববিদ্যাধিদেবী, জ্ঞানাধিদেবী, বাগধিষ্ঠাতৃদেবী ; যিনি ংখ্যা-ব্যাথ্যা-ভ্রম-সিদ্ধান্তর পা ; তিনি বরদা হউন ॥ জ্ঞান অনস্ত, বিদ্যা অসংখ্য, বাকু অগণ্য । অতএব সরস্বতীর পূজা একার সাধ্য নয়, বহু গোষ্ঠী সমাজের প্রয়োজন | কেহ পুজার উপচার ও মৃতির উপাদান সংগ্ৰহ করেন, কেহ বিধিপূর্বক সরস্বতীর স্বরপ ধ্যান করেন। ইহারা সরস্বতীকে ব্রহ্মার পত্নীর পে পূজা করেন। কেহ নরনারী, জাতিধম নিবিশেষে মন্ত্রেচারণপূর্বক মাঙ্গল্য বিলাইতে থাকেন। ইহঁর সরস্বতীকে বৈষ্ণবীশক্তিরূপে পূজা করেন. কেহ দুঃখ ও দুর্গতি, শোক ও ভয় হইতে মুক্ত হইবার এ tং মুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করিবার কামনায় সরস্বতী নামে দুর্গাদেবীর পূজা করেন। মহারাষ্ট্র-দেশসম্বলিত দক্ষিণাপথে বঙ্গের দুর্গাপুজা নাই, শারদীয়া সরস্বতী-পূজা আছে । তিনি ধ্যানময়ী হইয়। জ্ঞান, সম্যক বাঙ্ময়ী হইয়া বিদ্যা, কলনাময়ী হইয়া কলা। অতএব সরস্বতীর মন্দিরে প্রবেশ-অধিকার সকলেরই আছে, কেবল উপচার-পরিভ্রষ্টের নাই । সাবস্বত সমাজের অভিধেয় ও প্রয়োজন বল হইল। বঁকুড়ায় বিনিয়োগ সম্বন্ধে সংক্ষেপে দুই এক কথা বলিতেছি । இ আমি বঙ্গের বাহিরে বহুকাল কাটাইয়। তিনবৎসর হইল বাঁকুড়ায় আসিয়াছি। আমার জন্মস্থান বাকুড়াজেলার নিকটে হইলেও ঐখানে এত বিষয় নূতন .দেখিতেছি যে সেসবের বৃত্তাস্ত জানিতে স্বভাবতঃ কৌতুহল জন্মিয় থাকে । আপনাদের নিকট সেসব পুরাতন, এবং পুরাতন বলিয়। হয়ত আপনাদের জিজ্ঞাসার উদয় হয় ন| - . { তথাপি পুরাতন যত অজ্ঞাত, নূতন তত নয়। কারণ পুরাতন অতীতে, নূতন বতর্মানে ; পুরাতন পশ্চাতে, নূতন সম্মুখে। কিন্তু, পুরাতনকে আশ্রয় করিয়া বতর্মানের স্থিতি। অতএব পুরাতনকে ন জানিলে নূতন জানিতে পারা যায় না। এই হেতু পুরাবৃত্ত ও ইতিহাস চর্চার প্রয়োজন । কে চর্চা করিবে ? - সম্প্রতি বাঁকুড়াজেলার বতর্মান সীমা ভুলিয়া যান। ইহা প্রাকৃতিক নয়, পুর তন বিভাগও নয়। উত্তর সীমায়ু দামোদর নদ কতকটা প্রাকৃতিক বিভাগ করিয়াছে। কিন্তু, পশ্চিমে মানভূমি দক্ষিণে মেদিনীপুর, এবং পূর্বে হুগলী “জেলা অল্লে-অল্পে বাঁকুড়ায় বিলীন হইয়াছে। মধ্যভারতের মালভূমির পূর্বপ্রান্তে মানভূমি, এবং মানভূমির পূর্বে বাঁকুড়া ; কিন্তু কোথায় মানভূমির শেষ এবং বাকুড়ার আরম্ভ, তাহ ভূমি দেখিয় বলিতে পারা যায় না । এইরপ দক্ষিণে, বিশেষতঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে মেদিনীপুর ও উৎকলে বাঁকুড়া অদৃশ্ব হইয়াছে। অতএব দক্ষিণে ও পশ্চিমে বাকুড়ার সীমাপরিবতনের হুযোগ ছিল। এখানকার পাথর্য, কাকর্য, লালমাট্য, উচুনীচু ভূমি বহুকালবধি বনভূমি ছিল, এবং পূর্বকালের ঝাড়খণ্ডের পূর্বভাগ হইয়াছিল। ‘ঝাড়খণ্ড’ শব্দের অর্থ বনভূমি। জাঙ্গলদেশবাসী স্বভাবতঃ দারণ হইয়া থাকে। অমুর্বর নীরসা ভূমি, হিংস্র পশ, এবং ততোধিক হিংস্র দস্থ্যর বিচরণভূমি হইয়াছিল। দেশের কিয়দংশের নাম ছিল, মল্লভূমি। কতকাল পরে, কে জানে ; বনবিষ্ণুপুরের মল্লরাজগণ দস্থ্যর আক্রমণ নিবারণ অভিপ্রায়ে ঘটুপাল বা ঘাটোয়াল নিযুক্ত করিয়াছিলেন। .মল্লভূমির মল্পজাতি বহুকাল হইতে প্রসিদ্ধ। এক প্রাচীন মল্লাধিপ কুর ক্ষেত্র-যুদ্ধে যোগ দিয়াছিলেন।

  • সমাজের আরম্ভ-সমাগমে পঠিত। স্থানে স্থানে সাহিত্যপরিষদ, বিদ্যোৎসাহিনী সভা, হিতকরী সমিতি, প্রভূতি নামে সারস্বত সমাজ আছে । এই-সব সমাজের কার্য্যক্ষেত্ৰ কত বিস্তীর্ণ তাহ। এই উজবোধনপত্র হইতে উপলব্ধ হুইবে ।—প্রঃ সঃ।