পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্য } مینامه তিন বৎসর হইল সে স্বপ্নের অবসান হইয়াছে। এই তিন বৎসর একটি দিনের জন্যও কলিকাতা যাই নাই। গিরিডিতে কতবার আপনারা সকলে একত্র হইয়াছেন শুনিয়াছি, তাও কখুন যাই নাই। সমস্ত অস্তরের সহিত ভাবিয়াছি শৈলজা পূৰ্ব্বকথা ভুলিয়া স্বর্থী হোক। নহিলে আমার কি যাইতে ইচ্ছা হইত না, না, ইচ্ছা করিলে আমি যাইতে পারিতাম না ? অনেক রাত্রি হইয়াছে। বাহিরের হাওয়া এখন ঠাণ্ডা—বুরফের মত। দিন রাত্রি জরভোগ করার জন্য এ-বাতাস বড় মধুব লাগিতেছে! এ জীবনের পর মরণও যেন এমনই মৃন্দর লাগে । যাহা আমি শুনিয়াছি আপনাকে বলিলাম। যদি কোন উপায় থাকে করিবেন। আমবদা’কে সব কথা বলিবেন । সেই স্নেহময় বিশাল বলিষ্ঠ হৃদয় ও উদ্ভাবনশীল মস্তিষ্কে হয়ত কোন বুদ্ধি যোগাইবে । আপনাদের প্রণাম কবিতেছি। আশীৰ্ব্বাদ করিবেন, আমার আত্মা সেন শীঘ্র শান্তি পায় । স্নেহাশ্রিত কিরণ। কাজ মিটাইয়। বিরজা যখন ফিরিল শৈলজা তখন মাটিতে লুটাইয়া ফুলিয়া ফুলিয়া কঁদিতেছে। ভূমিকম্পের বেগের মত প্রচণ্ড দুঃখ তাহার সমস্ত শরীরকে যেন কঁপাইয়া কঁপাইয়া তুলিতেছিল। মাথার কাছে কিরণের হাতের লেপ চিঠিখানি খোলা পড়িয় রহিয়াছে—যেন মাথার মণির অধিকার হারাইয়া শৈলজার দেহ-ভুজঙ্গ মৰ্ম্মস্থদ দুঃখে আছাড়ি বিছাড়ি করিতেছিল । ( & ) শৈলজা সকালের ট্রেনে চলিয়া গিয়াছে। ষ্টেশনে তাহীদের তুলিয়া দিয়া আসিয়া অবধি বিরজ মনমরা হইয়া আছে । “কেনই বা এরকম আসা। এতে মন আরও ছাই হ’য়ে যায়।”--বলিয়া বিরজা স্বামীর পানে চাহিল। অমরনাথ বলিলেন—“তবু তো দেখাটা হ’ল।” বিরজ হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিল--"র্হ্যাগ, তোমার কি ভোরের বাতাস ৩২৭ মনে হয় শৈলর শ্বশুরবাড়ীর ওরা জানতে পারবে যে শৈল গিরিডি এসেছিল ?” অমরনাথের বিশ্বাস যে জানিতে পারিবে । কিন্তু সম্পূর্ণ সত্যটুকু না কহিয়া অমরনাথ বলিলেন—“তা ঠিক বলা যায় না। তবে জানতে পারলেই বা ক্ষতি কি ? আমরা এখানে রয়েছি ; একদিন দেরি করে" না হয় আমাদের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছে । তাতে আর কি দোষ হয়েছে ?” “হঁ্য, তারা তোমার মত কিনা তাই কথাটা এত সহজ করে' ভেবে নেবে খন।" বলিয়া বিরজ বিমৰ্ষভাবে বাহিরের দিকে চাহিল। একটু পরেই বিরজা আবার জিজ্ঞাসা করিল—“শৈল এবার যেন আরও রোগা হ’য়ে গিয়েছে। নয় ?" অমরনাথ ঘাড় নাড়িয়া স্বীকার করিলেন-ই হইয়াছে । “শৈল বোধ হয় আর বেশী দিন বাঁচবে না। কেন যে বাবা শেষটা এমন জিদ ধরে' বসলেন তাই ভাবি ”— বিরজা কঁদ-র্কাদ হইয়া কহিল । অমরনাথ কহিলেন—“কিরণের মায়ের দুর্ণাম সম্বন্ধে একখানা বেনামী চিঠি আসতেই তিনি কিরণকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন–কিরণ, এ সত্যি ! কিরণ সব স্বীকার করলে । তার পর থেকে ওর মনটা এমন হ’য়ে গেল যে ওদের দুজনের কথা একসঙ্গে তুলতে কেউ সাহসই কবুলে না । তিনি যে আভিজাত্যের বড় পক্ষপাতী আর কিরণের মায়ের দুর্ণামের কথাটা যে হালিসহরে সবাই জানত!” “বাবা এত উদার, কিন্তু এ বিষয়ে কেন যে এমন করলেন ! আহা, এদের দুজনের মিলন হ’লে কি সুন্দরই হ’ত। আর এখন এদের কথা মনে করলেই চোখে জল আসে।” বিরজার চক্ষু জলে ভরিয়া আসিয়াছিল। অমরনাথ বলিলেন—“র্তারও খুব দোষ নেই । তিনিও এতটা জানতেন না। এরা দুজনে আবার বডড চাপা ছিল ; শ্বশুর-মহাশয়ের মনে আর একটা খটকা লেগেছিল । তার বিশ্বাস হয়েছিল, কিরণ এ খবরট ইচ্ছে করে গোপন রেখেছিল। কিন্তু কিরণ حیی