পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ6 թ {} যদি টাকার মূল্য একটাকায় ১৪ পেনি হারে বাধিয়া দেন, আর টাকায় যতটা রূপ আছে তাহার দর চড়িয়া যদি ১৫ পেনি হয়, তাহ হইলে সকলেরই টাক গলাইয়। রূপ। হিসাবে বিক্রয় করিবার লোভ হইবে ; কারণ তাহাতে টাকা প্রতি ১ পেনি করিয়া লাভ থাকিবে । যখনকার কথা বলিতেছি তখন একটাকায় যতট রূপা থাকিত তাহার মূল্য ছিল ১২ পেনি। গভর্ণমেণ্ট মনে করিলেন, রূপার দাম যতই বৃদ্ধি হউক না কেন অতটা রূপার দর ১৬ পেনির বেশী কখনও হইবে না। সেই বিশ্বাসে গভর্ণমেণ্ট, একটাকায় ১৬ পেনি এই বিনিময়-হার বাধিয়া দিলেন । কি করিয়া তাহ হইল বলিতেছি। তখন বিলাতী সওদাগরদিগের টাকার টান যতট ছিল গভর্ণমেণ্ট টাকার যোগান তাহার চেয়ে কমাইয় দিলেন। স্বতরাং টাকার মূল্য বাড়িতে লাগিল। বাড়িতে বাড়িতে যখন ১৬ পেনিতে উঠিল, তখন গভর্ণমেণ্ট, রূপা কিনিয়া নুতন টাকা তৈয়ার করিয়া টাকার যোগান বাড়াইলেন । বিলাতে ভারতসচিব যথেষ্ট কাউন্সিল বিল বিক্ৰী করাতে তথায় সকল সওদাগরই ভারতীয় মহাজনের ঋণ পরিশোধ করিবার সুযোগ পাইল। টাকা কিনিবার জন্য বিলাতী সওদাগরদিগের মধ্যে প্রতিযোগিতা হ্রাস হওয়াতে টাকার মূল্য আর না বাড়িয় ১৬ পেনিতে ঠিক রহিয়া গেল। . আমাদের দেশে একটা কথা আছে ‘খোদার মীর ঠেকায় কার সাধ্য !" এই ব্যাপারেও তাহাই ঘটিল । গভর্ণমেণ্ট তে টাকার মূল্য বাধিয়া দিয়া ইপি ছাড়িয়। বাচিলেন ; কিন্তু কিছুদিন যাইতে না যাইতেই একবার এই দেশে মন্ত্রম ভাল না হওয়ায় তুলা ও গম ভাল রকম ফলিল না । সুতরাং ভারতের রপ্তানি অনেক কমিয়া গেল। কাজেই বিলাতের আমদানীকারীদিগের টাকার চাহিদা যখন কমিয়া গেল, তখন গভর্ণমেণ্টের ভয় হইল, টাকার মূল্য আবার বুঝি টাকায় ১৬ পেনি হারের চেয়েও दभिघ्र! शांभ्रं । কিন্তু এক উপায়ে গভর্ণমেণ্ট, তাহ থামাইলেন। গভর্ণমেণ্ট যে রূপা কিনিয়া টাকা তৈয়ার করেন তাহাতে কিছু লাভ হয়। এই লাভের টাকাটা দিয়া গভর্ণমেণ্ট, পাউণ্ড, কিনিয়া লগুনে তাহা মজুত রাখেন। টাকার প্রবাসী-আশ্বিন, YOOe লেনাদেনার হিসাব করিয়৷ [ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড মূল্য কমিবার সম্ভাবনা যখন দেখা গেল তখন গভর্ণমেণ্ট, এই মজুত পাউণ্ড, ব্যয় করিয়া ভারতের বণিকুদিগের ও ব্যাঙ্ক গুলির নিকট যত টাকা ছিল তাহা কিনিয়া সরকারী ট্রেজারীতে বন্ধ করিয়া রাখিলেন। গভর্ণমেণ্ট এই দেশে টাকার বিনিময়ে “বিল বিক্রয় করিতে লাগিলেন। ইহাকে রিভস্ কাউন্সিল,বিল বলে। এই-সব বিলের খরিদ্ধার বিলাতে মহাজনের দেনা শোধ করিবার জন্ত, অথবা তথায় ব্যাঙ্কে টাকা জমা রাখিবার জন্য এদেশে টাকা দিয়া এইসব বিল কিনিয়া বিলাতে স্ব স্ব মহাজন অথবা ব্যাঙ্কের নিকট উহ! পাঠাইয়া দিল । তাহারা তথায় এই-সব বিল ভাঙাইয়া পাউণ্ড, সংগ্ৰহ করিল। এই যে ভারতে টাকার বিনিময়ে বিলাতে পাউণ্ড, বিক্ৰী হইতে লাগিল ইহাতে আমাদের দেশে চলতি টাকার ( money in circulation) পরিমাণ কমিয়া গেল, অর্থাৎ বাজারে টাকার পরিমাণ কমিয় যাওয়ায় টাকার বদলে "জিনিষ’ অপেক্ষাকৃত বেণী পাওয়া যাইতে লাগিল । তাহার মানে জিনিষের দাম কমিয়া গেল। কাজেই অন্য দেশের লোক এদেশে বেশী করিয়া জিনিষ কিনিতে স্বরু করিল। রপ্তানি বাড়িতে লাগিল কাজেই অন্ত দেশে টাকার চাহিদা বাড়িতেই তাহার মূল্য বাড়িতে লাগিল । পূর্বেই বলিয়াছি সকল জিনিষেরই টানের চেয়ে যোগান কমিয়া গেলে দর বাড়ে । বাজারে টাকার পরিমাণ কমিয়া যাওয়াতে উহার মূল্য ধীরে ধীরে বাড়িতে লাগিল। এই উপায়ে যুদ্ধের আগে টাকার মূল্য ১৫ টাকায় ১ পাউণ্ড, হারে একরকম চলিয়। আসিয়াছিল । কিন্তু যুদ্ধ যেই আরম্ভ হইল, অমনি টাকার বাজারে ওলটপালট উপস্থিত হইল। যুদ্ধের আগে, আমাদের দেণ হইতে তুলা পাট গম ইত্যাদি বহু জিনিষ বিলাতে রপ্তানি হইত। আবার বিলাত হইতে রেলের গাড়ী লোহার জিনিষ কাপড় ইত্যাদি বহু জিনিষ আমাদের দেশে আমদানি হইভ । ভারত ও বিলাতের আমদানি রপ্তানি অর্থাৎ দেখা যাইত যে শেষে বিলাতের বণিকৃদিগকে ভারতে কিছু টাকা পাঠাইতে হইত। কিন্তু যুদ্ধের সময়ে বিলতের লোক আমাদের দেশ হইতে বেশী দর দিয়া অধিক পরিমাণে জিনিষ কিনিয়া