পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] হ’ল মাত্র চিনেছেন, কিন্তু আমার এই কথাট। আপনি { করে বিশ্বাস করবেন যে, আপনাকে বাজে কথা আমি বলি না । ভদ্রতার খাতিরে ও কিছু বলি না । আপনাকে আমি আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু মনে করি । আপনার কাছ থেকেও সেটা দাবি করতে পারি কি ন৷ z.jনি না ।” মায়া কম্পিতকণ্ঠে বলিল, “ত পারেন।” দেবকুমার aকটু ইতস্তত করিয়া বলিল, “তাহলে, অতু গ্ৰহ ক’রে আমার একটা কথার উত্তর দেবেন ?” মায় বলিল, “কি কথা বলুন ।” তাহদের গাড়ী নখন জনহীন পথে দ্রুতবেগে চলিয়াছে । হাওয়ার ঝাপটায় মায়ার শরীর শীতল হইয়া আসিতেছিল, কিন্তু তাহার মাথার ভিতর যেন আ গুন ধরিয়া গিয়াছে । দেবকুমার বলিল, “কেন আপনার মন এত খারাপ যে আছে ? আমি কি কিছু করতে পারি ?” মায়ার হাত পা ঠকঠক করিয়া কঁাপিতে লাগিল । কম্পিত হাত হইতে রুমালটা নীচে পড়িয়া গেল। দেবকুমার নীচ হইয় সেটা কুড়াইয়া মায়াকে দিতে গিয়া, তাহার মূপের ভাব দেখিয়া অবাক হইয়া গেল । এ যে প্রায় মচ্ছিত হইয়া পড়িবার উপক্রম করিতেছে। ভয়ে তাহার ভদ্রতা-বোধটাও বোধ হয় চলিয়। গেল, ব্যস্তভাবে জিজ্ঞাসা করিল, “মায় কি হয়েছে আমায় বল। বিশ্বাস কর, তোমার জন্যে মানুষের সাধ্য কোনো কাজ করতে আমি ক্রটি করুব না।” মায়ার চোখ বহিয়া ঝরঝর করিয়া জল পড়িতে আরম্ভ করিল । দেবকুমার বুঝিল । তাহার কাছে সরিয়া আসিয়া পিঠের উপর হাত রাখিয়া বলিল, “তুমি আজ আমায় যা দিলে, তা আমার জন্মজন্মাস্তরের সব চেয়ে বড় ঐশ্বৰ্য্য । কিন্তু তোমার বাবার অল্পমতি না আমি আর কিছু বলব না। তুমি যদি বলত, সকালেই তার কাছে যেতে পারি ” মায় **পূর্ণ চোখে তাহার দিকে চাহিয়া বলিল, “যাবেন ।” দেবকুমার আস্তে আস্তে মায়ার একখানা হাত নিজের ঠঠ হাতের মধ্যে টানিয়া মাইল । বলিল, “একেবারে বঁফের মত ঠাণ্ডা হয়ে গেছে । মায়, আমার মত নয়ে মহামায়া S එ ඵ් হতভাগাকে ভালবেসে হয়ত তুমি ঠক্‌লেই। তবু এই সময়ট চোখের জল ফেলে না । তোমার মুখে হাসি দেখলে তবু আমার প্রাণে একটু ভরসা আসে । তোমাৰ বাবার কাছে যেতে আমার খুবই মুস্কিল বাধ বে। আমার এমন কিছু নেই যার জন্তে তিনি খুশি হয়ে তোমাকে আমার হাতে দিতে পারেন । তবু কেন জানি না, আমার আশারও অন্ত নেই । তোমায় প্রথম যেদিন দেখি, তখন থেকে কে যেন আমার বুকের মধ্যে বলে দিয়েছিল তুমি আমারই হবে।” মায়া কথা বলিল না । দেবকুমার তাহার হাতের উপব হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিল, “দেখ, আজ নাচটাচ আমিও কিছু দেখিনি । সারাক্ষণ খালি তোমাকে দেখেছি । ভাল পোরট্রেট পেণ্টার যদি কেউ থাকৃত, তাহ’লে এই পোবাক আর এই গহন পরিরে তোমার একট। ছবি তাকে দিয়ে আকিয়ে নিতাম । তুমি সব সময়েই সুন্দর, কিন্তু আজকের মত সুন্দর তোমjয় কোনোদিন দেখিনি “ - মায় চোখ মুছিয়া আরও একটু José আসিল । বলিল, “কাল সকালেই কি আপনি যাবেন বাবার কাছে ? একটু, একদিন দেরি করুন।” দেবকুমার কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয়া বলিল, “তুমি বললে নিশ্চয়ই দেরি করব । কিন্তু কেন দেরি করতে চাইছ মায়া ? একেবারে নিশ্চিত ক’রে সব জানা কি ভাল না ?” মায় বলিল, “আমার আর একজনের কাছে অম্বুমতি নিতে হবে ।” দেবকুমার জিজ্ঞাসা করিল, “কার কাছে ?” মায়া বলিল, “আমার মায়ের । তিনি বেঁচে নেই, কিন্তু তাকে আমি অবহেলা করতে পারব না।” দেবকুমার জিজ্ঞাসা করিল, “তার অনুমতি তুমি কি ক’রে পাবে ?” মায়। অল্পক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, “এ কখ আমি কাউকে বলি না, কিন্তু আপনাকে বলব ; মায়ের কাছে মনে মনে যা বলি, তা তিনি জানতে পারেন । তারপরই তাকে স্বপ্নে দেখি । কিছু তিনি বলেন না,