পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৬ ত্রিটিশদের চেয়ে বেশী, কিন্তু তাহাদের একজনও “প্রতিনিধি” নাই । ভারত-প্রবাসী ব্রিটিশরা সংখ্যায় পাসী ছাড়া আর সকলের চেয়ে কম হইলেও তাহদের “প্রতিনিধি” তিন জন । সরকারী লোকেরা বলিয়া থাকেন, ভারতবর্ষে হিন্দুদের মধ্যে ৬ কোটি লোক অস্পৃশ্ব ও অবনত শ্রেণীর অন্তর্গত। ইহা সত্য হইলে তাহার উচ্চতর শ্রেণীর হিন্দু ছাড় আর সব ধৰ্ম্মাবলম্বীদের প্রত্যেকের চেয়ে সংখ্যায় বেশী । কিন্তু তাহীদের মধ্য হইতে কেবল ১ জন লোককে—ডক্টর আম্মেদ করকে —মনোনীত করা হইয়াছে। সরকারী ও বেসরকারী ইংরেজরা বলিয়া থাকেন, যে, ভারতবর্ষে ব্রিটিশ প্রভুত্ব বিশেষ করিয়া অবনত শ্রেণীর লোকদের এবং আদিম জাতিসমূহের প্রতি স্যায়বিচার ও তাহদের মঙ্গলের জন্য আবশ্বক। কিন্তু (গণ্ডগোল টেবিল বৈঠকে তাহদের প্রতি ন্যায়বিচার কিরূপ হইয়াছে, তাহা সুস্পষ্ট। যদি বলেন, তাহাদের মধ্যে এরূপ যথেষ্ট লোক নাই যাহারা বৈঠকের আলোচনায় যোগ দিবার যোগ্য, তাহা হইলে বলিতে হইবে, ইংরেজ গবন্মের্ণট প্রায় ঠুই শত বৎসর ধরিয়া এমন করিয়া তাহাদের বহু কোটি লোকের উন্নতিসাধন করিয়াছেন, যে, এখনও তাহাদের মধ্যে একট বৈঠকে হাত তুলিবারও লোক একজনের বেশী মিলে না । দেশী রাজ্যসমূহ হইতে যাহাদিগকে লওয়া হইয়াছে, র্তাহাদের ১৬ জনের মধ্যে ১০জন রাজা মহারাজা নবাব, इंॉर्क ওজম তাহীদের মন্ত্রী বা অন্য কৰ্ম্মচারী। এই রাজ্যগুলির ৭,১৯,৩৯,১৮৭ জন প্রজার মধ্যে একজনও মাকুষ নাই ! রাজা মহারাজার যদি বলেন, তাহারাই প্রজাদের প্রতিনিধি, তাহ হইলে সেরূপ বাজে কথায় বিশ্বাস করিবার ভাণও সরকারী বেসরকারী ইংরেজ ছাড়া অন্য কোন লোক করিবে না। দেশী রাজ্যসমূহের প্রজাদের মধ্যে কোন ধৰ্ম্মের লোক কত, এবং “প্রতিনিধি”দের মধ্যে কতজন কোন ধৰ্ম্মাবলম্বী তাহার পুঙ্খায়পুস্থ তালিকা দেওয়া অনাবতক। রাজা নবাবদের মধ্যে হিন্দুর সংখ্যা খুব বেশী। সে হিসাবে ১৬ জনের প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড মধ্যে ৪ জন মুসলমান “প্রতিনিধি” বেশীই হইয়াছে। প্রজাদের মধ্যে ৫,৩৫,৮৯,৮৮৬ জন হিন্দু, ৯২,৯০,৯৯২ জন মুসলমান। এই দুটি সংখ্যা অনুসারেও দেশী রাজাসমূহের মুসলমান “প্রতিনিধি"র সংখ্যা বেশ হইয়াছে। - আমরা ব্যবস্থাপক সভা বা অন্য কোন প্রতিনিধিসভাসমিতিতে ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মের ও শ্রেণীর আলাদা আলাদা প্রতিনিধি চাই না। সরকারী ও বেসরকারী ইংরেজরা তাহার সমর্থন করেন, এবং বলেন, যে, গবন্মের্ণট সকলের প্রতি, বিশেষত: সংখ্যানু্যন ও অল্পন্নত শ্রেণী সকলের প্রতি, ন্যায়বিচার করিতে চান ; এই কারণে আমরা (গগু)গোল টেবিল বৈঠকের সভ্যদের নামতালিকা বিশ্লেষণ করিয়া আমাদের বক্তব্য বলিতেছি । ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের প্রতি গবন্মের্ণট কিরূপ ন্যায়বিচার করিয়াছেন, তাহারও কিছু নমুনা দিতে চাই । প্রদেশগুলির মধ্যে বঙ্গের লোকসংখ্য| সকলের চেয়ে বেশী ; তাহার পর যথাক্রমে আগ্ৰা-অযোধ্য, মাম্রাজ, বিহার-উংকল, পঞ্জাব...। কিন্তু ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষের পঞ্চাশ জুন তথাকথিত প্রতিনিধির মধ্যে ১০ জন লওয়া হইয়াছে মন্দ্রিাজ হইতে । সকলের চেয়ে সংখ্যাবহুল বড়ালীদের মধ্য হইতে লওয়া হইয়াছে মোটে পাচ জন । তঁহাদের মধ্যে আবার স্থার প্রভাসচন্দ্র মিত্র সরকারী লোক, সুতরাং তাহাকে কোন দিক দিয়াই বাঙালীদের প্রতিনিধি বলা যায় না। বাকী চারি জনের মধ্যে দুজন মুসলমান, দুজন হিন্দু । পঞ্চাবের লোক ংখ্যা বঙ্গের অৰ্দ্ধেকেরও কম । কিন্তু পঞ্জাব হইতে মোট অনু্যম ছয় জন লোক লওয়া হইয়াছে। বোম্বাইয়ের লোকসংখ্যা পঞ্জাব হইতেও কম। সেখান হইতে অনু্যন আট জন লওয়া হইয়াছে। “অনু্যন” বলিতেছি এইজন্য, যে, কে কোন প্রদেশের লোক নামের দ্বারা তাহা সব স্থলে ঠিক করিতে পারিতেছি না । মুসলমান বাঙালীদের ভাবিবার একটি কথা আছে । ভারতবর্ষে সকলের চেয়ে বেশী মুসলমান বাস করেন বঙ্গে—২,৫১,১০,৮০২ । তাহার পর পঞ্চাবে ১,১৪,৪৪,৩২১ । কিন্তু পঞ্জাব হইতে তিন জন মুসলমান লওয়া