পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] কাশ্মীরের কথা (تايالا আণ্ডন থাকে এবং সেটা তারা ঢিলা আঙ্গরাখার মধ্যে নিয়ে শরীর গরম করে । অসাবধানতায় অনেক সময় গৃহ ভস্মীভূত হয় এবং মানুষও পুড়ে মরে। অধিকাংশ কাশ্মীরীর পেট আগুনের অঁাচে পুড়ে যায়। এক উড়িয়া ছাড়া ভারতে কাশ্মীরীর মত গরীব আর নেই। এরা দুবেলাই ভাত খায়। এক রকম শাক এদের প্রধান তরকারী। কাশ্মীরী মেয়ের বহু সন্তানবতী হয়, লোকে বলে এই শাকই নাকি কাশ্মীরীদের বহু প্রজা ও সৌন্দর্ঘ্যের মূল। এই কারণেই কাশ্মীরী কুলি মজুর, ইঞ্জিী বা ঘোড়ার সইসদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে কষ্ট হয়। কাজ অনুসারে বকৃশিস দেওয়া ভাল । চাকুরের আনন্দ “উপরি’তে, সাহেবদের আনন্দ এলাওয়েন্সে, কাজেই খুব উদারভাবে এই গরীব-দুঃখীদের বক্শিস দেওয়া উচিত । ঘোড়ার সঙ্গে যে-সব সইস যায়, কি কষ্টই না সহ করে তারা । আরোহী ধাতে কোনো কষ্ট না পায়, তার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। ইউরোপ ও আমেরিক টিপ সৃ’ না দিলে কোনো কাজই হয় না। আমাদের দেশের লোক কত অল্পে সন্তুষ্ট হয় । র্যার সামর্থ্য সত্ত্বেও বক্শিস দিতে কাতর হন, বুঝতে হবে তার হৃদয়হীন । কাশ্মীরীরা বড় মোলায়েম স্বভাবের লোক। ঝগড়, মারামারি খুবই কম। মজঃফরাবাদ শহর বাদ দিলে খুনজখম হয় না বললেও অত্যুক্তি হয় না। ছোট ছেলেদের মধ্যে বদমাইদি নাই বললেও চলে। অধিকাংশ মামলাই বিষয়ু-ঘটিত । গিলঘিষ্ট্র ও স্বাদু মুসলমান প্রধান। লে ও লডক্ বৌদ্ধপ্রধান। লডক্ তিব্বতের একটা অংশ মাত্র। এখানে উকিল নাই, আদালত নাই, জেল নাই ; ভারী শাস্ত এখানের মানুষ। লে শহর মনে হয় পৃথিবীর সৰ্ব্বোচ্চ অধিত্যকায় অবস্থিত। নয় হাজার হইতে তের হাজার ফিট উচ্চে মানুষের বসতি। এখানে নারী সাধারণত চারজন স্বামী গ্রহণ করে । মনে হয় জতুগৃহ-দাহের পর পাণ্ডবেরা এই তিব্বত অঞ্চলে আশ্রয় গ্রহণ করেন, কাজেই দ্রৌপদীর পঞ্চপতিত্বে তাদের সংস্কারে বাধে নাই। এখানে খাদ্য উৎপন্ন হয় খুব কম, কাজেই প্রজাবৃদ্ধি সম্ভবপর নয়। স্বাদু ও গিলঘিটে মুসলমান বহুপত্নীক । গুলমার্গ কাশ্মীরের প্রধান সম্পদ তাহার শিল্প। এক চীন ছাড়া এত সূক্ষ্ম শিল্পকাজ আর কোথাও হয় কি না সন্দেহ। এত কম মজুরী পৃথিবীর আর কোনো মজুর পায় না। অথচ এই মজুররা যেন যাদুকর। কোনো শিল্পীই তিন আনা হতে আট আনার বেশী মজুরী পায় না। এত অপূৰ্ব্ব সৌন্দর্ঘ্যের স্রষ্ট যে, সে মরে অনাহারে, নিষ্ঠুর নিয়তির এই পরিহাস ! শালে, টেবিল-ক্লখে, পালঙপোষে, শাড়ী কাঠের ও রূপার উপর কাশ্মীরী শিল্পী যে কাজ করে তা দেখলে আলাদীনের প্রদীপ মনে পড়ে। পাপিয়ার মাশে ও কাঠের উপর রঙের কাজ খুবই সুন্দর। পাপিয়ার মাশে বস্তুটি হচ্ছে ছেড়া কাগজ ও ছেড়া ন্যাকড়ার রাসায়নিক সংমিশ্রণে কম্পাউণ্ড বিশেষ, বেশ হালক। দেখতে কাঠের মত । এখানে কোনো জিনিষ কেন বড়ই কঠিন ব্যাপার, কারণ প্রতিপদেই ঠকবার ভয় । কাশ্মীরী ব্যবসাদর চীনাবাজারের ব্যাপারীদেরও হারিয়ে দেয়। দড়ি