পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] বুরহানপুরের কাপড়ের কারখানা সেকালে বস্ত্রশিল্পের জন্য বুরহানপুরের প্রসিদ্ধি ছিল। সম্রাট ও তাহার অস্তপুরের প্রয়োজনীয় বস্ত্রাদি বুরহানপুরের খাস কারখানায় তৈরি হইত। দাক্ষিণাত্যের স্থবাদারও তথায় কারখানা স্থাপন করিয়া নিজের প্রয়োজনীয় কাপড়, খেলাৎ এবং সম্রাটুকে উপহার দিবার বস্ত্রাদি তৈয়ার করাইতেন । বুরহানপুরের এই বস্ত্র-ব্যবসায় সরকারের একরকম একচেটিয়া ছিল। আওরংঞ্জেব যখন স্ববাদার হইয়া দ্বিতীয়বার দাক্ষিণাত্যে গেলেন তখন সম্রাট্‌ ৰ্তাহাকে জানাইলেন, “দরবার হইতে পুনঃ পুনঃ তোমাকে বিশেষভাবে লেখা হইতেছে যে, বুরহানপুরে বাদশাহী কারখানার অতিরিক্ত আর দু-একটি ছাড়া যেন অন্য কারখানা সেখানে খোলা না হয়।” নূতন কারখানা খুলিবার পর বাদশার মনে সন্দেহ জন্মিল শাহাঙ্গাদা বাদশাহী কারখানার অনিষ্ট করিবার চেষ্টায় আছেন। মীর নসীর ( ডাকনাম নসীরা ) নামক একজন লঘুচিত্ত চাটুকারকে সম্রাটু বুরহানপুরের বাদশাহী কারখানার পরিচালক ( দারোগ), এবং মুবার 'ওয়াকেয়ানবীস' ( সংবাদ-লেখক ) করিয়া পাঠাইলেন। এখনকার দিনে লাটসাহেবেরাও যেমন এসোসিয়েটেড প্রেসকে সমীহ করিয়া চলেন, মোগল সাম্রাজ্যের স্ববাদারের ওয়াকেয়ানবীস বা সরকারী সংবাদ-লেখককে সেইরূপ খাতির করতেন ; কেন-না বাদশা তাহদের চোখ দিয়া দেখিতেন, তাহদের কান দিয়া শুনিতেন। নসীর বুরহানপুরে আসিয়াই কারখানা সম্বন্ধে নানা রকম মিথা অভিযোগ দরবারে জানাইল। উজীর সাদুল্লা খা বাদশার আদেশ-মত আওরংজেবের কাছে ইহার কৈফিয়ৎ চাহিয়াছিলেন। আওরংজেব সাদুল্লা খাকে লিখিলেন,“মীর নদীর বাদশাকে গনাইয়াছে যে, আমার কৰ্ম্মচারীর বুরহানপুরের বাদশাহী কারখানার জন্য দড়ি ইত্যাদি সরঞ্জাম যোগাইতে অবহেলা করে। মীর নগীরের অভিযোগ এবং এই অশোভন ব্যাপার সম্বন্ধে অনুসন্ধান করিয়া যাহাতে এরূপ পুনরায় না ঘটে তাহার ব্যবস্থা করিবার জন্য সম্রাটু আমাকে আদেশ . করিয়াছেন। আপনি জানেন, তাহার লিখিত বিষয়ের ఫిలి-st শাহজাহঁ-আওরংজেব-সংবাদ \లు)ు যথার্থ এবং সম্রাটের কার্য্যে আমার কর্মচারীদের আলস্য ও অমনোযোগিতা প্রদর্শন, কল্পনারও অতীত। আমার কৰ্ম্মচারীদের সম্বন্ধে যে যাহা লেখে বা বলে তাহাই বিশ্বাসযোগ্য বোধে ঐ সকল বিষয়ের জন্য আমার কাছে কৈফিয়ং তলব করাই যদি এখন দরবারের নিয়ম হইয়া থাকে, তবে এক্ষেত্রে আমার কিছু বলিবার বা লিখিবার কোনো সার্থকতা নাই । যেরূপ অবস্থা দাড়াইয়াছে তাহাতে যতদিন হরনাল নামক কসবা ( ছোট শহর ) আমার জাগীরের অস্তভূক্ত আছে, ততদিন এই ঝগড়া শেষ হইবার নয়, কেন-না ( বুরহানপুর জেলার মধ্যে ) হরনালাতেই সবচেয়ে ভাল স্বতা পাওয়া যায়। কারখানার দারোগীর মনগড়া মিথ্যাপবাদও দরবারে বেশ বিকায় ; স্বতরাং সে কখনও এ কাৰ্য্যে নিবৃত্ত হইবে না । সে দড়ির মামলায় রং ফলাইয়া ও তাহার সঙ্গে আরও দুই-চারটা মিথ্যার ভাজ দিয়| আমার প্রতি বাদশার মন বিরূপ করিয়া দিবে ... ...যদি সম্রাটের হুকুম হয়, হরনাল কসবাকে খালসা-ই-শরিফ বা বাদশাহী খাসমহালের সামিল করিয়া আমি পাইনঘাটের দেওয়ানের দখলে ছাড়িয়া দিতে রাজি আছি এবং উহার পরিবর্তে অন্য জায়গা গ্রহণ করিতে পারি। তাহ হইলেই কারখানার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দারোগার মর্জিমাফিক পাওয়া যাইবে এবং তাহার মিথ্যা ও চুক্ৰলির রাস্তাটাও বন্ধ হইবে । বাদশার কাছে নজরের উপযুক্ত কাপড় প্রস্তুত হইবে-শুধু এই উদেখে আমি এখানে কারখানা খুলিয়াছি । যদি তাহার অভিপ্লেত হয় আমি নিজের কারখানা বন্ধ করিয়া দিতে পারি। এ সমস্ত কথা আশা করি আপনি ( সাম্বুরা ) সম্রাটের কর্ণগোচর করিবেন ।” এই সামান্ত ব্যাপাব এতদূর গড়াইল যে, আঙরংজেবের কারখানা একেবারে বন্ধ করিয়া দিয়া শাহজাই উচ্ছাকে প্রকাশ্বাভাবে অপমানিত করিলেন । به ، : মহম্মদ সুলতানের লাল পাগড়ী শাহ সুজার কন্যা গুলক্লথ বাছুর সহিত আও#ংজেৰের জ্যেষ্ঠপুত্র মহম্মদ স্বলতানের নিসবং বা বাগদান করা