পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&B8 এই স্বশ্বের কাহিনী পড়িয়া প্রত্যেক ভারতবাসীই গৌরব অমুভব করিবেন। ডাঃ ভিন্সেণ্ট স্মিথ প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ পুরুর এই পরাজয় লক্ষ্য করিয়া প্রাচ্য ভারতীয়ের উপর পাশ্চাত্য গ্রীকের স্বাভাবিক শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করিয়া অনেক কথাই বলিয়াছেন । ঐযুক্ত ডাক্তার রমেশচন্দ্র মজুমদার মহাশয়ই প্রথম দেখাইয়াছেন যে, তুলনা যদি করিতে হয় তবে তুলনা করা উচিত সেইখানে, যেখানে যুদ্ধ সমানে সমানে হইয়াছিল।* চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য যখন ভারত হইতে গ্রীকদিগকে তাড়াইয়। সমগ্র উত্তর-ভারত জুড়িয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিয়া ফেলিলেন, তখন আলেকজাণ্ডারের রাজ্যের পূর্বাংশের অধিপতি সেলিউকাসের সহিত র্তাহার যুদ্ধ উপস্থিত হইল। সেলিউকাস আলেকজাণ্ডারের সেনাপতিরূপে শত যুদ্ধের নায়কতা করিয়া যুদ্ধবিদ্যায় নিপুণ হইয়াছিলেন। নিজ বাহুবলে তিনি আলেকজাণ্ডারের প্রকাণ্ড সাম্রাজ্যের পূৰ্ব্বাংশ অধিকার করিয়া বৃহৎ এক রাজ্য গড়িয়া তুলিয়াছিলেন। কাজেই সেলিউকাস ও ভারতের নবীন সম্রাট চন্দ্রগুপ্তকে সমকক্ষ যোদ্ধা বলিয়া বিবেচনা করা যাইতে পারে। এই উভয়ের যুদ্ধের ফল সকলেই জানেন। চন্দ্রগুপ্তকে কাবুল, কান্দাহার ও বালুচীস্থান ছাড়িয়া দিয়া এবং সম্ভবতঃ নিজের কল্প চন্দ্রগুপ্তকে সম্প্রদান করিয়া সেলিউকাস সন্ধি করিতে বাধ্য হইলেন। চন্দ্রগুপ্তসেলিউকাস প্রসঙ্গে আমরা ইহাই স্পষ্ট দেখিতে পাই যে, চন্দ্রগুপ্তের যুগে প্রাকৃতিক প্রভাবে ভারতীয়গণ কাবু হইয় পড়ে নাই। উপযুক্ত নায়ক পাইলে তৎকালীন জগতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধাদিগকেও তাহারা পরাজিত করিতে সমর্থ। মৌর্য্য-বংশের পতন এবং গুপ্ত-বংশের উত্থানের মধ্যবর্তী যুগের ভারতের ইতিহাস নিতান্ত অস্পষ্ট । এইমাত্র জানা যায় যে গ্ৰীকৃ, পারদ ও শক জাতীয় অনেকগুলি রাজবংশ পর পর বা একই সময়ে ভারতের উত্তর-পশ্চিমাংশ অধিকার করিয়া রাজত্ব করিয়া গিয়াছে। ভারতীয় বীরগণ এই সমস্ত রাজ্যলোলুপ বিদেশীয়গণকে

  • Qutline of Ancient Indian History and Civilisation by Dr. R. G. Majumdar, p. 133.

প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড কি পরিমাণ বাধা দিতে পারছিল, তাহাৰ সবিশেষ বিবরণ জানিবার কোনই উপায় নাই । কেবলমাত্র উজ্জয়িনীরাজ গর্দডিল্লের পুত্র বিক্রমাদিত্য* শকারির কাহিনী হইতে জানা যায় যে, শক, পারদ প্রভৃতি “কষ্টসহিষ্ণু পাৰ্ব্বত্য জাতি”কে উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করিতে ভারতীয়গণ উপযুক্ত নায়কের পরিচালনার অপেক্ষ রাখিত মাত্র। বিক্রমাদিত্য শকদিগকে তাড়াইয়া উত্তর-ভারতে একচ্ছত্র হন এবং বিক্রম সম্বতের প্রতিষ্ঠা করেন। তথাপি ইহা স্বীকার করিতেই হইবে যে, শকগণ এক সময়ে ভারতের সমগ্র পশ্চিমাংশ অধিকার করিতে সমর্থ হইয়াছিল । শক-জাতীয় কুষাণ-সম্রাট কনিষ্কের রাজত্ব উত্তরাপথের মধ্যভাগ পৰ্য্যস্ত প্রসারিত হইয়াছিল । শক আক্রমণের এই ভীষণ ঝটিকার সম্মুখে ভারতীয়গণের নত হইতে হইরাছিল সন্দেহ নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে শক-জাতির এই পররাষ্ট্র আক্রমণ শুধু প্রবল ঝটিকার সহিতই উপমিত হইতে পারে। প্রবলতর ইউচি জাতির আক্রমণে যখম তাহার নিজবাসভূমি হইতে বিতাড়িত হইল তখন নূতন রাষ্ট্র জয় তাহাদের পক্ষে জীবন-মরণের সমস্ত হইয়। উঠিল । তখন মরির হইয় তাহার মধ্যএশিয়া ও ভারতের মধ্যবৰ্ত্তী গ্রীকৃ ও অন্যান্য জাতির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পাৰ্ব্বত্য রাজ্যগুলি আক্রমণ করিল এবং ঝড়ের মত ঐগুলিকে উড়াইয়া লইয়া গেল । ঝড় বহিতে লাগিল এবং অবশেষে ভারতবর্ষে আসিয়া তাহার আঘাত লাগিল। ভারতের পশ্চিমাদ্ধের উপর দিয়া প্রবলবেগে বহিয়৷ অবশেষে ঝড়ের গতি

  • এই গর্দভিন্ন বংশের বংশাবলি পুরাণে উদ্ভূত হইয়াছে, তথাপি এ পর্য্যস্তু ঐতিহাসিকগণ এই বিক্ৰমাদিতোর কাহিনী এবং তাঁহ দ্বারা বিক্রমাদের প্রতিষ্ঠার কখ। বড় বেশী বিশ্বাস করেন নাই, ম্যাটিকুলেশন পাঠ্য ইতিহাসগুলিতেও বিক্ৰমাদিত্য স্বাক্ষলাভ করেন at wafso owtfire Cambridge History of India গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে বিক্রমাক্ষিত্যের ঐতিহাসিকত্ব স্বীকৃত হইয়াছে। visssisten was rottfrs wartfers Epigraphia Indican দ্বিতীয় খণ্ডে বিজ্ঞ সম্পাদকপ্রবর, জগন্ধিকণ্ঠে জোরের সহিতই ধিক্রমাদিতোর ঐতিহাসিকত্বের সমর্থন করিয়াছেন ।