পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ԳԵ প্রবাসী--মাঘ, ১৩৩৭ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড দিলেন। সেইদিনই রাত্ৰি বারোটার সময় মুঙ্গের দুর্গের চারিদিক আলোকমালায় সুসজ্জিত হয়ে উঠল। পাটনা শহর নবাবের সেনা অধিকার করেছে, ইংরেজদের বন্দী করেছে। বাংলার নবাব-সৈন্য কাটোয় ও ঘেরিয়ার যুদ্ধে হেরে গিয়ে উধুস্থানালায় এসে দাড়াল। একদিকে ভাগীরথী অন্ত দিকে উধু ও পাশে ছোট ছোট পাহাড় উঠে সত্যই সে জায়গাকে দুর্গম করে তুলেছিল। নবাব-সৈন্য প্রাচীরের উপর কামান সাজিয়ে দাড়িয়ে-সম্মুখে গভীর জল—ইংরেজদের তোপ বসাবার স্থান মেল। শক্ত । দিনের পর দিন যেতে লাগল, ইংরেজ-সেনা কোনে উপায়েই দুর্গমূলে পৌছতে পারল না—হয়ত এ অভিযান ঐখানেই শেষ হবে । মির্জা নাজিফ খাঁ এক গুপ্তদ্বারের সংবাদ জানতেন, রাত্রে যখন সকলে বিশ্রাম করছে সেই সময় নাজিফ থ তার কয়েকজন বিশ্বাসী সৈন্তকে নিয়ে সেই গুপ্তদ্বার দিয়ে বার হয়ে সামনের অগভীর জল পার হয়ে সৈন্যশিবিরে এসে লুটপাট ক’রে ফিরে যেতেন। ইংরেজ ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠল । গুপ্তচর চারদিকে সন্ধান নিয়ে বুঝিতে পারল না, কোথা দিয়ে শত্র আসে। এক দিন রাত্রে যে একজন নবাব-সৈনিক নাজিফের দলকে বার হ’তে দেখেছিল তা কেউ জানে না। পূৰ্ব্বে ইংরেজ সরকারে কাজ ক’রে সে বিতাড়িত হয়ে নবাবের সেনা-দলে লেগেছিল, সেদিন হঠাৎ তার ইংরেজ-প্রীতি জেগে উঠল, সে পরদিন লুকিয়ে ইংরেজদের সেই গুপ্তদ্বারের সন্ধান দিয়ে এল । ইংরেজ-সৈন্ত সেই গুপ্ত দ্বার দিয়ে এসে অতর্কিতভাবে যখন নবাব-শিবির আক্রমণ করলে তখন সৈন্যরা নিদ্রিত । অতি অল্প সৈন্যই যুদ্ধ করার জন্ত দাড়িয়ে প্রাণ দিলে। সবাই পালাবার পথ খুঁজতে লাগল। প্রভাতের আলো যখন দুগে এসে পড়ল, তখন ইংরেজ জয়ী হয়ে দুর্গ দখল ক’রে বসেছে * উধুস্থানালার পরাজয়বাৰ্ত্তা মীরকাসিমের কাছে পৌছলে নবাব রাগে উন্মত্ত হয়ে গেলেন । রামনারায়ণের মত বিশ্বাসঘাতক ও ইংরেজ দরদীদের হত্যা করবার হুকুম দিলেন । দুর্গের মঞ্চের উপর থেকে জগং শেঠ পরিবারের মহাতপ চাদ ও সিতাব রায়কে ভাগীরথীর গভে ফেলে দেবার সময় তাদের নিমকের চাকর চুনির মানবদের সঙ্গে নিমজ্জিত হবার কাতর প্রার্থন—সে আন্তনাদ আজও মাঝিরা শুনতে পায় । তারপর শাহ, শুজারই মত সপরিবারে এই মুঙ্গের দুগের কাছে শেযবিদায় নিয়ে স্ত্রী পুত্রদের রোটাস দুগে পাঠিয়ে দিয়ে আপনার ভাগ্যের শেয পরীক্ষ করবার জন্য চললেন পাটনা । মুঙ্গেরের গ্রান্তে দুকুর। নাল পার হয়ে শেয একবার মীরকাসিম দুর্গের দিকে ফিরে চাইলেন । তারপর আদেশ দিলেন নালার উপরের সেতু ভেঙে দিতে। সেই ভাঙা বৃহদাকারের পিল্পেগুল। জলের উপরে দাড়িয়ে আজও সেইদিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে । কার্য্যপটু, শাসনকার্য্যে নিপুণ, বিচক্ষণ এমন নবাব এরকম সদিচ্ছা নিয়ে বাংলার মসনদে অনেক দিন বসেনি। কিন্তু বাংলার ভাগ্যবিধাতার ইচ্ছা ছিল অন্তরূপ । শুনতে • sir impieri, Vol.III.