পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q8ぐ。 প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড আমাদের মেয়েদের মাতৃগৃহেই বলুন, আর স্বামীর গৃহেই বলুন, এত বেণী পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকৃতে হয় যে, তারা কেবল সংসায়ে পরের একটা গলগ্রহ ছাড়া আর কিছুই নয় । কিন্তু ইউরোপে ১৪।১৫ বছরের কোন ছেলে বা মেয়েই কারুর গলগ্রহ হয়ে থাকে না, বা থাকতে চায় ন। সরনারী সমানভাবে শিক্ষিত হয় সমানভাবে বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচিত হয় ; কাজেই সেখানে শ্রম-বিভাগ বলে জিনিষটা খুব কমই দৃষ্ট হয়, বিশেষ করে নধ্যবিত্ত লোকদের ভিতর। সেখানে ছেলেমেয়ে সমানভাবে একসঙ্গে এক আপিসে, এক ফৰ্ম্মে স্কুল কলেজে কাজ করছে এবং উপাৰ্জ্জন করছে । এই কারণে সেখালে আমাদের মত গরীব কেউ নেই। আল্পীবন পুরুষের গনুগ্রহ হয়ে থাকাতে নারীর আত্মসন্মান তো নেই-ই, উপরন্তু সংসারে একটা বিরাট অভাবের জামদানি হয়েছে। পুরুষৰেই কেবল চাকুরী ক’রে অর্থ সংগ্রহ করতে বে আর নারী তার সহধৰ্ম্মিণী মাত্র, কিন্তু সহকর্মিণী হবেন না, এমন হীন আকাঙ্গা নারীর মন থেকে শিক্ষার প্রভাবে দূর করতে পারলে আজ আমাদের সমাজেও অর্থের অভাবে এত অশাপ্তির স্বষ্টি হ’ত না, এবং অকালে আত্মহত্যার দৃষ্টান্তও দেখা যেত না।... আমরা ভুলে যাই, ছেলেমেয়েকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা রেখে মামুন করা যেমন বিজ্ঞান-বিগর্হিত, তেমনিই আবার নৈতিক জ্ঞানের অভাবসুচক । এ তত্ত্ব ইউরোপের বড় বড় মনোবিজ্ঞানবিদরা আবিষ্কার করেছেন এবং উারা sex complexএর ( নারী পুরুষ ভেদ সম্বন্ধে সজ্ঞানতার ) প্রধান কারণ কি তা দেখিয়ে নারী-পুরুষের একত্র শিক্ষার স্রষ্ঠ তুমুল জান্দোলন করছেন । আমি নিজেই জনেৰু জায়গায় স্কুলে ছেলেমেয়েদের এক-সঙ্গে পড়তে দেখেছি এবং নিজেও পড়েছি । শৈশব থেকেই যদি স্ত্রী পুরুষ একসঙ্গে শিক্ষা পায়, খেলা করতে পায়, তাহ’লে তাদের Rex complex এর অনেক সমস্যারই সমাধান হয় এবং উচ্ছ জ্বলতাও কম হয়—একট। স্বাস্থ্যময়, পবিত্রতাময় আবহাওয়া গড়ে উঠতে পারে। মনোবিজ্ঞান এই বলে । এ শুধু কথার কথা মাত্র নয়-হাতেকলমেও অঙ্গি ইউরোপে এর সুফলের অনেকটা পরিচয় পাওয়া গেছে ।---আমরা নীতির দোহাই দিয়ে ধৰ্ম্মের হুকুম বলে মেয়েকে পুরুষের সঙ্গে একত্র পড়তে, খেলা ও কাজ করতে দেওয়া দূরে থাকুক, তাকে অন্তঃপুরের সীমার বাইরেই আলতে চাই নে। কাজেই শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেই পর্দা যাবে, এই ভয়ে উপযুক্ত শিক্ষায়ও ব্যবস্থা করিনে। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখা উচিত যে, এতে কেবল নারীর শরীর ও মনের বিকাশের পথ রুদ্ধ করিলে, সমাজে নানা পাপের ও ধৰ্ম্ম-বিগহিন্ত কাজের পথ প্রশস্ত করে দেই --- সমাজসেবকদের একটু মনোবিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কাজ করতে হবে । নারীর মানসিক বৃত্তির বিকাশের পথ মুক্ত করে ন৷ দিতে পারলে সমাজের সেবা অপুর্ণ থেকে যাবে। যদি নারী-বৃত্তিগুলো চেপে রাথী হয়, তবে একদিন সেগুলো ফেটে বেরোবেই—এই হচ্ছে তাদের প্রকৃতি, এবং এর এমন একটা প্রতিক্রিয় আসবে, যে, তখন তা সামলান দায় হয়ে পড়বে ... ( সওগাত—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ ) ফজিলতুননেস। বলিদান একরামুদিন > “বাপজান, আমার বিবাহের জন্য এখন ব্যস্ত হইবেন না। আপনি আমার জন্য যে পাত্র স্থির করিয়াছেন, তিনি আমার যোগ্য নহেন।” চতুর্দশবর্ষীয় বালিকা সখিনা পিতা আমীর সাহেবের নিকট অস্পষ্টস্বরে এই কয়েকটি কথা বলিয়া লজ্জাবনতমুখী হইলেন । আমীর সাহেব ক্ষুদ্র একটি বালিকার মুখে এই কথা কয়েকটি শুনিয়া স্তম্ভিত হইলেন। এতটুকু মেয়ে বলে কি! - আমীর সাহেবের জন্ম অভিজাত বংশে । তিনি আরবী ভাষাবিং একজন বড় মৌলানা। র্তাহার পূর্বপুরুষ নবাব সরকারে কি একটা বড় কাজ করিতেন। 박 র্তাহীদের সেই বংশ হইতে অনেকগুলি ঘর হইয়া এখন চারি পাচটা গ্রামে ছড়াইয়া পড়িয়াছে । ইহার বংশগৌরবে বাংলা দেশের মুসলমানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এই বংশগৌরব অক্ষুণ্ণ রাখিবার জন্য ইহার নিজেদের ভায়াদুদের মধ্যে ছাড়া অপর কোন বংশে পুত্রকস্তার বিবাহ দেন না। যাহারা নিজ ভায়াদদের ংশে পাত্র বা পাত্রীর অভাবে অপর বংশে পুত্র বা কস্তাকে বিবাহ দিয়াছেন, তাহাজের পূর্বসম্মান নষ্ট হষ্টয়াছে। যে ভায়াদগণের বংশগৌরব এখনও অক্ষুণ্ণ আছে, তাহারা নষ্টগৌরব জ্ঞাতিদের অভিজাত সম্প্রদায় হইতে বাদ দিয়াছেন । মৌলানা আমীর সাহেব বংশগৌরবে অক্ষুণ্ণ ।