পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woe a প্রবাসী—ফাল্গুন, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড মনিন সোৎসাহে ব’লে উঠলে, ‘খুব খাবে।—খুব খাবে, বেশ করেছেন, আমাদের তে সব জানা নেই, আপনি...” মুকুহাসে বেশ তে’ ব’লে তিনি চলে গেলেন । অভয় প্রিন্সের দিকে চেয়ে বললে, "দেখলেন, আপনি অভয় দিলে কি হবে, ওরে দেবতাতে টেনেছে। কেবল খাই খাই...” প্রিন্স ও কথায় কান না দিয়ে প্রশ্ন করলেন, “উনি ?” নিবারণ বললে, “ব্রাহ্মণের মেয়ে, এইখানেই থাকেন । আমাদের - রোধে খাওয়াচ্ছেন ;-বড় ভাল । কিন্তু ‘বিল’-এ (bill-এ) ন! পিলে শুকিয়ে দেন । --রোসে৷ রোসো আগে—”এই ব’লে, চারখানা জিলিপি তুলে নিয়ে ‘ব্রাহ্মণের মেয়ে, তার তো আরও বেলা হবে—দিয়ে আসি-” সকলে একবাক্যে ব’লে উঠলে,“নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই—” গোপাল বললে, “শুভাংসি বহুবিস্লানি, আগে দিয়ে এসে দাদা ।” নিবারণ জিলিপি নিয়ে চলে গেল । কেউ বললে, “সোনার বেনে কি না, मिर्छ। ” কেউ—“কাশীতে ওই-ই কাজ করলে |’ কেহ—“নারীর মর্য্যাদা-রক্ষা শিষ্টাচারের সোপান ।” ইত্যাদি নিৰ্ম্মম প্রশংসাবাদের সঙ্গে জিলিপির স্বাদ গ্রহণ চলতে লাগলো । জিলিপি এবং বাক্য দু-ই ছিল বেশ উপভোগ্য —তর, তম-টার বিচার অনাবশ্বাক । নিজের প্রশংসা শুনতে নেই। নিবারণ এসে কেবল জিলিপিই পেলে এবং খেলে। ভালই হ’ল । প্রগাঢ় প্রথম বৈকালে কোথায় কোথায় বেড়াতে যেতে হবে, কি কি দেখতে হবে, এই সব কথাই আরম্ভ হ’ল । রমেশ বললে, “যেখানেই যাওয়া যাক, সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে কিন্তু একবার অহল্যাঘাট হয়ে আসতেই হবে। সোনালীবাবুকে পেয়েছি—র্তার অপিনিয়নটা...” প্রিন্স জিজ্ঞাসা করলেন, “কি সম্বন্ধে ?? “আছে, শুনতেষ্ট পাবেন । উনি কিন্তু যেতে চান ‘সঙ্কট-মোচনে । হরেন বললে, “সে আর আমরা কে না চাই—এর মধ্যে বেসঙ্কট আর কে ? এই ক’টা দিন বাদেই তো ফিরতে হবে, এত শীগগির কি পাওনাদার বেটার মরবে !” নেপেন বললে, “শুনেছি তিনি খুব জাগ্রত, তা হ’লেও দিনে দিনেই যেতে হবে কিন্তু । রাতে আর কে-না ঘুমোন, দেবতার ও চুল ধরতে পারে, কি জানি বাবা, যে ভাগ্য ।” অভয় বললে, “মনিনকে কিন্তু নিয়ে যাওয়া চাই-ই । থাকলে .. ” মনিন কথা কইলে, “আচ্ছা, আপনার ‘অভয়' নাম রেখেছিল কে ? বাপ মা তো এতবড় ভুল করেন না ।” প্রিন্স বললেন, “আর কথাটি কয়ো না অভয় ।” পরে, কবজি-ঘড়ি কাৎ করে—“ইস বায়োটা বাজে যে, নাইবে না ? তিন দিন আঞ্জ পেড়াপাৰ্ব্বণ চলেছে, দুটি অল্প দিয়ে ধন্য হও ;–ওদিকে ইলিস মাছের গন্ধ পাড়াটাকে বাদশা-বাগ বানিয়ে দিয়েছে—আর অপেক্ষা করা সইবে না ।” সকলে হানতে হাসতে উঠে পড়লেন । এমন সময় ক্লাস্ত, ঘৰ্ম্মাক্ত সুরেশ এসে উপস্থিত । সে সাউথ-গেট ( দক্ষিণদ্বারী ) বীমা কোম্পানীর এজেণ্ট,— শিকারে বেরিয়েছিল । - “উ, তেষ্টায় ছাতি ফাটচে,” (জিলিপির থালা দৃষ্টে) “এ কি, এক টুকুরোও রাখনি যে দেখচি ” ধনেশ বললে, “টেক্স, দারোগ। আর বীমার এজেন্ট যেখানেই যায় আদরের সীমা থাকে না ; এমন অভদ্র কে আছে যে মুখমিষ্টি না-করিয়ে ছেড়েছে ! কবার মেরেছ বলে ।” সুরেশ,-“আচ্ছা বাবা-‘রস লৈ সঃ-ই সই।” খানিকটে রস-সংযোগে এক গেলাস সরবৎ টেনে ফেলে "আঃ– বাঁচলুম” ব'লে সুরু করলে, “এটা দেখচি এজেণ্টের আড়ৎ, যাকে ধরি সেই বলে “পালটি-বদলে রাজি আছি’ । এ গুরুর দেশ–শিষ্য নেই!”