পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পুরাণে কাল Seసి বতমান পাজির বুঝিলে কাল যে নিরবধি, তাহাই স্মরণ হয়। দীর্ঘতম ঋষি সহস্র বর্ষ তপস্যা করিলেন । সে বর্ষ ৩৬৫ দিনের হইতে পারে কি ? পুরাণ পড়িতে পড়িতে এইরুপ কত জিজ্ঞাসা আসিয়া পড়ে, তাহার সংখ্যা নাই। নব্যশিক্ষিতের পুরাণ wego, NCR §3a, §to mythical stories কিন্তু জল্পনাই বা হইল, পুরাকালের জল্পনাও যে ইতিহাসের অঙ্গ । দেশ-বিদেশের উপকথা শনিতে কৌতুক বোধ করি, মানব-মনের লীলা-চাতুর্য দেখাই ত ইতিহাস । আমি মাত্র চারি পাঁচখানা পুরাণ দেখিয়াছি, সব বুঝি নাই ; কিন্তু, এইটুকু বুঝিয়াছি, পুরাণ আমাদের দেশের পুরাবৃত্তই বটে। এখানে বায়ু, মৎস্য ও বিষ্ণুপুরাণ হইতে কোন কোন বিষয় সংগ্ৰহ করিতেছি । এই তিন পুরাণ ধরিবার হেতু আছে । তিনই পঞ্চ-লক্ষণ । সে পাচ লক্ষণ এক্ট,—আদি স্বষ্টি, পরবর্তী হষ্টি, বংশ, মন্বস্তর, বংশামুচরিত। অমরকোষে পুরাণের এক নাম ‘পঞ্চলক্ষণ । কেহ কেহ মনে করিয়াছেন, এই কোষ পঞ্চম খ্ৰীষ্ট-শতাব্দে প্রণী ত হইয়াছিল, অমরসিংহ ও বরাহমিহির সমকালীন । আমার বিবেচনায় অমরকোষ ইহার দুই তিন শত বৎসর পূর্বে, বোধ হয়, মগধে প্রণীত হইয়াছিল । সে যাহা হউক, পুরাণের পঞ্চলক্ষণ অমরকোষের পূর্বেই মান্য ও গণ্য হইত। পঞ্চলক্ষণ পুরাণ আরও আছে, কিন্তু, এই তিনে ঋষিবংশ ও প্রাচীন ও অপ্রাচীন রাজবংশ যেমন আছে, অন্য পুরাণে তেমন নাই । ভাগবত পুরাণেও কিছু কিছু আছে। কিন্তু উপস্থিত প্রসঙ্গে এত আবস্তক হইবে না। ২। পুরাণত্রয়ের স্বৰূপ বায়ুপুরাণ বায়ুপুরাণ কোনখানি ? প্রশ্নটা নূতন ঠেকিবে, কিন্তু, পুরাণের নামে ভূল হইয়া গিয়াছে। অষ্টাদশ পুরাণের নাম এই—ব্রহ্ম, পদ্ম, বিষ্ণু, শৈব, ভাগৰত, নারদীয়, মার্কণ্ডেয়, অগ্নি, ভবিষ্ক, ব্রহ্মবৈৰত লিঙ্গ, বরাহ, স্কন্দ, বামন, কুৰ্ম, মৎস্ত, গরুড়, ব্রহ্মাও । অষ্টাদশ পুরাণের এই এই নাম অনেক পুরাণে আছে। ইহার মধ্যে বায়ু পুরাণ নাম নাই। কিন্ত মৎস্য ও নারদীয় পুরাণে ‘শৈব’ স্থানে ‘বায়বীয়’ লিথিত আছে । অর্থাৎ শিবপুরাণ ও বায়ুপুরাণ এক। কিন্তু, শিবপুরাণের যে পুরাতন লক্ষণ আছে,সে লক্ষণের শিবপুরাণ না কি পাওয়া যায় না। “বঙ্গবাণী’র শিবপুরাণ ঠিক সে পুরাণ নয় । ইহার মধ্যে এক “বায়ুবীয় সংহিতা” আছে। কিন্তু, শিবপুরাণের লক্ষণ মেলে না। “এসিয়াটিক সোসাইটি" ও “বঙ্গবাসী” যে বায়ুপুরাণ ছাপাইয়াছেন, তাহার সহিত ব্ৰহ্মা গুপুরাণ প্রায় মিলিয়া যায়। শিবপুরাণে রেবামাহাত্ম্য ও গয়ামাহাত্ম্য ছিল, ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে ছিল না। কিন্তু, “সোসাইটি’র বায়ুপুরাণে গয়ামাহাত্ম্য জুড়িয়া দেওয়া, হইয়াছে। প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব শ্ৰীযুত নগেন্দ্রনাথ বস্থ ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণ প্রকাশ করিয়াছেন । তাইার ভূমিকায় বযুজ মহাশয় এই ভ্রম দেখাই৷ ”সোসাইটি”র বায়ুপুরাণের সম্পাদক রাজেন্দ্রলাল মিত্রকে দুকথা শোনাইয়। দিয়াছেন । কিন্ত ইহারাই প্রথমে ভুল করেন নাই । ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে ভাবি রাজবংশ নাই, কিন্তু, বায়ুপুরাণে আছে । এই রাজবংশ নূতন যোজিত নয়। সে যাহা হউক, প্রকাশিত বায়ুপুরাণ মূলে ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণ হইলেও নূতন যোজনার পর বায়ুপুরাণ নামে খ্যাত হইয়াছে। উপস্থিত প্রসঙ্গে “বঙ্গবাসী’র বায়ুপুরাণ যথেষ্ট হইবে। “ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ’ বললে বিশ্বকোষ কাৰ্যালয় হইতে প্রকাশিত “ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ” বুঝিতে হইবে। বায়ুপুরাণ বায়ু-প্রোক্ত শৈবপুরাণ। এই বায়ুপুরাণ কখন প্রথমে উক্ত হইয়াছিল, তাহ পরে পুরাণ হইতে বলিতেছি। কিন্তু, সে আদিরূপে নূতন কিছু কিছু যোজিত হইয়াছে। মগধের গুপ্তবংশ পর্যন্ত রাজাদিগের নাম আছে। ইহা হইতে বুঝিতেছি, বায়ুপুরাণের বর্তমান সংস্করণ ৫০০ খ্ৰীষ্টাব্দ হইতে চলিয়া আসিতেছে । কিন্তু এই ভাবি রাজবংশ ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে নাই, বায়ুপুরাণের এক পুৰীতেও নাই। অতএব এই অংশটির জন্ত সমগ্র বায়ুপুরাণ আধুনিক বলা যাইতে পারে না । পুরাতন মন্দিরের জীর্ণ সংস্কার হইলে মন্দিরটি নূতন বলা চলে না।