পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓካbe পারেন না। তিনি দেখাইলেন, ১৮৫৬, ১লা অক্টোবর তারিথের পত্রে বিলাতের কর্তৃপক্ষ অাশা দিয়া বলিয়াছেন যে, বালিক-বিদ্যালয়গুলির ছাত্রীদের নিকট হইতে মাহিন লওয়া হইবে না। কিন্তু তৎসত্ত্বেও ছোটলাট মনে করেন, আরও কিছু করা দরকার। তাই তিনি প্লেস্তাব করিলেন, যখনই বালিক-বিদ্যালয়ের জন্য নি-খরচায় উপযুক্ত গৃহ এবং অন্ততঃ কুড়িটি ছাত্রী ভৰ্ত্তি হইবে এমন একটা আশা পাওয়া যাইবে, তখনই স্কুল-পরিচালনার সমস্ত খরচ সরকার সরবরাহ করিবেন। ১৮৫৮, ৭ই মে তারিখের পত্রে ভারত-সরকার বালিকাবিদ্যালয় সম্পর্কে সরকারী সাহায্যের নিয়মাবলীর ব্যতিক্রম করিতে অস্বীকৃত হইলেন ; বলিলেন, উপযুক্ত পরিমাণে স্বেচ্ছাদত্ত সাহায্য লা পাওয়া গেলে এরূপ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হওয়াই ভাল । ভারত-সরকারের এইরূপ আদেশ বিদ্যাসাগরের কাজে একান্তু বাধা জন্মাইল । সরকারের অনুমোদন পাওয়া যাইবেই, এই মনে করিয়া বিদ্যাসাগর অনেকগুলি বালিকাবিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন। অবগু কথা ছিল, স্থানীয় অধিবাসীরাই উপযুক্ত বিদ্যালয়-গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিবে, আর সরকার অন্ত্য-সব খরচ যোগাইবেন । পণ্ডিত এখন বুঝিলেন, তাহার সমস্ত পরিশ্রম ব্যর্থ হইয়াছে, এত কষ্টের স্কুলগুলি অবিলম্বে উঠাইয়া দিতে হইবে ... ১৮৫৮, নভেম্বর মাসে বিদ্যাসাগর সরকারী চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিয়াছিলেন। মাসিক ৫০০ টাকার আয় হ্রাস, সরকারের সাহায্যদানে অসম্মতি,—এ-সব কিছুতেই তৎপ্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলির “ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরকে নিরাশ করিতে পারিল না। বালিকবিদ্যালয়গুলির পরিচালনের জন্য তিনি এক নারীশিক্ষ-প্রতিষ্ঠান ভাণ্ডার খুলিলেন। ইহাতে পাইকপাড়ার রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ রায় প্রমুখ বহু সন্ত্রাস্ত দেশীয় ভদ্রলোক এবং উচ্চতন সরকারী কৰ্ম্মচারীরা নিয়মিত চাদ দিতেন ।... আগেই বলিয়াছি, ১৮৫৬ আগষ্ট মাসে বিদ্যাসাগর বীটন-স্কুলকমিটীয় সম্পাদকের পদ গ্রহণ করেন। ১৮৬৪, জানুয়ারি মাসে তিনি উক্ত কমিটির সদস্ত নিৰ্ব্বাচিত হন। তাহাকে নানা কাজে ব্যাপৃত থাকিতে হইত, কাজেই সময় তাহার বেশী ছিল না, তবুও বীটনবিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য তিনি যথেষ্ট চেষ্টা করিতেন। মিস মেরী কাপেণ্টারের নাম এদেশে মানব-হিতৈষী কৰ্ম্মী ও ভারত-বন্ধু বলিয়া সুপরিজ্ঞাত। ১৮৬৬ খৃষ্টাব্দের শেষাশেষি তিনি কলিকাতায় আসেন। ভারতবর্ষে নারীশিক্ষার প্রচার ছিল তাহার প্রাণের ইচ্ছা। বিদ্যাসাগর যে স্ত্রীশিক্ষা-বিস্তার কার্যে একজন বড় কৰ্ম্মী একথা সুবিদিত। মিস কাপেন্টার কলিকাত পৌঁছিয়াই পণ্ডিতের সহিত পরিচিত হুইলার জন্ত ব্যগ্র হইয়। উঠিলেন। শিক্ষাবিভাগের ডিরেক্টর অ্যাটকিনস সাহেব বঁটন-বিদ্যালয়ে মিস কাপেস্টারের সহিত পণ্ডিতের পরিচয় করাইয়া দিলেন। প্রথম আলাপেই উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপিত হইল।-- একদল দেশীয় শিক্ষয়িত্রী গড়িয়া তুলিবার উদ্দেঙ্কে আপাততঃ কীটনবিদ্যালয়েই একটি নর্মাল স্কুল স্থাপিত করিবার জন্য মিস কাপেন্টার প্রান্দোলন উপস্থিত ক্ষরিলেন। কেশবচন্দ্র সেন, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, এম-এম, ঘোষ প্রমুখ এদেশীয় জনকয়েক গণ্যমাঙ্ক লোক এই আন্দোলনের সপক্ষে ছিলেন । মিস কাপেন্টারের সস্থিত তাহার প্রস্তাবের ঔচিত্য বিবেচনা করিয়া দেখিবার জগু উপহাদের চেষ্টায় ব্রাহ্মসমাজে একটি সভার আয়োজন হয় ( ১ ডিসেম্বর, ১৮৬৬ )। DBBHHHCL DBBB BBB uD ee DBB D DDD প্রবাসী-ফাঙ্কন, ১৩৩৭ AMMAJJeMMAAeeMMAJJAJJJAeJAAASAASAASAA AAAAJAJJSJAS AAMJJSAASAASAAAS [ «©ewt ভাগ, ২য় খণ্ড গঠিত হয়, বিদ্যাসাগর তাহার একজন সভ্য নির্বাচিত হন। স্থির হয়, কমিটি প্রস্তাবিত নর্থাল স্কুল স্থাপন বিষয়ে সরকারের নিকট আবেদন করিবেন। সভার কার্য্যাবলী সম্বন্ধে অসন্তুষ্ট হইয়। বিদ্যাসাগর কমিটিভুক্ত থাকিতে অস্বীকার করেন - ১৮৬৭, ১লা সেপ্টেম্বর একখানি ীির্যপত্রে বাংলার ছোটলাট স্তর উইলিয়ম গ্রে এ-বিষয়ে বিদ্যাসাগরের মতামত জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইলেন । এ-প্রস্তাবে পণ্ডিত সম্মত হইতে পারিলেন না । তিনি উত্তরে ছোটলাটকে লিখিলেন,— “আপনার সহিত শেষ সাক্ষাতের পর আমি বহু অনুসন্ধান করিয়াছি এবং ব্যাপারটি বিশেষরূপে ভাবিয়া দেখিয়াছি। কিন্তু দুঃখের সহিত জানাইতেছি, বীটন-বিদ্যালয়েই হোক বা স্বতন্ত্রভাবেই হোক, হিন্দুসমাজের গ্রহণোপযোগী একদল দেশীয় শিক্ষয়িত্রী তৈয়ারী করিবার জন্য মিস কাপেন্টার যে-উপায় অবলম্বন করিতে চান, তাহ কার্য্যে পরিণত করা কঠিল,— এ বিধয়ে অামায় মত পরিবৰ্ত্তিত হয় নাই। বস্তুতঃ, সমাজের বর্তমান অবস্থা ও দেশবাসীর মনোভাব এরূপ প্রতিষ্ঠানের পরিপন্থী ; যতই ভাৰিতেছি, আমার এ ধারণ। ততই দৃঢ়তর হইতেছে। ইহা যে সাফল্যলাভ করিবে না, সে বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ, সেই হেতু সরকারকে সাক্ষাৎভাবে এ কাজে নামিতে আমি কোনমতেই পরামর্শ দিতে পারি না। সন্ত্রান্ত হিন্দুর যখন অবরোধ-প্রথা ভঙ্গ করিয়া দশ-এগারে বছরের বিবাহিত বালিকাদেরই বাড়ি হইতে বাহির হইতে দেয় না, তখন তাহার বয়স্থ আত্মীয়াদের শিক্ষয়িত্রীর কার্য্য গ্রহণ করিতে কিরূপ সম্মতি দিবে, তাহ সহজেই বুঝিতে পারিতেছেন। কেবল অসহায়া অনাথ বিধবাদেরই এ-কায্যে পাওয়া যাইতে পারে । নৈতিক দিক দিয়া শিক্ষণকার্য্যে তাহার কতদূর উপযুক্ত হইবে, সে বিচার করিতেছি না, তবে ইহা নিঃসন্সেছ যে, অন্তঃপুর ছাড়িয়া সাধারণ শিক্ষয়িত্রীর কাজে নামিয়াছে বলিয়াই তাহার। সন্দেহ ও অবিশ্বাসের পাত্রী হইবে ; ফলে এই অনুষ্ঠানের সাধু উদেষ্ঠ বার্থ হইবে .ৈ “মেয়েদের শিক্ষার জগু স্ত্রী-শিক্ষয়িত্রীর আধখ্যকত। যে কতটা অভিপ্রেত এবং প্রয়োজনীয় তাহী অামি বিশেধ জানি,-একথা আপনাকে বল বাহুল্য। আমার দেশবাসীর সামাজিক কুসংস্কার যদি অলঙ্ঘনীয় বাধারূপে না দাড়াইত, তাহ হইলে আমিই সকলের অাগে এ-প্রস্তাব অনুমোদন করিতাম এবং ইহাকে কাৰ্য্যকর করিবার জম্ব আন্তরিক সহযোগিতা করিতে কুষ্ঠিত হইতাম না। কিন্তু যখন দেখিতেছি, সাফল্যের কোনোই নিশ্চয়তা নাই এবং এ-কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিলে সরকার অনর্থক অখ্ৰীতিকর অবস্থায় পড়িবেন, তখন কোনমতেই আমি এ ব্যাপারে পোষকতা করিতে পারি না।-- ( ১ অক্টোবর ১৮৬৭ ) কিন্তু বাংলা সরকার মিস কাপেণ্টারের কল্পিত ব্যবস্থার অনুমোদন করিলেন । শীঘ্র ইহা পরীক্ষণ করিয়া দেখিবার সুযোগও ঘটিল। ব্যয়সংক্ষেপ করা হইবে, কাৰ্য্যকারিতাও বাড়িবে, এইরূপ প্রয়োজনসাধনার্থ সরকার প্রস্তাবিত নর্মাল স্কুল ও বঁটন স্কুল এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগ করিয়া দিলেন । মাসিক তিন শত টাক বেতনে তিন বৎসরের জন্য মিসেস্ ব্রিটশে নামে এক মহিল বঁটন ও নৰ্ম্মাল স্কুলের স্বপারিন্টেণ্ডেণ্ট নিযুক্ত হইলেন (২৭ জানুয়ারি, ১৮৬৯) বীটন-স্কুল-কমিটি ভাঙিয়া গেল। শিক্ষ-বিভাগের ডিরেক্টর কমিটী সদস্যদের—বিশেষভাবে কমিটির সুদক্ষ সম্পাদক বিদ্যাসাগরকেগুছিাদের অতীত সাহায্যের জষ্ঠ ধন্যবাদ দিলেন ।