পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] ാ മാ ു. আছে ? : একঘেয়ে—ধোয়া—বৃষ্টি—শীত—তিনি পয়সা খরচ করিয়া সেখানে গিয়াছিলেন সাবান প্রস্তুতপ্রণালী শিখিবার জন্য, পথের ধারের গাছপালা দেখিতে যান নাই বা ইটালির আকাশের রং লক্ষ্য করিয়া দেখিবার উপযুক্ত সময়ের প্রাচুর্য্যও তার ছিল না। নিৰ্ম্মলাকে অপুর ভাল লাগে, কিন্তু সে তাহ দেখাইতে জানে না। পরের বাড়ী বলিয়াই হউক, বা একটু লাজুক প্রকৃতির বলিয়াই হউক, সে বাহিরের ঘরে শান্ত ভাবে বাস করে—কি তাহার অভাব, কোনটা তাহার দরকার, সে কথা কাহাকেও জানায় না। অপুর এই ঔদাসীন্ত নিৰ্ম্মলার বড় বাজে, তবুও সে না চাহিতেই নিৰ্ম্মলা তাহার ময়লা বালিশের ওয়াড় সাবান দিয়া নিজে কাচিয়া দিয়া যায়, গামছা পরিষ্কার করিয়া দেয়, ছেড়া কাপড় বাড়ীর মধ্যে লইয়া গিয়া মাকে দিয়া সেলাইয়ের কলে সেলাই করিয়া আনিয়া দেয়। নিৰ্ম্মল চায় অপূৰ্ব্ব দাদা তাহাকে ফাই-ফরমাস করে, তাহার প্রতি হুকুমজারি করে ; কিন্তু অপু কাহারও উপর কোনো হুকুম কোনো দিন করিতে জানে না—এক মা ছাড়া । দিদির ও মায়ের সেবায় সে অভ্যস্ত বটে, তাও সে সেবা অযাচিত ভাবে পাওয়া যাইত তাই। নহিলে অপু কখনো হকুম করিয়া সেবা আদায় করিতে শিখে নাই । তাহ ছাড়া সে সমাজের যে স্তরের মধ্যে মানুষ, ডেপুটী বাবুর সেখানকার চোখে ব্ৰহ্মলোকবাসী দেবতাদের সমকক্ষ জীব। নিৰ্ম্মলা ডেপুটী বাবুর বড় মেয়ে-রূপে, বেশভূষায়, পড়াশুনায়, কথাবাৰ্ত্তায় একমাত্র লীলা ছাড়া সে এ পর্য্যন্ত যত মেয়ের ংস্পর্শে আসিয়াছে—সকলের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ । সে কি করিয়া নিৰ্ম্মলার উপর হুকুমজারি করিবে ? নিৰ্ম্মল তাহা বোঝে না—সে দাদা বলিয়া ডাকে, অপুর প্রতি একটা আস্তরিক টানের পরিচয় তাহার প্রতি কাজে —কেন অপূৰ্ব্ব দাদা তাহাকে প্রাণপণে খাটাইয়া লয় না নিষ্ঠুর ভাবে অযথা ফাই-ফরমাস করে না ?...তাহা হইলে সে খুলী হইত। চৈত্র মাসের শেষে একদিন ফুটবল খেলিতে খেলিতে অপুর হাটুটা কি ভাবে মচ কাইয়া গিয় সে মাঠে পড়িয়া গেল। সঙ্গীর তাহাকে ধরাধরি করিয়া > 3 - অপরাজিত ംa.ക.സ.-l-l.സ്.സ്.സാ b-> আনিয়া ডেপুটীবাবুর বাসায় দিয়া গেল। নিৰ্ম্মলার মা ব্যস্ত হইয়া বাহিরের ঘরে আসিলেন, কাছে গিয়া বলিলেন —দেখি দেখি কি হয়েচে ? অপুর উজ্জল গৌরবর্ণ স্বন্দর মুখ ঘামে ও যন্ত্রণায় রাঙা হইয়া গিয়াছে, ডান পা-থান সোজা করিতে পারিতেছে না। মনিয়া চাকর নিৰ্ম্মলার মার স্লিপ লইয়৷ ডাক্তারখানায় ছুটিল। নিৰ্ম্মলা বাড়ী ছিল না, ভাইবোনদের লইয়া গাড়ী করিয়া মুন্সেফ বাবুর বাসায় বেড়াইতে গিয়াছিল। একটু পরে সরকারী ডাক্তার আসিয়া দেখিয়া শুনিয়া ঔষধের ব্যবস্থা করিয়া গেলেন। সন্ধ্যার আগে নিৰ্ম্মলা আসিল । সব শুনিয়া বাহিরের ঘরে আসিয়া বলিল—কই দেখি—বেশ হয়েচে– দস্তিবৃত্তি করার ফল হবে না ? ভারী খুসি হয়েচি আমি— অপু বলিল—যাও এখান থেকে—তোমাকে আর বক্তৃতা দিতে হবে না— নিৰ্ম্মলা কিছু না বলিয়া চলিয়া গেল। অপু মনে মনে ক্ষুণ্ণ হইয়া ভাবিল—যাক না, আর কখনো যদি কথা কই— R আধ ঘণ্টা পরেই নিৰ্ম্মল আসিয়া হাজির। কৌতুকের স্বরে বলিল—পায়ের ব্যথা ট্যাথা জানিনে, গরম জল আনতে বলে দিয়ে এলাম এমন করে সেক দেবো— লাগে তো লাগবো দুষ্টুমি করার বাহাদুরি বেরিয়ে যাবে —কমলা লেবু খাবেন একটা ?—না তাও না ? মনিয়া চাকর গরম জল আনিলে নিৰ্ম্মলা অনেকক্ষণ বসিয়া বসিয়া ব্যখার উপর সেক করিল। নিৰ্ম্মলার ভাইবোনের সব দেখিতে আসিয়া ধরিল—ও দাদা, এইবার একটা গল্প বলুন না ? অপুর মুখে গল্প শুনিতে সবাই ভালবাসে । নিৰ্ম্মলা বলিল—হঁ্যা—দাদা এখন পাশ ফিরে শুতে পারচেন না—এখন গল্প না বল্পে চলবে কেন ? চুপ, করে বসে থাকো সব—নয়তো বাড়ীর মধ্যে পাঠিয়ে . দেণব । - পরদিন সকালটা নিৰ্ম্মল আপিল না । পুরের পর আসিয়া বৈকাল পর্য্যন্ত বসিয়া নানা গল্প করিল, বই পড়িয়া শোনাইল । বাড়ীর ভিতর হইতে থালায় করিয়া