পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b・b〜 സഹാ *مہمہمہ سیمیسس٭ করিয়া লোক হাসাইতেছে—এই সব। এখানে সে বায়োস্কোপে গল্পের বই দেখিতে চায়। অখিল বাবুকে . জিজ্ঞাসা করিল বায়োস্কোপ যেখানে হয়, এখান থেকে কত দূর ? অখিলবাবুর মেসে খাইয়া অপু ইহার-উহার পরামর্শমত নানাস্থানে হাটহঁটি করিতে লাগিল, কোথাও বা থাকিবার, স্থানের জন্য, কোথাও বা ছেলে পড়াইবার স্ববিধার জন্য, কাহারও কাছে বা কলেজে বিনা বেতনে ভৰ্ত্তি হইবার যোগাযোগের জন্য। এদিকে কলেজে ভৰ্ত্তি হইবার সময়ও চলিয়া যায়, সঙ্গে যে কয়টা টাকা ছিল তাহ পকেটে লইয়া একদিন সে ভর্তি হইতে বাহির হইল। প্রেসিডেন্সি কলেজের দিকে সে ইচ্ছা করিয়াই ঘেসিল না, সেখানে সবদিকেই খরচ অত্যন্ত বেশী, মেট্রোপলিটান কলেজ গলির ভিতর, বিশেষত: পুরানো ধরণের বলিয়া সেইখানে ভর্তি হইতে ইচ্ছা হইল না। বাছিয়া বাছিয়া একটা মিশনারীদের কলেজের বাড়ী বেশ ভাল বলিয়া মনে হইলেও ভৰ্ত্তি হইবার খরচ এত বেশী যে, সেখান হইতেও হটিয়া আসিতে বাধ্য হইল। মিশনারীদের কলেজ হইতে একদল ছেলে বাহির হইয়া সিটি কলেজে ভৰ্ত্তি হইতে চলিয়াছিল, তাহদের দলে মিশিয়া গিয়া কেরাণীর নিকট হইতে কাগজ চাহিয়া লইয়া নাম লিথিয় ফেলিল। কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত বাড়ীটার গড়ন ও আকৃতি তাহার কাছে এত খারাপ ঠেকিল যে, কাগজখানি ছিড়িয়া ফেলিয়া সে বাহির হইয়া আসিয়া স্থাপ ছাড়িয়া বাচিল । তাহার মনের বৈশিষ্ট্য ও অন্তলীন সৌন্দর্য্যজ্ঞান উচ্চতর শিক্ষায়তনের যে মহনীয় ছবি স্ট্রাকিয় তাহার সম্মুখে ধরিয়াছিল, তাহার সহিত এই মান্ধাতার আমলের প্রাচীন চুণবালি-খসা দেওয়াল, বিবর্ণ জানাল দরজা, আলো-হাওয়াশূন্ত ক্লাশরুমগুলির দীনহীন চেহারা আদে থাপ খাইল না। অবশেষে রিপণ কলেজের বাড়ী তাহার কাছে বেশ ভাল ও খুব উচু মনে হইল। ভৰ্ত্তি হইয়া সে আর একটি ছাত্রের সঙ্গে ক্লাশরুমগুলি দেখিতে উপরে গিয়া ইলেকটিক পাথ খুলিয়৷ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড খুসিব সহিত তাহার নীচে খানিকক্ষণ বসিয়া রহিল, এত হাতের কাছে ইলেকট্রিক পাখা পাইয়া বার বার পাথাগুলা খুলিয়া বন্ধ করিয়া দেখিতে লাগিল। অখিলবাবুদের মেসে থাকা ও পড়াশুনা দুইয়েরই ঘোর অস্থবিধা । এক একঘরের মেজেতে তিনটা ট্রাঙ্ক, কতকগুলি জুতার বাক্স, কালি বুরুশ, তিনটি হুকা। ঘরে আর কোনো আসবাবপত্র নাই, রাত্রে আলো সবদিন জলে না। ঘর দেখিয়া মনে হয় ইহার অধিবাসিগণের জীবনে মাত্র দুইটি উদ্বেগু আছে— আপিসে চাকুরী করা ও মেসে আসিয়৷ খাওয়া ও ঘুমানো। এক একঘরে যে তিনটি বাবু থাকেন তাহার ছটার সময় আপিস হইতে আসিয়া হাতমুখ ধুইয়া যে যার বিছানায় শুইয়া পড়িয়া চুপ করিয়া তামাক টানিতে থাকেন, একটু আধটু গল্পগুজব যাও বা হয়, প্রায়ই আপিস সংক্রান্ত । তারপরেই আহারাদি সারিয়া নিদ্রা। অখিলবাবু কোথায় ছেলে পড়ান, আপিসের পর সেখানে ফিরিতে খুব দেরী হইয়া যায়। তিনিও সারাদিন খাটুনির পর মেসে অসিয়াই শুইয়া পড়েন। অপু এ রকম ঘরে এতগুলি লোকের সহিত এক বিছানায় কখনও শুইতে অভ্যস্ত নয়, রাত্রে তাহার যেন ইপি ধরে, ভাল ঘুম হয় না। অন্য কোথাও কোন রকম সুবিধা না হইলে সে যাইবে কোথায় ? তাহা ছাড়া অপুর আর এক ভাবনা মায়ের জন্য। স্কলারশিপ পাইলে সেই টাকা হইতে মাকে কিছু কিছু পাঠাইবার আশ্বাস সে আসিবার সময় দিয়া আসিয়াছে, কিন্তু কোথায় বা স্কলারশিপ, কোথায় বা কি। মার কিরূপে চলিতেছে, দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভাবনাই তাহার আরও প্রবল হইল । একদিন অখিল বাবু আপিস ੋਣ হাসিমুখে মেসে ফিরিলেন। অপুর জন্য তিনি কোথায় একট। ছেলে পড়ানো ঠিক করিয়া আসিয়াছেন, দুইবেল একটা ছোট ছেলে ও একটি মেয়েকে পড়াইতে হইবে, মাসে পনেরো টাকা । ( ক্রমশ: )