পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৭ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড --->-ബ് কিন্তু এদিকে আর চলে না। এক জায়গায় বই, এক জায়গায় বিছান। কোথায় কথন রাত কাটাইবে কিছু ঠিক নাই—ইহাতে পড়াশুনা হয় না। পরীক্ষাও নিকটবৰ্ত্তী। না খাইয়াই বা কয় দিন চলে ! অখিল বাবুর মেস হইতে ফিরিবার পথে একটা খুব বড় বাড়ী। ফটকের কাছ মোটর গাড়ী দাড়াইয় আছে । এই বাড়ীর লোকে যদি ইচ্ছা করে তবে এখনি তাহারা কলিকাতায় থাকার সকল ব্যবস্থা করিয়া দিতে পারে। সাহস করিয়৷ যদি সে বলিতে পারে, তবে হয়তো এথনি হয়। একবার সে বলিয়া দেখিবে ? কোথাও কিছু সুবিধা না হইলে তাহাকে বাধ্য হইয় পড়াশুন ছাড়িয়া দিয়া দেশে ফিরিতে তষ্টবে। এই লাইব্রেরী এত বই, বন্ধুবান্ধব, কলেজ-সব কেলিযু হয়তে মনসপোতায় গিয়া আবার পুরাতন জীবনের পুনরাবৃত্তি করিতে হইবে। পড়াশুন তাহার কাছে একটা রোমান্স, একটা অজানা বিচিত্র জগং দিনে দিনে চোখের সামনে খুলিয়া যাওয়া, ইহাকেই সে চায়, ইছাই এতদিন চাহিয়া আসিয়াছে। কলেজ হইতে বাহির হইয়া চক্রী, অর্থোপার্জন এসব কথা সে কোনদিন ভাবে নাই, তাহার মাথার মধ্যে কোনোদিন এসব সাংসারিক কথা ঢোকে নাই—সে চায় এই অজানার রোমান্স—এই বিচিত্র ভাবধারার সহিত আরও ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ। প্রাচীনদিনের জগৎ, অধুনালুপ্ত অস্তিকায় প্রাণীদল, বিশাল শূন্তের দৃষ্ঠ অদৃশ্ব গ্রহনক্ষত্র রঞ্জি, ফরাসী-বিদ্রোহ-নানা কথা। এই সব ছাড়িয়া শালগ্রাম হাতে মনসাপোতায় বাড়ী বাড়ী ঠাকুর পূজা ... ! অপুর মনে হইল এই রকমই বড় বাড়ী আছে লীলাদের কলিকাতারই কোন জায়গায়। অনেক দিন আগে লীলা ভহিকে বলিয়াছিল, কলিকাতায় তাহদের বাড়ীতে নকিয়া পড়িতে। সে ঠিকানা জানে না কোথায় গ্ৰীলদের বাড়ী, কেই বা এখানে তাহাকে বলিয়া দিবে, তাহা ছাড়া সে সব আজ ছয় সাত বছরের কথা হইয় গেল, এতদিন কি আর লীলা তার কথা মনে রাথিয়াছে ? কোন কালে ভুলিয়া গিয়াছে। ज५ डविन-चाब किन बाम्रण७ कि आब आमि সেখানে যেতে পারতাম, না গিয়ে কিছু বলতে-সে আমার কাজ নয়—তার ওপর এই অবস্থায় ! দূর তা কখনো হয় ? তা ছাড়া লীলার বিয়ে-থাওয়া হয়ে এতদিন সে শ্বশুরবাড়ী গিয়েচে চলে সে সব কি আর আজকের কথা ? ক্লাসে জানকী একদিন একটা স্থবিধার কথা বলিল । সে ঝামাপুকুরে কোন ঠাকুরবাড়ীতে রাত্রে খায়। সকালে কোথায় ছেলে পড়াইয় একবেল উহাদের সেখানে খায়। সম্প্রতি সে বোনের বিবাহে বাড়ী যাইতেছে, ফিরিয়া না আসা পর্য্যস্ত অপু রাত্রে ঠাকুরবাড়ীতে তাহার বদলে থাইতে পারে। বাড়ী যাইবার পূৰ্ব্বে ঠাকুরবাড়ীর সেবাইতকে বলিয়া কহিয়৷ সে সব ব্যবস্থা করিয়া যাইবে এখন। অপু রাজি আছে ? হাতে স্বৰ্গ পাওয়া নিতান্ত গল্প কথা নয় তাহা হইলে । ঠাকুরবাড়ীর খাওয়া নিতান্ত মন্দ নয়, অপুর কাছে তাহা খুব ভাল লাগে। আলোচলের ভাত, টক্‌, কোনো কোনো দিন ভোগের পায়স পাওয়া যায়, তবে মাছ-মাংসের সম্পর্ক নাই, নিরামিষ । কিন্তু এ তো আর দুবেল নয়, শুধু রাত্রে। দিনমানটাতে বড় কষ্ট হয়। দু পয়সার মুড়ি ও কলের জল । তবুও তে। পেটট ভরে । কলেজ হইতে বাহির হইয়া বৈকালে তাহার এত ক্ষুধা পায়, যে গা ঝিম্ ঝিম্ করে, পেটে যেন এক ঝাক বোলত হুল ফুটাইতেছে এমন মনে হয় । পয়সা জুটাইতে পারিলে অপু এ সময়টা পথের ধারের দোকান হইতে এক পয়সা ছোলাভাজা কিনিয় २{{क्ष । সবদিন পয়সা থাকে না, সেদিন সন্ধ্যার পরেই ঠাকুরবাড়ী চলিয়া যায়, কিন্তু ঠাকুরের জুরিতি শেষ না হওয়া পৰ্য্যস্ত সেখানে খাইতে দিবার নিয়ম নাই—তাও একবার নয়, দুবার দুটি ঠাকুরের আরতি । আরতির কোন নিদিষ্ট সময় নাই, সেবাইত ঠাকুরের মজ্জি ও সুবিধামত রাত আটটাতেও হয়, ন’টাতেও হয়, দশটাতেও হয়, আবার এক একদিন সন্ধ্যার পরেই হয়। কলেজে যাইতে সেদিন মুরারি বলিল—সি, সি, বি’র ক্লাসে কেউ যেও নী—আমরা সব ষ্ট্রাইক্‌ করেচি। অপু