পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] കുങ്കം ബാ সংজ্ঞানে তাহার পিতাকে হয়ত খুবই ভালবাসে এবং তাহার অসুখের জন্য সে হয়ত বাস্তবিক চিন্তিতও হইয়াছে, কিন্তু তাহার নিজ্ঞানে সে পিতার মৃত্যুকামনা পোষণ করিতেছে। পিতার মৃত্যু হইলে সে বিষয় ভোগ করিতে পারে, এই ইচ্ছার বশেই সংজ্ঞানের চিন্তা পর পর উঠিয়াছে। এইজন্যই কোকিলের ডাকে তাহার অন্য কোনো কথা মনে না পড়িয়া এমন কথা মনে পডিয়াছে, যাহার সহিত এক মারাত্মক রোগের সম্বন্ধ বৰ্ত্তমান । এইজন্যই এমন এক লোকেরও কথা মনে পড়িয়াছে যে পৈতৃক বিষয় নষ্ট করিতেছে। সেই ব্যক্তি অমুখে পড়িবে এই ধারণা মনে উঠিবার কারণ এই যে, তাহা ন হইলে পিতার অমুখের কথা আসা সহজ হয় না। সামান্য চিস্তার ধারা হইতে নিজ্ঞর্শনবিং কি ভয়ানক সিদ্ধাস্ত করিলেন । প্রথম-দৃষ্টিতে নিজ্ঞানবিদের এইরূপ সিদ্ধান্তকে কষ্টকল্পনা মনে হইতে পারে । কিন্তু যদি পরীক্ষ্যমানের বিভিন্ন সময়ের চিন্তাধারা হইতে বার বার এই একই অতুমান সম্ভবপর হয় তবে আর নিজ্ঞর্গনস্থিত পিতৃবিদ্বেষকে অস্বীকার করা চলে না। নিজ্ঞর্ণনে এইরূপ রুদ্ধ ইচ্ছা থাকিলে নানা ব্যবহারেও তাহা প্রকাশ পায়। এইরূপ রুদ্ধ ইচ্ছা ছদ্মবেশে স্বপ্নেও নানা আকারে দেখা দেয়। মনোবিদ্যার সাফল্য অন্তর্দশন, ব্যবহার-পর্য্যবেক্ষণ ও অবাধ-ভাবানুষঙ্গক্রমের যথাযথ প্রয়োগে সংজ্ঞান ও নিজ্ঞান উভয় মনের তথ্যসমূহ নির্ণীত হয়। অল্পদিন মাত্র নিজ্ঞান মনোবিদ্যার অনুশীলন হইতেছে, কিন্তু ইতিমধ্যেই নিজ্ঞানের যে-সমস্ত তথ্য আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহাতে চমৎকৃত হইতে হয়। ংজ্ঞান মনের উপর নিজ্ঞানের প্রভাব অতিশয় প্রবল । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের মনোবৃত্তি নিজ্ঞানের দ্বারাই চালিত হয় । বিভিন্ন ব্যক্তির চরিত্রের বিশেষ বিশেয দিক কেন পুষ্টিলাভ করে, নিজ্ঞানবিং তাহার ‘8&– (t SGS) میسر همسایه কারণ দেখাইতে পারেন। সকলেই জানেন প্রাত্যহিক জীবনে আমরা নিজ নিজ স্বভাববশে চলিয়া থাকি । অনেকে মনে করেন, এই স্বভাব জন্মগত ও অপরিবর্তনীয়। ‘স্বভাব যায় না ম’লে।’ নিজ্ঞর্ণনবিং দেখাইয়াছেন, যাহাকে আমরা স্বভাব বলি তাহার অধিকাংশই জন্মগত নহে। নিজ্ঞান মনই তাহার প্রধান নিয়স্তা। শৈশবের আবেষ্টনে নিজ্ঞর্ণন মন গড়িয়া উঠে এবং তাহার গতি কোন দিকে যাইবে শৈশবে তাহা এক প্রকার স্থির হইয়া যায়। কে কবি হইবে, কে চিকিৎসক হইবে, কে চোর হইবে, কে সাধু হইবে, তাহা অনেকটা শৈশব জীবনের পারিপাশ্বিক ঘটনার উপর নির্ভর করে । মিজ্ঞানবিং বলেন, শিশুর জীবন যথাযথ নিয়ন্ত্রিত হইলে ভবিষ্য জীবন সুখের হয়। নিজ্ঞর্ণন মনের গোলমালে মানসিক রোগ হষ্টি হইতে পারে এবং চরিত্রের পূর্ণত লাভ হয় না । নিজ্ঞানের পরিণতির ব্যাঘাতই জীবনে অসুখী হইবার এক প্রধান কারণ ! মানুষ সাধারণতঃ বহির্জগতের উপর নিজ প্রভাব বিস্তার করিয়া সুখভোগ করিবার চেষ্ট করে । সমস্ত জড়বিজ্ঞান মাতুষের এই চেষ্টার সহায়ক । হিন্দুশাস্ত্রের উপদেশ, বহির্বস্তুতে স্থায়ী মুখ নাই, মনঃসংযমেই প্রকৃত সুখলাভ হয়। স্থিরপ্রজ্ঞ ব্যক্তি সৰ্ব্বাবস্থায় মুখী । মনকে শাসনে রাখিবার জন্য নানা আচার, অনুষ্ঠান ও কৃচ্ছতাসাধনের উপদেশ দেওয়া হয়। নিজ্ঞান নিরাকরণ মুখশাস্তি পাইবার অন্যতম পথ । নিজ্ঞানবিং ভরসা দিতেছেন, রুদ্ধ প্রবৃত্তিগুলি প্রশমিত হইলে মনের দ্বন্দ্ব মিটিয়া সমস্ত দুঃখ অপনীত হয় । শোক-তাপ-দগ্ধ শ্রাস্ত-ক্লান্ত বিক্ষুব্ধ মনের শাস্তির উপায় এতদিন ধর্শের উপদেশের মধ্যে নিহিত ছিল । জড়বিজ্ঞানবিদকে এখানে ধৰ্ম্মোপদেষ্টার নিকট পরাজয় স্বীকার করিতে হইয়াছে। কিন্তু আজ মনোবিদ্যা মানুষকে আশ্বাস ও শাস্তির বাণী শুনাইয়া বিজ্ঞানের মর্য্যাদা স্বপ্রতিষ্ঠিত করিতে অগ্রসর হইয়াছে।