পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা } পুনশ্চ రి(సి --محمحیم سی তার মুক্তিসাধনার স্বপ্নের মধ্যে, বনলতা এসে দাড়াল অদ্ভুতভাবে । মুকুন্দপুরে বনলতার আশ্রয় বলে কিছু নেই, সহায়ও না । ও আশা করচে, আমি তাকে আশ্রয় দেব, আর তাকে পূরে একদিন গরুর গাড়ীর ধাক্কা সহ করে মুকুন্দপুরে যেতে হবে না। বনলতা আজও জানে, আমি মাম্য হয়েছি, অর্থাৎ আমার টাকাকড়ির কোনো অভাব নেই। মানুষ বলতে ও এইটুকুই বোঝে। ও জানে না,-আজও ভারতবর্ষের পা থেকে পরাধীনতার বেড়ী খসে পড়েনি, আজও একদল ছেলে দেশের বনে-জঙ্গলে লুকিয়ে, লোকালয় থেকে আত্মগোপন করে, নিরাহারে অনিদ্রায় ভারতের মুক্তির স্বপ্ন দেখচে” বনলতাকে কথাট। স্পষ্ট করেই বলতে হ’ল । কিছুক্ষণ কোনো কথাই তার মুখে এল না, নিরর্থক নিম্প্রভ দু’টি চোখ দিয়ে আমার মুখ চেয়ে রইলো। খানিক পরে বললে,—ত হ’লে কোথায় যাব ? সেখানে আমার কেউ নেই, একজনও না, আসবার সময় দাদা বাড়ী বিক্ৰী করে এসেচেন...তা’ছাড়া, তুমি সেখানকার মামুযগুলোকে চেনে না, তোমাকে কি করে বোঝাব— বোঝানোর কোনো দরকার ছিল না । কি ? সমস্ত রাত্রি সমুদ্রের ধারে বসে কাটালাম। জ্যোংক্ষাময় বালুবেলা বনলতার শাদা থানের মত অদ্ভুত । পৃথিবীতে আমার চেয়ে যোগ্য ব্যক্তির সঙ্গে বনলতার পরিচয় থাকলে আজ সে বেঁচে যেত, কিন্তু আমিই এসে দাড়ালাম তার পথে ! বনলতাকে আমি ভুলেছিলাম...কিন্তু এতদিন পরে এ কি কৌতুক ! বনলতার মত মেয়ে আমার পথে বিড়ম্বন ছাড়া আর কিছু নয় ; ওর নিজের কোন সত্তা নেই, নিজের ওপর ও নির্ভর করতে পারে না। আমিও ত’ আজি পৰ্য্যন্ত একটি সঙ্কীর্ণ ঘরের মধ্যে নিজেকে বন্দী করতে পারলাম ন-কাটাবন মাড়িয়ে, অন্ধকারের মধ্যে শুধু পথ চলে যাচ্চি। আমার দেশের মাটি আজও নিজের হয়নি! স্বরেশ্বর যদি শোনে একটা মেয়ের নিরাশ্রয়তার ব্যথা কিন্তু উপায় দূর করবার জন্যে আমি.ত হ’লে আমায় মেরে ফেলবে । ওর কাছে হাজার বনলতার দুঃখের চেয়ে একটা শপথ ঢের বড়। না, সে হয় না । ট্রেনে উঠে বসলাম । তখনও বনলতাকে কিছু বলিনি। ঘণ্টা দুই পরে জিজ্ঞাসা করলে,—কোথায়, চলেচি আমরা । -- কলকাতায় । বনলতা ছোট মেয়ের মত খুলীতে উজ্জল হয়ে উঠলো। বললে,—কলকাতায় এখনও ট্রামগাড়ী চলে ? আমাদের সেই বাড়ীটায় এখন কায়া থাকে ? কোথায় গিয়ে উঠব আমরা ? বললাম,—সে. কলকাতা আজ অনেকখানি বদলে গেছে, চিনতেই পারবে না। কিন্তু সেই পুরানো বাড়ীতে আমরা উঠবে না। তোমাকে অবলআশ্রমে তুলে দিয়ে কালই আমি পালাব। নইলে পুলিশে ধরা পড়বার সম্ভাবনা । বনলতা বিস্ময়ে চুপ হয়ে গেল। —কেন সেখানে কেন ? অবলt-আশ্ৰম কি,— তুমিই বা,- “ —অন্য উপায় নেই। আজ পাচ বছর ধরে যে, সুনাম কিনেচি, তাতে কোনো বে-সরকারী অাপিসেও. চাকরি দেবে না, বিদ্যে-বুদ্ধিই বা এমন কি বেশী ! অবলআশ্রমে ভয় পাবার কিছু নেই, সেখানে থাকে শুধু মেয়ের —সবাই তোমার মত। তার স্বতে কাটে, জামা তৈরী করে, আরও অনেক কিছু করে। সেই তোমার পথ । আমার জন্যে ভেব না, যেখানেই থাকি খবর পাব । অত লোকের মধ্যেও বনলতার চোখ ভিজে গেল। তাড়াতাড়ি মুখ ফিরিয়ে বাইরে গাছপালার দিকে c5८म्न ब्र३न । পরের দিন কলকাতা ছাড়া সম্ভব হয়নি। জীবনের শ্ৰাদ্ধ-শাস্তি শেষ করেই এলাম। অবলা-আশ্রমে জুলুর, স্থান হ’বার কথা নয়, শেয়ালদার হাটে জুলু একদিন. বিক্রী হয়ে গেল। দাড়িওয়ালা লোকটার আনুগত্য স্বীকার করতে জুলু অনেক আপত্তি করেছিল কিন্তু, আমিই-ব তাকে নিয়ে কি করতাম !