পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩৪ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড


س----سیداسی حہیه حیای عیسه

করে বসে থাকতে পার, কিন্তু লোকের কথায় কথায় এদিকে ষে আমার কান দুটো ঝাঝরা হয়ে গেল।” রামলোচন অপ্রতিভমুখে দাড়াইয়া রহিলেন। বজেশ্বরী স্বামীর দিকে একটু অগ্রসর হইয়া গিয়া বলিলেন, “সেদিন যে রামনগরের ছেলেটার কথা বলছিলে, তার কি হ’ল ? সেই কৃষ্ণবিহারী বাবুর ছেলে ?” রামলোচন ক্ষুঃস্বরে বলিলেন, “তারা যে টাকা চায় ঢের । ছেলে ভাল।”

  • ছেলে ভাল ?” “হ্যা—বেশ ভাল।” “খু-ব লেখাপড়া জানে ?” “জানে না ? একেবারে বি-এ পাশ ।” "বি-এ পাশ? সে বুঝি খুব-ই পড়াশোনা ?” “আরে বাপরে ! বলে কি ? বি-এ পাশ, সে কি সোজা কথা ! একটা মানুষের মতন মানুষ ! জ্ঞানবুদ্ধির সাগর—যাকে বলে শিক্ষিত! কেষ্ট-বি একটা কিছু হ’ল বলে ।”

“তাহলে তুমি সেই ছেলেটির জন্যই চেষ্টা কর । টাকা খরচের ভয়ে পেছপা হয়ে না যেন । আমাদের আর ত ছেলেমেয়ে নেই যে ভাব বে।” বলিয়া মুহূৰ্ত্তকাল নীরব থাকিয়া ব্ৰজেশ্বরী বলিলেন, “হ্যাগ, রামনগর এখান থেকে কতদূর ?” রামলোচন মনে মনে হিসাব করিয়া বলিলেন, “মাইল চোদ পনের হবে, এখান থেকে সোজা দক্ষিণে । জায়গাটাও মন্দ নয়—হাটবাজার, পোষ্ট আপিস, এ সবই আছে। আর একটা মস্ত স্থবিধা রেল ষ্টেশন বেশী দূরে নয় ।” ব্ৰজেশ্বরী দক্ষিণ হস্তুটা ঈষৎ আন্দোলিত করিয়া বলিলেন, “এই যেমন আমাদের মদনপুর ইষ্টিশান ।” বেলা শেষ হইয়া আসিল । অপরাধু-সূর্ধ্যের স্নিস্কোজল কিরণ গাছের পাতায় পাতায় ঝলমল করিয়া উঠিল। মাথার উপর খও ধূসর মেঘগুলি উড়িয়া উড়িয়া কোন অজানা দেশে চলিতেছিল । রামলোচন বৈঠকখানা-ঘরে একটা তক্তপোষের উপর চিন্তিত মুখে বসিয়া আছেন। পাশ্বে একটা আলো ক্ষীণভাবে জলিতেছিল। একটু পূৰ্ব্বে এক পশলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। গাছপালার ফাকে ফঁাকে কৃষ্ণ দ্বিতীয়ার চন্দ্রালোক তখন সিক্ত ধরণীর বক্ষে ছড়াইয়া পড়িতে আরম্ভ করিয়াছে। হঠাৎ বাহিরে খড়মের খটখট শব্দে মুখ তুলিয়া চাহিয়া রামলোচন ব্যস্ততার সহিত বলিয়া উঠিলেন, “আস্বন, আমুন। বাড়ী ফিরলেন কখন ?” শিরোমণি মহাশয় রামলোচনের সম্মুখে আসন গ্রহণ করিয়া বলিলেন, “এই দুপুর-বেল তখন প্রায় পুরই হবে। উ—জলকাদায় রোদুরে টো টো করে ঘুরে দেহটা বড়ই ক্লাস্ত হয়ে পড়েছে। মনে করলেম, আজ আর কোথাও বেরব না—” “তারপর কেমন হ’ল এবার ?” “আরে ভায়া ! সে কথা শুনে আর কাজ নেই । আর কি সে কাল আছে ? গুরু ব্রাহ্মণ বলে লোকের সে ভক্তিই নেই। কলি ! ঘোর কলি ! এই ত সেদিন এক শিষ্যবাড়ীতে একজন আমাকে বলে বসলে ‘স্বার্থের উপর যাদের এত আকর্ষণ, তারা কি অন্তকে ত্যাগের পথে নিয়ে যেতে পারে ? শুনে আমি ত অবাক । তোমাদের সব ভাল ?” রামলোচন চুলের মধ্যে বাম হন্তের অঙ্গুলি চালনা করিতে করিতে বলিলেন, “এক রকম আর কি ” শিরোমণি মহাশয় রামলোচনের চিস্তাক্লিষ্ট মুখখানার পানে চাহিয়া বলিলেন, “তারপর, মেয়ের বিয়ের কতদূর কি কবুলে ?” “সেই ত হয়েছে এখন মস্ত ভাবনা । ঠিক কিছুই হয়নি এ পর্য্যন্ত ।” “আরে বাপরে বল কি ? এখনও চুপ করে বসে আছ! দেখতে দেখতে মেয়ের বয়সও ত কম হ’ল না। যত সত্বর হয় একটা ঠিক করে ফেল। বড় মেয়ে,—আর কি ঘরে রাখা উচিত ? এতে প্রভাবায় ত হয়ই, তাছাড়া —যাক, এখন যাতে শীগগিরই বিয়েটা হয়ে যায়, সেই চেষ্টা দেখ ।” রামলোচন গলদঘর্শ্ব হইয়া উঠিলেন। র্তাহার