পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পারে। রামায়ণ এবং মহাভারত ত তাহার জিহবাগ্রে। একদিন সে আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, “আচ্ছা দা’ঠাকুর, তুমি ত লেখাপড়া জান, শুবোত্রার অগ্নিপরীক্ষের পর রামায়ণে কি হ’ল বল দিকিনি।” আমি জবাব দিতে পারি নাই, সেই হইতেই আমার বিদ্যাবুদ্ধির সত্যতা সম্বন্ধে কালীচরণের একটা সন্দেহ জন্মিয় গেছে । কালীচরণ কহিল, “তা সেকথা সত্যি দা’ঠাকুর, সদার আমাদের সে গুণটো আছে । দিয়ে দাও, দা’ঠাকুর, পাচ সের চাল, ছোড়া বেঁচে থাকুলে তোমার পয়স মারা স্বাবে ন৷ ” সহদেবের কাছে, আমার হিসাব মতন, আঠারে। টীক। সাড়ে পাচ আন। পা ওনা হইয়াছিল। খুচরা পয়সা কয়ট ছাড়িয়া দিয়া, তাহার নামে আঠারে। টাকার জন্য নালিশ করিব স্থির করিয়া রাখিয়াছিলাম । কহিলাম, * ‘শালার আপিসে’ ত প্রত্যেক মাসেই তোমার পাচ পাচট টাকা ফাইন করে সহদেব,—তুমি তাহ’লে নগদ দাম দিয়ে চাল কিনবে কবে ? পাচ পের চাল তোমায় এখন ধারে দিতে পারব না, বড়-জোর আধ সের পয্যস্ত পারি, যদি রাজী হ ৪ ত নিয়ে যাও। তবে পয়সাটা দয়া করে একটু শীগগির দিও।” সহদেবের বহির্গমনোদ্যত চোখ দুইটা আর কোটরের ভিতর থাকিতে চাহিল না । স্বাভাবিক তিনটার স্থানে দুইপাটির বত্ৰিশটা হলুদ রংযের দাতই কালে মোট। ঠোট দ্যক্টট অতিক্রম করিয়। খেন আমাকে আক্রমণ করিতে হাসিল । সে কহিল, “ওঃ কি মস্ত বড় বাবু রে ; একট। ভদ্দোর সস্তানকে পাচ সের চাল দিয়ে বিশ্বেস করতে পারেন না, উনি আবার অন্নপূল্লে| — আচ্ছা, দা , দাও, আধ সেরই দাও, আমিও দেখে নেব তোমার দোকান এখানে কদিন থাকে,- হঁ্যা কববাঃ, সহদেব সে ছেলেই নয়—” সহদেব আমায় প্রায়ই ভয় দেখাইজ, সে দেখিয়া লইবে আমি কেমন করিয়। এ পাড়ায় থাকি । তাহার এবং আরও অনেকের আস্ফালন-সত্ত্বেও এখানে টিকিয়া আছি আজ পাচ বৎসর। অন্তরে বাহিরে Գ Տ Գ চাল ওজন করিয়া দিয়া বলিলাম, “আধ সের চালের দাম আট পয়সু, সহদেব। দশ টাকা হিসাবে মণ দিতে হবে, দাম বেড়ে গিয়েছে।” “আচ্ছা, দাও দাও,—এ মাসের মাইনে পেলে কোন শাল আর তোমার পয়স ফেলে রাখে । বলিয়। সে চলিয়া গেল । এই চালই সে অন্যত্র ছয় টাকায় পাইতে পারিত । অামি ধরিলাম চার টাক। বেশী, এক টাক। তাহার রক্তচক্ষুর পেসারত, এক টাক। তাহার ধারের স্বদ, দুই টাকা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীর মূল্য । এই রেটেই সকলের কাছ হইতে লইয়! থাকি ; যদিও অপরের বেলায় রক্তচক্ষুট বাদ যায় । এম্-এ পাশের খরচ উঠিয় গেলে সকল জিনিষের দর সুবিধ করিয়া দিব, নগদ পয়সায় লইলে আরও কিছু সস্তায় পাইবে । বেল বাড়িতে লাগিল । ছুডোর মিস্ত্রী, গাড়োয়ান, মোটরগাড়ীর ড্রাইভার, ঘরামী, ডাকের কুলী, মজুর, মেছুনী, ঝি, ভিখারী প্রত্যেকেই আপন আপন কাজে বাহির হইয়া গেল । কিছু দূরের ডাক্তারবাড়ীর মহানবাবুর ছেলে কুমার আসিয়া বলিল, “প্রসাদবাবু, বাবা বললেন যে, আমাদের একট। চাকর কাল পালিয়ে গিয়েছে কি না, একটা ঠিকে ঝি যদি আপনি জোগাড় করে দিতে পারেন, তাহ’লে খুব ভাল হয়।” জবাব - *3-|rtEgکت؟» ,frzris এলোকেশীকে ঝির সর্দারণী বলিয়াই জানি । সকালবেল কলতলায় স্নান করিতে আসিয়া একবার দোকানের ঝাপটার কাছে দাড়ায়, চট্‌ করিয়া নারিকেল তেলের কলসীর ভিতর হইতে পলাটা আচমকা তুলিয়। লইয়া, বা হাতের চেটোয় তেল ঢালিয় লয়। মাথার মাঝখানটায় একট। প্রকাও টাক পড়িম। গিয়াছে, ঠিক সেইখানে সমস্তটা তেল ঢালিয়া দিয়া, মাথাট। অদ্ভুতভাবে চাপড়াইতে চাপড়াইতে বলে, “শরীলট বড়ই কাহিল হ’য়ে পড়েছে, দ ঠাকুর ।” আড়চোখে তাহার তেল লওয়ার বহর দেখি, চালের দাম ধরি, ছয় টাকার জায়গায় এগারো টাকা, সরিযার ডেলের দাম ধরি সাড়ে ন’ আনার জায়গায় বারো অান ।