পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—ঢাকায় অজিতনাথ ভট্টাচার্য্যের মৃত্যু ዓŒ« --സസ്സഹസaസ്സ • ম্যাজিষ্ট্রেটু যে তদন্ত করিতেছেন, তাহার ফলও এখনও বাহির হয় নাই । - আমরা যে বৃত্তাস্ত পাইয়াছি, তাহার কোন কোন ংশ প্রকাশে বোধ করি কোন বাধা নাই। “গত সোমবার, ২১শে জুলাই ইউনিভাসিটিতে ও ঢাকা ইণ্টারমীডিয়েট কলেজের সামনে ছাত্রদের পিকেটিং হচ্ছিল। সেই সময় ঢাকার পূর্ববিভাগের স্বপারিন্টেণ্ডিং এঞ্জিনীয়ার নাকি পুলিসে খবর দেন, যে, ছেলের গাছপালা ভেঙে ফরেস্ট ল' ( অরণ্য-সম্পৰ্কীয় আইন ) ভঙ্গ করছে। পুলিস সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট ইউরোপীয়ান সাজেণ্ট এবং হিন্দুস্থানী ও পাঠান কন্‌ষ্টেবল নিয়ে উপস্থিত হন । তারা এলে, পুলিস পিকেটারদের কি করে দেখবার জন্য ইউনিভাসিটির বহু ছাত্র ইউনিভার্সিটির হাতায় জড় হয় । তাতে পুলিস্ সাহেব ক্রাউড ডিস্পাস ( জনতাকে বিতাড়িত করবার হুকুম দেয়. יין আমাদের পত্ৰলেখক ঘটনাটির উৎপত্তি লিখিয়াছেন, তাহাতে যদি কোন ভ্ৰম না থাকে, তাহা হইলে লোকের সহজেই মনে হইতে পারে, ঢাকা শহর, বিশেষ করিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অরণ্য সমাকীর্ণ। একদিন এই ঘটনাটি সম্বন্ধে ঢাকার স্থানবিশেষে আলোচনা চলিতেছিল। একজন জিজ্ঞাসা করিলেন, “ঢাকায় অরণ্য কোথায় ?” তাহার উত্তরে আলোচনা স্থলে উপস্থিত একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি বলিলেন, “দেশভরাই তে অরণ্য, আর আমরা অরণ্যে রোদন করছি!” যাহা হউক, শুনা যাইতেছে, যে, পুলিস ও না কি এখন আবিষ্কার করিয়াছে, যে, ঢাকায় অরণ্য-অাইন থাটে না । সম্যক গবেষণা করিলে সম্ভবতঃ কালক্রমে ইহাও আবিষ্কৃত হইতে পরিবে, যে, ঢাকা শহরে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অরণ্য নাই । অজিতনাথের মৃত্যু ও দাহ কি প্রকারে হইল, তাহার বৃত্তান্ত আমাদের প্রাপ্ত পত্রে এইরূপ আছে : প্রহারের চোটে “তার সংজ্ঞ লুপ্ত হয়, রক্তবমন হয়,” কয়েকজন ডাক্তার তার চিকিৎসা করেন । “সিবিলসার্জন তাকে হাসপাতালে পাঠাতে বলেন, তার ইণ্টাৰ্ণ্যাল হেমোরেজ হচ্ছিল, কনকাখন অব দি ব্রেন হয়েছিল, তার যেরূপ মাথায় অপারেশ্বন করা দরকার। বেলা ১ টার সময় সে মার থায় ; রাত্রি ১০টার সময় হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে পথে তার মৃত্যু হয়। গত হিন্দু-মুসলমান দাদুর সময় তাদের গ্রামের বাড়ী পুড়ে গেছে, দ্রব্যাদি লুট হয়েছে । এখন ছেলেটি মারা গেল। ঢাকার হিন্দুমুসলমান সমস্ত ছাত্র এই নির্দোষী বলি বালককে দাহ করতে শ্মশানঘাটে যাবে ব’লে প্রস্তুত হয়। ম্যাজিষ্ট্রেট শব নিয়ে প্রোসেশ্বন করতে দেন নি। তখন ছেলেটির ম। ভাই বোন বলেন, ছেলেটির জন্য এত লোক যখন শোক কবৃছে, তখন তার তর্পণ ও সংকার হয়ে গেছে ; র্তার নিহত বালকের সৎকার পুলিসের সাহায্যে করবেন না। র্তার হাসপাতালে শব রেথে গ্রামে চ’লে গেছেন । পুলিস ব্রাহ্মণ কন্‌ষ্টেবল দিয়ে শব দাহ করিয়েছে ।” 爵 ● “এই ছাত্রের অপঘাত মৃত্যুর জন্য ইউনিভার্সিটি এক দিন বন্ধ করা হয়। গবন্মে ণ্ট স্কুল কলেজ ছাড়া আর সব স্কুল কলেজের ছাত্রের হড়তাল করে। ইউনিভাসিটির হিন্দু মুসলমান ছাত্রর একমত হ’য়ে সাত দিন ক্লাসে গিয়ে পড়াশুনা করা স্থগিত রাখবে স্থির করেছে।” “নিহত ছেলেটির মৃত্যুর পর শবপরীক্ষায় না কি দেখা গেছে, যে, লাঠির চোটে মাথার খুলি ফেটে খুলে গিয়েছিল যদিও বাহিরের চামড়া ফাটে নি ; চামড়া কাটবামাত্র খুলিট খুলে পড়ে ; মস্তিষ্কে পেটে রক্তপাত হয়েছিল । ইউনিভার্সিটির ছাত্রেরা এই অপরিচিত ছাত্রটির যে সেবাশুশ্ৰুষা করেছে, তা চমৎকার । সকলে নিজের ভাইয়ের মতন তো তার মাথায় আইস-ব্যাগ দিয়েইছে এবং বরফ কিনে এনেছে, অধিকন্তু বমি হাতে ক’রে ধ’রে পরিষ্কার করেছে এবং মৃত্যুর পর পর্য্যস্ত তার সঙ্গে থেকেছে।” এই মৰ্ম্মাস্তিক শোকাবহ ঘটনাটির বুভাস্তের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান ছাত্রদের ঐকমত্য হইতে মনে কিছু সম্বন৷ পাওয়া যায়। [ ২৩শে শ্রাবণ লিখিত । ]