পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ছেলেধরা Գ:ՏՖ জিগীষা দেবী ভ্ৰকুটি করে বললেন—‘ক্টডিয়ট ! স্যাকরার বানি নয়, আমার মুখের বাণী। যাও, সবুজ ফাউনটেন পেনটা আর এক শিট কাগজ নিয়ে এস।” স্বষেণবাবু কাগজ কলম আনলেন, জিগীষা দেবী খচখচ ক’রে দু-পাত বাণী লিখলেন। ভাষাটা ঠিক মনে নেই, তবে তাতে অনেক উচুদরের কথা ছিল, যথা— প্রবীণের রক্ত, তরুণের খুন, ধনিকের রুধির, শ্রমিকের লেহু। শেষটা হচ্চে—আশ্রম গ’ড়ে তোলা অতি সহজ কাজ ; হে ছেলেরা, তোমরা লাখ টাকা যোগাড় কর ; আপাতত আমাকে হাজার-দশেক এনে দাও, তাতেই কাজ আরম্ভ হতে পারবে । আমরা বাণী পেয়ে কৃতাৰ্থ হয়ে নীচে নেমে এলুম। হঠাৎ স্বষেণবাবু পিছন থেকে চুপি চুপি ডাকলেন— ‘ও মশায়, বলি শুনচেন ? একবার আমার ঘরে আস্থান।’ ইনিও একটা বাণী দিতে চান না-কি ? গেলুম সঙ্গে সঙ্গে স্বষেণবাবুর খাস কামরাটি নীচের তলায় । ছোট কুঠরি, আসবাব বেশী নেই, দেওয়ালে কতকগুলো বাঘ-সিঙ্গির ছবি, ইংরিজী পত্রিকা থেকে কাট । তক্তাপোযের ওপর ময়লা বিছানা পাতা, তার ওপর একটা জরাজীর্ণ বন্দুক, এক শিশি তেল, আর খানিকট স্বরকির গুড়ে । স্বষেণবাবু বোধ হয় বন্দুকটার মরচে তুলছিলেন । বললুম—‘এটি আপনার বৈঠকখানা ? বাং, খাসা বন্দুকটি ত। আপনি বুঝি রোজ ওতে তেল লাগান ? মুষেণবাবু খুশী হ’য়ে বললেন—‘লাগাতেই হবে, নইলে দরকারের সময় আটকে যাবে যে। বলছিলুম কি— আপনার কানাই ঘোষালকে চেনেন ?—যে ছোকরা নাগাড় পচাত্তর ঘণ্টা লালদিঘিতে সাতার দিয়েছিল ? সে আমার খুড়তুতো ভাই হয়। আমি বললুম—‘বটে ? স্বষেণবাবু সগৰ্ব্বে বললেন—‘ই। বলাই বাড়য্যেকে চেনেন ? –ষ্ণুে ছোকরা সেদিন গড়ের মাঠে তিনটে গোরাকে ছাতী-পেটা করেছিল ? আমার আপন মাসতুতো ভাই।’ বললুম-বিলেন কি ! আপনারা দেখচি বীরের مناس-- Soe বংশ। বড় স্বর্থী হলুম। আপনার আর কিছু বাণী নেই ত? আচ্ছা, বন্ধন তা হ’লে, নমস্কার।’ মুষেণবাবু হঠাৎ মুখখানি করুণ-পানী ক’রে বললেন—“পাচটা টাকা হবে কি ? মাসকাবার হ’লেই শোধ ক’রে দেব ।’ - বাটলো একট। আধুলি ফেলে দিলে। আমরা রাস্তায় বেরিয়ে এলুম। লেদের বললুম–‘আর ভাবনা কি, কেল্লা মার @ দিয়া। এখন চটুপটু লাখ টাকা তুলে ফেল, নিদেনে দশ হাজার।’ কেউ উত্তর দিলে নৃ, চুপচাপ একে একে নিজের নিজের ঘরমুখে হ'ল। কাত্তিক স্নার আমি বঁটলোর সঙ্গে তার বাড়ি এলুম। বাটলোর বাপ নেই, নিজেই কত্তা, আর তার মা আমাকে খুব শ্রদ্ধা করেন। বাড়িতে অন্নছত্র লেগেই আছে, যতদিন খুশি থাকে, আদরষত্বের ক্রটি হবে না । ৯ বাটলোর পেটে কথা থাকে না, এসেই তার বোন তুবড়িকে সমস্ত ব্যাপার জানালে। মেয়েটা বিষম ফাজিল। তার ছোট খুবড়িও ফেলা যায় না, একটি খুদে পিপড়ে বিশেষ । সকালবেলা তুবড়ি বললে—‘চাটুয্যে মশায়, ছেলেধরার। আপনাদের ছেড়ে দিলে যে বড় ?” বললুম—‘ছেড়ে আর দিয়েচে কই, বাড়ি না পৌছলে ভরসা পাচ্চি না ।” খুবড়ি কাত্তিকের সামনে হাত নেড়ে বললে—‘চিনি দেবে থাবা থাবা, থলির ভেতর পুরবে বাবা—” তুবড়ি বললে—“যা যা এখন বিরক্ত করিস না, বেচারা আগে তেল মেখে ঠাণ্ড হোক। কাত্তিক-দা, তা হ’লে কেরাসিন আর দেশলাই এনে দি ? কাত্তিক মুখখানা হাড়ি ক’রে বসে রইল। তুবড়ি একটা পয়সা বার করে বললে—‘কাত্তিক-দ, এই লাখ টাকা ভরতি ক’রে দিলুম, জিগীষা দেবীকে আমার চাদাটা পাঠিও ’