পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b一え8 করিবে স্থির করিতে না পরিযা সে যেখানে ছিল সেখানেই দাড়াইয়া রহিল। বুকের ভিতয়টা তাহার জাল করিতে লাগিল । গুজরাটী বণিক তেতলায় উঠিবামাত্ৰ বৰ্ম্ম। ঝিটি আসিয়া তাহাকে বিনীতভাবে অভ্যর্থনা করিয়া বসিবার ঘরে লইয়া গেল। মিনিট দুই তাহাকে একলা বসিতে হইল। তিনি চারিদিকে তাকাইয়া দেখিতে লাগিলেন, হঁ্য বড়মানুষের বাড়ী হওয়াই সম্ভব বটে। কিন্তু বাড়ীর সুন্দরী কত্ৰীটি কোথায় গেলেন ? তাহারই সহিত আর একবার সাক্ষাতের আশায় ভদ্রলোক নিজেই আসিয়াছিলেন, তাহ ন হইলে একজন কৰ্ম্মচারীকে পাঠাইলেই কাজ চলিয়া যাইত । মা সান শীঘ্রই আসিয়া পৌছিল। মধুর হাস্যে বণিককে মুগ্ধ করিয়া বলিল, “এই যে আপনি এসে বসে আছেন। সে জিনিষগুলি এনেছেন কি ?” রত্নবণিক নিজের লম্বা কোটের পকেট হইতে একটি চামড়ার কেস বাহির করিলেন, সেইটি যুবতীর দিকে অগ্রসর করিয়া দিয়া বলিলেন, “এরই ভিতর কতকগুলো আছে, আপনার যদি না পছন্দ হয় তাহলে কাল আরো মাল নিয়ে আস্ব, আপনি পছন্দ করে নেবেন। সব চেয়ে ভাল হয় যদি আপনি একবার আমার দোকানে আসতে পারেন। সেখানে যা চান সবই পাবেন, বেশী জিনিষ ত নিয়ে বেড়ান যায় না ? পথে ঘাটে নানা বিপদ অাছে।” মা সান বলিল, “আমার একলার পছন্দে যদি কাজ হত, তা হলে কি আর আপনাকে এত কষ্ট দিতাম ? আমার মা পছন্দ না করলে ত আমি কিছু কিনতে পারি না । দুঃখের বিষয়, তিনি এমন পীড়িত, যে, বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না। কাজেই আপনাকে এতটা অসুবিধায় ফেলতে হল ।” গুজরাটা ভদ্রলোক অমায়িক হাসিতে সারামুখ ভরিয়া ফেলিয়া বলিলেন, “না, না, অসুবিধা আবার কি ? আমাদের কাজই এই । আপনি যে অনুগ্রহ করে আমায় ডেকেছেন, সে-ই যথেষ্ট ।” মা সান বলিল, “আচ্ছা, জিনিষগুলো তাহলে মাকে প্রবাসী—অশ্বিন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড দেখিয়ে আসি ? তিনি পাশের ঘরেই শুয়ে আছেন। আপনাকে একটু চা দিতে বলি ?’ স্বন্দর মুখের খাতিরে ভদ্রলোক অনেকটা ত্যাগ স্বীকার করিয়াছিলেন, তাই বলিয়া গোড় হিন্দুমাহুষ, বৰ্ম্মার বাড়ীতে চ খাইয়া জাত দিতে রাজী ছিলেন না। ব্যস্ত হইয়া বলিলেন, “ন, না, আমার চা খাওয়া মোটেই অভ্যাস নেই।” মা সান আবার ভুবন-ভুলান হাসি হাসিয়া জহরতের কেস্ট লইয়া অন্য ঘরে চলিয়া গেল। ভদ্রলোক বসিয়া বসিয়া একখানা খবরের কাগজ উল্টাইতে লাগিলেন। সিড়িতে খুব ভারি পায়ের শব্দ খানিক পরে শোন গেল। রত্নবণিক যেখানে বসিয়াছিলেন, সেখান হইতে সিড়ি দেখা যায় না । ঝিট। তখনি ঘরের ভিতর দিয়া ছুটিয়া কোথায় যাইতেছিল তাহাকে বলিয়া গেল, “ডাক্তার এসেছেন, আপনার একটু দেরি হবে।” দেরি হইলেই বা উপায় কি, ভাবিয়া ভদ্রলোক খবরের কাগজ উণ্টইয়াই চলিলেন । মা সান বোধ হয় ডাক্তারকে লইয়া ব্যস্ত, তাই বলিয় তাহাকে এতটা উপেক্ষ না করিলেও চলিত। তাহর অনেক কাজ ফেলিয়া আসিয়াছেন মনে করিয়া একটু অতুতাপ হইতে লাগিল। ডাঃ মরফি ঠিক সময়েই আসিয়াছিলেন। উপরে উঠিব|মাত্র মা-সান তাহাকে অভ্যর্থনা করিতে ছুটিয়া আসিল, বলিল “আক্ষন, আস্বন, আমার ম৷ এই ঘরে আছেন। তিনি আজ একটু অস্বস্থ। কাল বাবাকে নিয়ে আমাদের বড় মুস্কিল গিয়েছে। সারারাত কেউ ঘুমতে পায়নি।” ডাক্তার মা-সানকে দেখিয়া খুসি হইলেন। মেয়েটি দেখা যাইতেছে মায়ের চেয়েও স্বন্দরী এবং স্বশিক্ষিত, ইংরেজী বলে প্রায় ইংরেজের মতই। তাহার সঙ্গে সঙ্গে তিনি গৃহিণীর ঘরে আসিয়া ঢুকিলেন। ঘরখানি ছোট, তবে বেশ ফিটফাট করিয়া সাজান। ডাঃ মরফিকে দেখিয়া গৃহিণী বলিলেন, “আমুন, আস্বন, আপনার খুব অনুগ্রহ। কাল ওকে নিয়ে বড় কষ্ট পেয়েছি। এ রকম হলে আমরা আর বেশীদিন টিকৃব না।”