পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8 প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ ASAAAAS SAAAASAASAASAASAA AAAAMAMAMAMAeeS মুখের উপর জবাব করিল। জেলরও তাঁহাই চায়। প্রত্যেক কয়েদীকে ত্রিশ ঘা বেতের আদেশ হইল। ডাক্তার আসিয়া কয়েদী দুইজনকে দেখিল । দিব্য হৃষ্টপুষ্ট নীরোগ শরীর, ডাক্তার বেত মারিতে অনুমতি দিল । জেলর কালীচরণকে ডাকাইয়া পাঠাইল । ৪০৫ নম্বর কয়েদীর কাপড় খুলিয়া তাহাকে ত্রিকোণ কাঠের ফ্রেমে বাধিবার উদ্যোগ করিতেছে। পাশে দশ বার গাছা আটি বাধা লম্বা বেত পড়িয়া রহিয়াছে। জেলর কালীচরণকে বলিল,—তুমি ইহাকে বেত মার। কালীচরণের মুখ শুকাইয়া গেল, তাহার চক্ষু কপালে উঠিল। সে ঢোক গিলিয়া বলিল,—হুজুর, আমি পারব नीं । e জেলর গর্জন করিয়া উঠিল,—কী ! আমার হুকুম শুনবে না ? —হুজুর, হুকুম শোনাই ত আমার কাজ, কিন্তু ওকে আমি বেত মারতে পারব না । —হুকুম না মানলে তোমাকে বেত খেতে হবে। —তাই খাব হুজুর, বলিয়া কালীচরণ গায়ের জাম খুলিতে লাগিল । জেলর হাত তুলিয় তাহাকে নিষেধ করিল। ঠোট কামড়াইয়া বলিল,—আচ্ছা, তোমাকে মারতে হবে না, তুমি এইখানে দাড়িয়ে থাক । কালীচরণ দাড়াইয়া রহিল । জেলর আর একজন বলবান কয়েদীকে বেত মারিতে আদেশ করিল। ৪০৫ নম্বর কয়েদী প্রথম কয়েক ঘা বেত খাইয়া আৰ্ত্তস্বরে চীৎকার করিতে লাগিল, তাহার পর শুধু গোঙানি। ৪০৬ দাড়াইয়া ঠক্ ঠক্‌ করিয়া কঁাপিতেছিল। কালীচরণ মুখ ফিরাইল । দুইজনকে বেত মারা হইলে পর জেলর কালীচরণকে ডাকিয়া নিজের ঘরে লইয়া গেল। জিজ্ঞাসা করিল,—ঐ ছ জনের জন্য তোমার জেল হয়েচে, তুমি ওদের বেত মারতে অস্বীকার করলে কেন ? g —হুজুর, আমার যা হবার তা হয়েচে । ওদের মেরে আমি ত আর জেল থেকে খালাস পাব না। ওরা [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড আমি ওদের অধৰ্ম্ম করেচে, তেমনি সাজাও পেয়েচে । গায় হাত তুললে আমার পাপ হবে। জেলর কালীচরণের মুখের দিকে চাহিয়া খানিকক্ষণ ভাবিল। কালীচরণ মুখ, অশিক্ষিত, অকারণে বন্দী হইয়াছে, অথচ যাহারা তাহাকে এরূপ বিপদে ফেলিয়াছে তাহাদের প্রতি ক্রোধ নাই, প্রতিহিংসার প্রবৃত্তি নাই। জেলর কালীচরণের কাধে হাত দিয়া বলিল,—তুমি যদি তোমার শত্রুদিগকে ক্ষমা করিতে চাও তা হলে আমি আর তাদের পীড়ন করব না । কালীচরণ বলিল,—হা হুজুর, সেই ভাল। মাথার উপর ধৰ্ম্ম আছেন তিনি বিচার করবেন। অধৰ্ম্ম সইবে কেন ? ৪০৫ আর ৪০৬ নম্বর কয়েদী সারিয়া উঠিয়া আবার যখন কাজ করিতে আরম্ভ করিল, সেই সময় জেলর একদিন তাহাদিগকে বলিল, আমি তোমাদের আচ্ছা করে জব্দ করতাম, কালীচরণের জন্য তোমরা রক্ষা পেলে । সে তোমাদের পিঠে নিজে বেত মারেনি, এখনও তোমাদের দয়া করে। যদি আবার সাজ পেতে না চাও তা হ’লে কালীচরণকে খুসি রাখবে। সেই দিন হইতে এই দুইজন কয়েদী কালীচরণের খোসামোদ করিত । জেলর ইহাতেই ক্ষান্ত হইল না। কয়েদী দুইজনকে দিয়া কালীচরণের সম্বন্ধে প্রকৃত ঘটনা লিখাইল । তাহার। স্বীকার করিল,কালীচরণ সম্পূর্ণ নিরপরাধী, যে-সকল নোট তাহাকে ভাঙাইতে দেওয়া হইত সেগুলা যে জাল তাহ। তাহার জানিবার কোন সম্ভাবনা ছিল না । সে সবে গ্রাম হইতে আসিয়াছিল, দরিদ্র, নিরক্ষর, নোট কখন চক্ষে দেখিয়াছিল কি না তাহাই সন্দেহ । সেই সঙ্গে জেলর লিখিল, কালীচরণের স্বভাব-চরিত্র সে উত্তমরূপে লক্ষ্য করিয়াছিল। সে নিরীহ, ভালমানুষ, কিছুই জানে না, তাহাকে যে-কেহ স্বচ্ছন্দে ঠকাইতে পারে। কালীচরণের মুক্তির জন্য জেলর যে সময় লিখিতে আরম্ভ করিল তখন কারাবাস পাচ বৎসর পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। ছয় মাসে নয় মাসে কখন কালীচরণের নামে একখানা চিঠি আসিত। তাহার স্ত্রী গ্রামের কাহাকেও