পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RX o মুকুন্দচন্দ্র বাড়ী বসিয়া গ্রাম্য সবরেজেষ্ট্র আফিসে কুড়ি টাক বেতনের কেরাণীগিরি করিতেন । কুড়ি টাকা বেতনে এ কালে সংসার যাত্রা নিৰ্ব্বাহ করা কঠিন ; কিন্তু দাদার উপার্জিত অর্থেই সংসার চলিত, তাহার কুড়ি টাকার কুড়ি পয়সাও খরচ হইত না, বরং দাদার প্রেরিত সংসারখরচের টাকা হইতেও কিছু কিছু সঞ্চিত হইত ; তাহ ডাকঘরের সেবিংস ব্যাঙ্কে জমিত ; সেবিংস ব্যাঙ্কের দুষ্ট থানি খাতার একখানি থাত মুকুন্দের স্ত্রী মুক্তকেশীর নামে, অন্ত থানি পুত্র মুরারীমোহনের নামে। এতদ্ভিন্ন মুক্তকেশী গহনাপত্র বন্ধক রাখিয় পল্লীবাসিনীগণকে মাসিক অৰ্দ্ধ আন স্বদে নিত্য টাকা ধার দিতেন । কয়েক বৎসরের মহাজনীতে সুদের টাকা আসল ছাড়াইয়া উঠিয়াছিল । গ্রামের সকলেরই বিশ্বাস ছিল মজুমদারদের ছোট গিন্নির হাতে যে টাকা আছে তাহাতে তালুক মুলুক কিনিতে পারা যায় । গ্রামের লোক যাহা জানিত, বড় গিল্লি অর্থাৎ হরিশ্চন্দ্রের স্ত্রী মাতঙ্গিনী ঠাকুরাণী তাহ যে না জানিতেন এমন নয় ; কিন্তু জানিয়া শুনিয়াও অগত্যা তাহাকে চুপ করিয়া থাকিতে হইত ; পরম শক্রতেও হরিশ্চন্দ্রের স্ত্রৈণ অপবাদ দিতে পারিত না । মাতঙ্গিনী দেবরের কপট ব্যবহারের কথা অনেকবার স্বামীর গোচর করিয়াছিলেন ; অভিমান, অশ্রত্যাগ, ভূমিশয্যাগ্রহণ, বাপেরবাড়া চলিয়৷ যাইবার ভয় প্রদর্শন প্রভৃতি সাংঘাতিক অস্ত্রে স্বামীর মৰ্ম্মভেদ করিবার চেষ্টারও ক্রট করেন নাই, কিন্তু হরিশ্চন্দ্রের ভ্রাতৃবাৎসল্যের স্বধৃঢ় বৰ্ম্মে তাহা সকলই চুর্ণ হইয়াছিল। সদাশিব হরিশ্চন্ত্র স্ত্রীর অভিযোগে কোন দিন কর্ণপাত করেন নাই ; ঘ্যানঘ্যানানি নিতান্ত অসহ্য হইলে তিনি বলিতেন, “তোমার কথা শুনিয়া কি আমার ছোট ভাইটিকে পৃথক করিয়া দিব ? তাহা হইলে গ্রামের লোকের কাছে মুখ দেখাইব কি করিয়া ? এ সকল কথা আর তুমি মুখে আনিও ন৷”— স্বামীর অন্ধত্ব দূর করিবার আশা নাই বুঝিয় মাতঙ্গিনী হতাশ ভাবে অশ্রুবর্ষণ পূর্বক মনের জালা নিবারণ করিতেন । সুতরাং সংসারের মুখের অভাব না থাকিলেও শান্তি ছিল না । মুকুন্দ খুব সাংসারিক লোক, তাহার বাহিক সরলতা প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড আন্তরিক কুটিলতার নির্ভরদগুস্বরূপ ছিল। তিনি দিব্য চক্ষুতে দেখিতেছিলেন, দাদা তাছাকে যতই স্নেহ করুন, বিশ্বাস করুন, তাসের মুন্দর প্রাসাদ এতদিন চুর্ণ হইবেই, একদিন তাহাকে পৃথক হইতেই হইবে ; সুতরাং তিনি সাধ্যানুসারে বেশ গুছাইয় লক্টতেছিলেন, কিন্তু দাদা যাহাতে মনে কষ্ট পান বা তিনি বিরক্ত হন, প্রকাশ্যে এরূপ , কোন কাৰ্য্য করিতেন না, দাদার প্রতি মুকুন্দ ইষ্ট দেবতার ন্তায় ভক্তি প্রকাশ করিতেন। নিজের পুত্রের জন্ত বিলাতী কাপড় কিনিতেন, কিন্তু ভাইপে হারাণের জন্ত মিকি ফরাসডাঙ্গার ধুতি ভিন্ন অঙ্গ কাপড় কিনিতেন না । হরিশ্চন্দ্রও জানিতেন সংসারে তাহার ভাই ভিন্ন অধিক আপনার জন আর কেহই নাই, মুকুন্দের সঙ্গেই র্তাহার সকল বৈষয়িক পরামর্শ ইষ্টত । তিনি সাংসারিক ব্যয় নিৰ্ব্বাহের জন্ত ভ্রাতার নিকট প্রচুর অর্থ পাঠাইতেন, কিন্তু “ভাই কি মনে করিবে’ ভাবিয়া কোনদিন তাহার নিকট জমা খরচ চাহেন নাই ; বরং মুকুন নিষ্কলঙ্ক থাকিবার জন্ত জমা খরচ দেখাইতে আসিলে তিনি বলিতেন, “মুকুন্দ, তুমি কি আমার পর যে গোমস্ত মুহুরীর মত তোমার কাছে খরচের হিসাব লইব ?”—মুকুন্দ বলিতেন, “না দাদা, পাচ জনে পাচ কথা বলিতে পারে, আপনার কান ভারি করিতে পারে, হিসাব পত্র দেখাই ভাল ”— হরিশ্চন্দ্র বলিতেন, “আমি কি স্ত্রীলোক যে পরের কথায় নাচিব ? তোমাকে অবিশ্বাস করিলে সংসারে আর কাহাকে বিশ্বাস করিব ? বিশেষতঃ তুমি ও তোমার স্ত্রী পুত্র আমার অবশু প্রতিপাল্য, তোমরা আমার খাইবে না ত কোন পরের থাইতে যাইবে ?” এ সকল কথা হরিশ্চন্দ্রের বন্ধুগণেরও অবিদিত ছিল না ; তাহারা তাহার সদাশয়তায় মুগ্ধ হইতেন বটে, কিন্তু গোপনে বলাবলি করিতেন, “ভায় একটা পরগণার নাস্লেবী করিতেছেন বটে, কিন্তু র্তাহার একেবারেই বৈষয়িক জ্ঞান নাই, কলিকালে এমন সংসার-জ্ঞানবর্জিত লোক প্রায় দেখা যায় না ; দায়ে না ঠেকিলে হরিশের শিক্ষা হইবে না।” ( २ ) বলা বাহুল্য, হরিশ্চত্রের পরিবারবর্গ বাড়ীতেই BBDS BD SD HHBB BT u fragr چہچچم