পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ৷ —“একশ পাউণ্ড ।” —“একশ পাউণ্ড ! এত টাকা এখন পাবো কোথায়? তোমার কি এখনই দরকার—ছুদিন সবুর করলে চলে না ?” বাটি কাতর হইয়া বলিল-—“ন দেরী করবার ষো নেই ।” তাহার কণ্ঠস্বরে উদ্বেগ, ভয়, নৈরাপ্ত মূৰ্ত্তিমান হইয়া উঠিল! বাটির সে অবস্থা দেখিয়া ফ্রাঙ্কের মায়া করিতে লাগিল । তিনি বলিলেন—“আচ্ছা দাড়াও দেখি–আচ্ছা, কোনো বকমে যোগাড় করে দেবো । কাল বলব।”

  • কাল সকালেই চাই ।”

—“কাল সকালেই—এত তাড়া ? আচ্ছা সে হবে । এখন শোওগে, আমার ঘুম পেয়েচে । কাল সকালেই টাকা পালে—যেমন করে পারি যোগাড় করে দেবে—ভয় নেই, তোমায় মুস্কলে ফেলবো না । কিন্তু বলে রাখি তুমি বড় বাড়িয়েচ—এই সে দিন ত্রিশ পাউণ্ড দিলুম, দুদিন যেতে না যেতেই আবার ত্রিশ পাউণ্ড নিলে ।” মুহূর্তের জন্ত বাটি আলোর পশ্চাতে ছায়ার মতো শক্ত হইয়া দাড়াইয়। রহিল—তার পর ফ্র্যাঙ্কের বিছানার উপর আছড়াইয়া পড়িয়া রুদ্ধশ্বাসে র্কাদিতে লাগিল । ফ্র্যাঙ্ক অধীর ভাবে উঠিয়া বসিয়া মেহাদ্রকণ্ঠে বলিলেন—“বাটি, কি হয়েচে ? কান্না কিসের ?” বার্টি মুখ লুকাইয়া কাদিতে কঁাদিতে বলিল—“তোমার উপর ভারি অত্যাচার কর্চি—আমি নরাধম! তোমার নিজের দুঃখেই তুমি কাতর তার উপর আমার দুঃখের বোঝা । আমি বড় বিপদে পড়েচি নচলে তোমায় বিরক্ত করতুম না। আমার এ কিসের দেন সে কথা বলতেও লজ্জা করে—সেই যে দিনকতক পালিয়েছিলুম এ সেই সময়কার দেন । বুঝেচ—বুঝতে পেরেচ ?” ফ্র্যাঙ্ক একটু হাসিয়া বলিলেন—“ও-ও! বুঝেছি ভবিষ্যতে সাবধান থেকে ! তোমার কোনো ভাবনা নেই, কাল আমি সব ঠিক করে দেবে—এখন শোওগে— যাও।” বার্টি দাড়াষ্টয়া উঠিল—হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা জানাইবার জন্ত ফ্র্যাঙ্কের কাতখান একবার নিজের হাতের উপর তুলিয়া লইল । , - - डांकJछढ़क ©ዓ » ফ্র্যাঙ্ক বলিলেন—“যাও আর দেরী কোরো না--- ঘুমোওগে ।” বাট নিজের ঘরে গেল। তাছার চক্ষে ঘুম নাই—সে বসিয়া বসিয়া ফ্রাঙ্কের নাসিকাধবনি শুনিতে লাগিল । তাহার প্রাণের মধ্যে তথনো একটা ঝড় বহিয়া চলিয়াছে। আর সহ হয় না ! সে অার একবার সজোরে নিজের গলাটা টিপিয়া ধরিল---জোরের পর জোর দিতে লাগিল— পাণটা বাহির হইবার উপক্রম । চতুর্থ ভাগ প্রথম পরিচ্ছেদ দুই বৎসর কাটিয়া গেছে । আমেরিকা কষ্টতে অষ্ট্রেলিয়া, অষ্ট্রেলিয়া হৃষ্টতে আমেরিক তারপর ইউরোপ এষ্ট করিয়া ঘুরিয়াই দিনগুলা গেল। কিন্তু তবু মনের শান্তি কই ? নুতন নূতন দেশে গিয়া জীবনের স্রোত তো কষ্ট নূতন দিকে ফিরিল না –সেই অতৃপ্তি, সেই কাহতাশ, সেই বেদন বুকে বিধিয়াই রহিল! কোনো নূতন উদ্দেশু, কোনো নুতন কাজ, কোনো নুতন চিন্তা অতীতের সম্পর্ক হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া তাঙ্গকে তো নূতনের মধ্যে ডুবাইয়া দিতে পারিল না । ফ্র্যাঙ্ক যেমনই ছিলেন তেমনই রছিলেন। মুতনের মধ্যে এইটুকু ইয়াছে যে এত দিন জীবনযাত্রার যে দুর্ভাবনা ছিলনা এখন তাঙ্গ ধীরে ধীরে মাথা তুলিয়া জাগিয়া উঠিতেছে! মাসের পর মাস গেলেক্ট টাকা আপনি আসিয়া পড়িবে এই নিশ্চিন্তত দূর হইয়া যাইতেছে—এখন টাকা কেমন করিয়া সংগ্ৰহ হইবে তাঙ্গর জন্ত একটা চেষ্টা—একটা নিদারুণ চেষ্টা চাই ! অর্থগুলা কপূরের মতো এই কবছরে উধিয়া গেছে ! এখন থাটিয়া পয়সা না আনিলে জীবন বাচে না। জীবনের মধ্যে কোনো তৃপ্তি, কোনো সুখ নাই, তবুও তো সেই জীবনটাকে বাচাইয়া রাখিবার জন্ত আজ এ আপিসে কাল ও আপিসে চাকুরির সন্ধানে ঘুরিতে হইতেছে ! দারিদ্র্যের সহিত সংগ্রাম ;–স্কুধার তাড়না, অন্নবস্ত্রের দৈন্ত, আশ্রয়েল্প হীনতা এ সমস্ত দুঃখের সহিত স্বীকার