পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

^ 6 ఫి এমন সকল আচার অনুষ্ঠানের সে সৃষ্টি করচে যাতে তাকে অন্তরক স্মরণ করিয়ে দিচ্চে যে, দৈনিক জীবনযাত্রার মধ্যে তার সমাপ্তি নেই, সমাজ ব্যবহারের মধ্যেও তার অবসান নেই । সে এমন একটি বৃহৎ আপনাকে চাচ্চে যে আপনি তার বর্তমানকে, তার চারদিককে, তার প্রবৃত্তি ও লালনাকে ছাড়িয়ে অনেক দূরে চলে গেছে । আমাদের বৈরাগী বাংলাদেশের একটি ছোট নদীর ধারে এক সামান্ত কুটীরে বসে এই আপনির খোজ করচে, এবং নিশ্চিন্ত চান্তে বলচে, সবাইকেই আসতে হবে এই আপনির খোজ করতে । কেন না, এ ত কোনো বিশেষ মতের, বিশেষ সম্প্রদায়ের ডাক নয়, সমস্ত মানবের মধ্যে যে চিরন্তন সত্য আছে, এ যে তারি ডাক । কলরবের ত অন্ত নেই—ক ও কল কারখানা, কত যুদ্ধ বিগ্ৰহ, কত বাণিজ্য ব্যবসায়ের কোলাহল আকাশকে মথিত করচে কিন্তু মানুষের ভিতর থেকে সেচ সত্যের ডাককে কিছুতেই আচ্ছন্ন করতে পারচে না ; মানুষের সমস্ত ক্ষুধা তৃষ্ণ সমস্ত অর্জন বর্জনের মাঝখানে সে রয়েছে ; কত ভাষায় সে কথা কষ্টচে, কত কালে কত দেশে ক তরূপে কত ভাবে সমস্ত আগু প্রয়োজনের উপর সে জাগ্রত হয়ে আছে ! কত তর্ক তাকে আঘা করচে, কত সংশয় স্থাকে অস্বীকার করচে, কত বিকৃতি তাকে আক্রমণ করচে, কিন্তু সে বেঁচেষ্ট আছে —সে কেবলি বলচে, তোমার আপনিকে পাও, আত্মানং বিদ্ধি । এই আপনিকে মানুষ সহজে আপন করে তুলতে পারচেন, সেই জন্সে মানুষ স্বত্রচ্ছিন্ন মালার মত কেবলি খসে যাচ্চে, ধূলোয় ছড়িয়ে পড়চে । কিন্তু যে বিশ্বজগতে সে নিশ্চিস্ত হয়ে বাস করচে সেই জগৎ ত মুহুমুহু এমন করে থসে পড়চে না, ছড়িয়ে পড়চে না । অথচ এই জগৎটিত সঙ্কজ জিনিষ নয়। এর মধ্যে যে সকল বিরাট শক্তি কাজ করচে তাদের নিতান্ত নিরীক বলা যায় না । আমাদের এতটুকু একটুখানি রাসায়নিক পরীক্ষণশালায় যখন সামান্ত একটা টেবিলের উপর দু’চার কণা গ্যাসকে অল্প একটু বন্ধনমুক্ত করে দিয়ে তাদের লীলা দেখতে যাই তখন শঙ্কিত হয়ে থাকতে হয়, তাদের গলাগলি জড়াজড়ি ঠেলাঠেলি মারামারি যে কি প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড অদ্ভুত এবং কি প্রচও তা দেখে বিস্মিত হই। বিশ্ব জুড়ে, আবিষ্কৃত এবং অনাবিষ্কৃত, এমন কত শত বাষ্প পদার্থ তাদের কত বিচিত্র প্রকৃতি নিয়ে কি কাও বাধিয়ে বেড়াচ্চে তা আমরা কল্পনা করতেও পারিনে। তার উপরে জগতের মূল শক্তিগুলিও পরস্পরের বিরুদ্ধ, আকর্ষণের উল্টে শক্তি বিকর্ষণ, কেন্দ্রামুগের উল্টে শক্তি কেন্দ্রাতিগ । এষ্ট সমস্ত বিরুদ্ধতা ও বৈচিত্র্যের প্রকাও লীলাভূমি এষ্ট যে জগৎ, এখানকার আলোতে, আমরা অনায়াসে চোখ মেলচি, এথানকার বাতাসে অনায়াসে নিশ্বাস নিচ্চি, এর জলে স্থলে অনায়াসে সঞ্চরণ করচি। যেমন আমাদের শরীরের ভিতবটাতে কত রকমেব কত কি কাজ চলচে তার ঠিকানা নেই কিন্তু আমরা সমস্তটাকে জড়িয়ে একটি অখণ্ড স্বাস্থ্যের মধ্যে এক করে জানচি—দে চটাকে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, পাকযন্ত্র প্রভৃতির জোড়াতাড়া ব্যাপার বলে জানচিনে । জগতের রহস্তাগারের মধ্যে শক্তির ঘাত প্রতিঘাত যেমনি জটিল ও ভয়ঙ্কব হোকনা কেন, আমাদেব কাছে তা নিতান্তই সহজ হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ জগৎটা আসলে যে কি তা যখন সন্ধান কবে বুঝে দেখবার চেষ্টা করি তখন কোথাও আর তল পাওয়া যায় না । সকলেই জানেন বস্তুতত্ত্ব সম্বন্ধে এক সময় বিজ্ঞান ঠিক করে রেখেছিল যে পরমাণুর পিছনে আর যাবার জো নেই— সেই সকল স্বগ্নতম মূল বস্তুর যোগবিয়োগেই জগৎ তৈরি হচ্চে। কিন্তু বিজ্ঞানের সেই মূলবস্তুর দুর্গ ও আজ আর আদিকারণের মহাসমুদ্রের দিকে বিজ্ঞান বস্তুত্বের কুলকিনারা কোন দিগন্তবালে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্চে,—সমস্ত বৈচিত্র্য সমস্ত আকার আয়তন একটা বিরাট শক্তির মধ্যে একেবারে সীমা হারিয়ে আমাদের ধারণার সম্পূর্ণ অতীত হয়ে উঠচে । কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, যা একদিকে আমাদের ধারণার একেবারেই অতীত তাই আর একদিকে নিতান্ত সহজেই আমাদের ধারণাগম্য হয়ে আমাদের কাছে ধরা দিয়েছে । সেই হচ্চে আমাদের এই জগৎ । এই জগতে শক্তিকে শক্তিরূপে বিজ্ঞানের সাহাশ্যে আমাদের জানতে টে কে না । যতক্ট এক এক পা এগাচে তত