পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখা ] পৌরাণিক হিরাত ও বলথের মধ্য দিয়া তুর্কীস্থানে উপস্থিত হইলেই বেদের ব্যাখ্যাটা ভাল পাওয়া যাইতেছে। আরও যতই উত্তরে যাওয়া যায় বৃত্রসংহার কাব্যের ততই ভাল ভাষ্য মিলে । কেননা, ঐ সব স্থানে বৎসরের সর্বপ্রধান ঘটনাই হইতেছে বসন্তের আগমনে শীতের হস্ত হইতে প্রকৃতির বন্ধনমোচন। ইরানিয়ান ও আন্মানিয়ানদিগের পৌরাণিক কাহিনীতে দুই দেবতার নাম আছে— cr:Rog si tɛsia (Verethraghna and Vahagn) | আমাদের বাড়ীর ঐ বৃত্ৰছন বা বৃত্ৰয় ঠাকুরের নাম বলিয়াই মনে হইতেছে । আর্য্যগণ আসিতে আসিতে নামটা রাস্তায় ফেলিয়া আসিয়াছেন মাত্র । সুতরাং এখন বোধ হয় আর বেশী কথার প্রয়োজন নাই । আমাদের এই বৃত্রবধরূপ চিরপরিচিত উপাখ্যানটর ভিত্তি খুজিতে আমাদিগকে ভারতবর্ষ ছাড়িয়া অনেকদূর যাইতে হইলে । আজ এই জ্ঞানবিজ্ঞানালোকিত বিংশ শতাব্দীতে সুজলা সুফল বঙ্গদেশে বসিয়া কাল বাঙ্গালী আমরা যে *বুত্র-সংকার” কাব্যের রসাস্বাদন করতঃ আনন্দ উপভোগ করিতেছি, কোন সুদূর অতীতে, আৰ্য্যপিতামহগণের এই পুণ্যক্ষেত্র ভারতক্ষেত্রে আপনাদের বাসভূমি নির্দেশ করিবার কত শত যুগ আগে, কোন শীতপীড়িত উদ্ভিদহীন উত্তরকুরুতে, হয়তো বা মনোহারিণী উষার সেই সুমেরু প্রস্থে, অন্ততঃ দ্বাদশ সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে শ্বেতকায় আৰ্য্যগণের হৃদয়ে তাহার গোড়া পত্তন চইয়াছিল, এ কথা ভাবিতে গেলে শরীর রোমাঞ্চিত হইয় উঠে, হৃদয় বিস্ময়ে অভিভূত হইয় পড়ে ! প্রাচীন ও নবীনের কি অপূৰ্ব্ব মিলন ! শ্বেত ও হ্যামলের, দেশের ও কালের ব্যবধান কি অকিঞ্চিৎকর ! সেই স্বমেরু হইতে ভারত মহাসাগর পর্য্যন্ত সমস্ত ভূখণ্ড পিতৃপুরুষগণের পদরেণুতে অতি পবিত্ৰ ! এখন যদি কেহ ভারতবর্ষের প্রতি অঙ্গুলী নির্দেশ করিয়া—তাহ। পঞ্চমদষ্ট হউক আর ব্ৰহ্মদেশই হউক—কেবল জন প্রবাদের উপর নির্ভর করতঃ বলেন, এই ছিল দধীচির আশ্রম, আর ইন্দ্রের বজ্রাঘাতে ঐখানে বৃত্ৰ পড়িয়া গিয়াছিল—ঐ দেখ গর্ভপানী হইয়া রহিয়াছে, তবে তাহ নিশ্চয়ই ইতিহাস হইবে না। আমরা দেখিলাম, পৌরাণিক উপাখ্যান হইতে ইতিহাসের মাল মসলা সংগ্ৰছ করিবার পক্ষে বহু বিঘ্ন AeSASAeSAMAeSAASASAAAAASA SAAAASAAAA .-.-عمده - ح*۳* جی-* ه আখ্যায়িকার উপাদান ৬২৩ হিমালয়ের মত মস্তকোত্তলন করিয়া দণ্ডায়মান রহিয়াছে। ইহাদিগকে অতিক্রম করিয়া নিশ্চিত সত্যে পৌছিতে হইলে কি গভীর জ্ঞান, কি অগাধ পণ্ডিত্য, কি বিপুল সংগ্ৰহ, কি বিরাট আয়োজন, কি ঐকান্তিক চেষ্টা, কি অমামুখী পরিশ্রম এবং কি অপরাজেয় অধ্যবসায়ের প্রয়োজন তাহা সহজেই অনুমেয় । গিজে (Guizot), গিবন (Gibbon), বাক্লের (Buckle) স্তায় সম্পূর্ণ স্বাৰ্থত্যাগ পক্ষপাতশূন্ত নির্লিপ্ত ইতিহাসগ্রস্ত মহাপুরুষের আবির্ভাব ছাড়া প্রকৃত ইতিহাস রচিত হইতে পারে না । কেবল সত্যের অমুসন্ধান —আর সকল চিন্ত হইতে হৃদয়কে উন্মুক্ত করিতে হইবে। কোনও বিশেষ মতের দাসত্ব লষ্টয়া ইতিহাস হয় না । এটা গ্রহণ করিব না তাক হইলে ভারতের প্রাচীনত্ব খণ্ডিত হয়, উহা প্রত্যজ্য, কেননা, উহা দ্বারা হিন্দুজাতির মহিমা খৰ্ব্ব হইতে পারে ইত্যাদি চিস্ত ঐতিহাসিকের নহে। যদি সত্যের উদ্ধারের জন্ত শতসহস্র বর্ষের প্রাচীন অট্টালিকা ভূমিসাৎ করিতে হয়, কি করিব—নাচার। অর্থাৎ একেবারে নির্লিপ্ত নিস্পৃক্ত সন্ন্যাসী হইতে কষ্টবে। ইতিহাসের পত্তন হইবে না । নতুবা ভারতে ইতিহাস যতই কেন গৌরবমণ্ডিত হউক না, তাহ। যদি সত্যে প্রতিষ্ঠিত না হয়, তবে তাঙ্ক। দ্বার জাতীয় কল্যাণ সাধিত হইতে পারে না । ঋষি বলিয়াছেন—“সত্যুমেব জয়তে নামৃতম্।” “সমূলে বা এষ পরিশুষ্যতি যোহনুতমভিবদতি ।” মন্তব্য—কেন সকল জাতির মধ্যে এমন করিয়া অনিবাৰ্য্যরূপে পুরাণের আবির্ভাব হইল ভাষার দিক হইতে তাহার একটা উত্তর আছে। যেমন ব্যক্তিগত জীবনে, তেমনি জাতীয় জীবনেও শৈশব দেখা যায়। শিশুর ভাষার সংস্থান অভ্যল । সে কয়েকটিমাত্র কথা শিখিয়া রাখিয়াছে যাহা সে সব বিষয়েই প্রয়োগ করে । সে কুকুর বিড়ালের কথাই বলুক আর জল বায়ুর বিষয়ই ভাবুক, সে মানুষকেই ডাকুক আর চন্দ্র স্বৰ্য্যকেই আহবান করুক, ভাষা তার এক আকারই ধারণ করে । এই বিভিন্ন জাতীয় বস্তু সকলের সম্বন্ধে কথা বলিতে যাষ্টয়া যে বিভিন্ন প্রকারের ভাষা, অন্তত বিভিন্ন প্রকারের ক্রিয়াপদ ব্যবহার করিতে হইবে সে জ্ঞান তাহার পরিস্ফুট হয় নাই। “পবন বহিতেছে” বা “পবন দৌড়িতেছে” এই দুইএর মধ্যে এক “পবন” বায়ু