পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ు প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭। ভগবান বলিলেন—“তুহার বাসনা নাই-তিন বাসনারহিত। তিনি প্রাজকল্প নহেন, তিনি প্রাজ্ঞ। এইপ্রকার লোককেই তুমি মুনি বলিয়া জানিও। তিনি - অকিঞ্চন, কামনা ও অস্তিত্বে তিনি অনাসক্ত।” ( २ ) উপসিব-মাণবক-পুচ্ছ । আয়ুষ্মান উপসিব জিজ্ঞাসা করিলেন—"হে শাক্য। আমি বিন আশ্রয়ে মহাস্রোত পার হইতে অসমর্থ। হে সমস্ত-চক্ষু! আপনি এমন এক অবলম্বনের বিষয় বলুন যাহা আশ্রয় করিয়৷ এই স্রোত উত্তীর্ণ হইতে পারি।" ভগবান বলিলেন—“হে উপসিব । আকিঞ্চন্তা-ভাব দর্শন করিয়া, স্মৃতিমান থাকিয়া, কিছুই নাই এই চিন্তা আশ্রয় করিয়া, তুমি স্রোত উত্তীর্ণ হইতে পারিবে। বাসনা ত্যাগ করিয়া, সন্দেহ (কিংবা বাকা ) হইতে বিরত থাকিয় দিবানিশি "তৃষ্ণক্ষয় ( নিৰ্ব্বাণ) অবলোকন কর !” আয়ুষ্মান উপসিব জিজ্ঞাসা করিলেন– “যিনি সমুদয় কামনায় বীতরাগ হইয়াছেন, যিনি অন্য সমুদয় পরিত্যাগ করিয়া আকিঞ্চন্তা-ভাব আশ্রয় করিয়াছেন, যিনি জ্ঞান দ্বারা পরম বিমোক্ষ লাভ করিয়াছেন, তিনি কি অচ্চত্র গমন না করিয়া, সেই স্থানেই ( অর্থাৎ সেই অবস্থাতেই ) অবস্থান করেন ?” ভগবান বলিলেন—“হে উপসিব ! যিনি সমুদয় কামনায় বীতরাগ হইয়াছেন, যিনি অল্প সমুদয় পরিত্যাগ করিয়া আকিঞ্চস্থ-ভাব আশ্রয় করিয়াছেন, যিনি জ্ঞানদ্বারা পরম বিমোক্ষ লাভ করিয়াছেন, তিনি অন্তত্ব গমন না করিয়া সেইস্থানেই অবস্থান করেন।” উপসিব জিজ্ঞাসা করিলেন—“হে সমস্ত-চক্ষু ! তিনি যদি অন্তত্ব গমন না করিয়া বহুবর্ষ সেইস্থানে স্থিতি করেন এবং তিনি যদি সেইস্থানে প্রশান্ত ও বিমুক্ত ੱਜতবে কি এই প্রকার ব্যক্তির বিজ্ঞান থাকিবে ?” ভগবান বলিলেন,—’হে উপসিব! আমি মেনন বায়ুবেগে বিক্ষিপ্ত হইয়া অস্তগত হয়, ইহা আর saম গণনার মধ্যে থাকে না-তেমনি নাম ও রূপ হইতে বিমুক্ত হইয়া মুনি অস্তগত হন, তিনি আর তখন গণনার মধ্যে থাকেন [ ১০ম ভাগ । না। অস্তগত ব্যক্তির কোন রূপ থাকে না। যে ‘রূপ’ দেখিয়া লোকে ইহাকে অস্তিত্ব-বান্‌ বলিতে পারে গে ‘রূপ’ ইহার নাই। সমুদয় ধৰ্ম্ম অপগত হইলে সৰ্ব্বপ্রকার বাদামুবাদও অপগত হয় ।” গৌতম তোদ্যোকে ইহাকে আর অন্য অবস্থাতে গমন করিতে युग्न न| । ‘অচ্চি'র দৃষ্টান্ত হইতে অনেকে মনে করিতে পারেন যে মুক্তাত্মার বুঝি আতাস্তিক বিনাশ হইয়া থাকে। কিন্তু গৌতমের বলিবার উদ্বেগু তাহা নহে। যাহারা বেদান্ত অধ্যয়ন করিয়াছেন তাহারা সকলেই জানেন যে নাম ও রূপ হইতে বিমুক্ত হইলেই আত্মা মোক্ষলাভ করেন। বুদ্ধদেবও ইহাই বলিয়াছেন। যতক্ষণ বস্তুর নাম ও রূপ থাকে, ততক্ষণই সেই বস্তু আমাদিগের ইন্দ্রিয়গ্রাহ হইতে পারে, ততক্ষণই আমরা সেই বস্তুর বিষয় জানিতে পারি, বুঝিতে পারি, বলিতে পারি। যাহার নাম নাই, যাহার রূপ নাই এমন বস্তু আমাদিগের জ্ঞানের বিষয়ীভূত হইতে পারে না। মুক্তাত্মা নাম-রূপ-বর্জিত, সুতরাং এই প্রকার আত্মা আমাদিগের গণনার মধ্যে আসিতে পারেন না । মহেশচন্দ্র ঘোষ । চীনদেশের বুনো রেশম । পাঠকগণের মধ্যে অনেকেই বোধ হয় এই প্রকার রেশমের নাম শুনেন নাই। আজ আমরা এই বুনো রেশম সম্বন্ধে কিঞ্চিং বলিব। এই রেশম চীনদেশে প্রচুর পরিমাণে জন্মে। উহা চীনদেশ হইতে ফরাসী দেশে ও আমেরিকায় রপ্তানী হইয়া থাকে। আমেরিকায় ইহার কার্টুতি অত্যন্ত অধিক। এই রেশম চীনদেশের সাধারণ শ্রেণীর অন্তর্গত। ইহার ইংরাজী নাম Oak in. worm | श्शुद्र *If3a afs Antherca pernyi. যে পোকা ಶೌಥ್ರ 4 ®°® ± ¥ ž vfxfai cudranja ২য় সংখ্যা । ] বলিয়াছিলেন–‘তৃষ্ণক্ষয়াই মোক্ষাবস্থা ; ইগ অপেক্ষা অন্ত বিমোক্ষ আর নাই। উপসিব’কেও বলিয়াছিলেন যে ‘তৃষ্ণাঙ্গয়'ই পরম বিমোক্ষ এবং মুক্তপুরুষ এই অবস্থাতেই নিত্য অবস্থান করেন ; triloba নামক খৰ্ব্বাকৃতি দেবদারু জাতীয় বৃক্ষের পত্র ভক্ষণ করে। উক্ত দেবদারু জাতীয় বৃক্ষ হোনান, ছুছান এবং কিউচোওউ নামক পৰ্ব্বতসমূহে প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হইয় থাকে। এই পৰ্ব্বতন্ত্রয়ের পাশ্ববর্তী জেলাসমূহে বৎসরের অধিকাংশ সময় গ্রীষ্ম ও বর্ষা-হেতু উক্ত বৃক্ষাদির জন্মিবার কোন প্রকার বিঘ্ন হয় না। উক্তদেশে গৃহপালিত রেশমী পোকার দ্যায় এই বুনো রেশমী পোকা পালন করিতে হয় না। সেই জন্ত উছাদিগকে বুনো রেশমী পোকা বলে। পূর্বেই বলা হইয়াছে উহার দেবদারু জাতীয় বৃক্ষের পত্র থাইয়া জীবন ধারণ করে। কিন্তু গুহপালিত পোকা অষ্ঠ জাতীয় বৃক্ষের পত্র ভক্ষণ করে। তাহাকে মালবেরী বৃক্ষ বলে । এই বুনো পোকা মহিষ থাকিবার ঘরের কানাচে অথবা টানের গুদামের যে অংশ বাহির হইয়া থাকে তাহার নিম্নভাগে বাস করে । কারণ ঐরুপ স্থানে বাস করিলে হুর্যের উত্তাপ পাওয়া যায়, তাহাতে উহাদের বাসের পক্ষে সুবিধা হয়। ইহারা গরম স্থান অত্যন্ত পছন্দ করে। তাহারা এইরূপভাবে জানুয়ারী অথবা ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্য্যন্ত তথায় বাস করে। চীনের বসন্তকালে একবার চড়ুইভাতি করিয়া থাকে। এই সময়ে আনন্দভোজ সমাপন করিয়া রেশমের কার্য্যে মনোযোগী হয়। ইহার পরে ঐ বুনো রেশমী পোকা সেইস্থান হইতে গৃহে লইয়া আইসে। চীনেরা একটা ঘরের দরজা জানাল বন্ধ করিয়া তথায় উহাদিগকে রাখিয়া দেয়। আর যে একটা কাৰ্য্য করে তাহা বঙ্গদেশবাসিগণকে বুঝাইতে কিঞ্চিৎ কষ্ট পাইতে হইবে বটে। পাঠকগণের মধ্যে যাহারা দ্বারজিলিং, শিমলা, মসুরী, নাইনীতাল, ডালহাউসী বা কাশ্মীরে গমন করিয়াছেন তাহারা সহজেই বুঝিতে পরিবেন। কথাট এই-কোন গৃহের মধ্যস্থিত দ্রব্যাদি গরমে রাথিতে হইলে শীতপ্রধান দেশে সকল সময়ের জন্ত “চমনী” জালিয়৷ রাখিবার প্যবস্থা করিতে হয়। এক্ষণে সেই “চিম্নী" কি পাঠকপাঠিকাগণের নিকট তাঙ্গাই বলি গৃহের মধ্যভাগে একটি প্রশস্ত উনন প্রস্তুত থাকে, তাহার সঙ্গে একটি লম্বাকৃতি লৌহ-নলের সংযোগ ே ছয় । ঐ বিশাল উননে পাথুরিয়া কয়লার অগ্নি জালিয়া রাখা হয়। উক্ত চীনদেশের বুনো রেশম । - >おs গুহের বাতাস বাহিরের বাতাসের সঙ্গেসংযোগ হইতে পারেন। বলিয়া কিছু সময়ের মধ্যে গরম হইয় উঠে এবং ঐ কয়লার ধূম উহার লৌহ-নলের সাহায্যে বাহির হইয়৷ যায়। তাছাতে ঘর অপরিস্কার হইতে পারেন । বিলাত, আমেরিকা প্রভৃতি শীতপ্রধান দেশে কি ধনী কি নির্ধনী সকলের বাড়ীতেই বাসগৃহে “চিমনী” রাখিতে হয়। উহার খরচও নিতান্ত কম নহে। গরিব লোকেরা সেই জন্য রাত্রিতে শয়নগুহে “চিম্নী” জালিয়৷ শয়ন করে না। এক্ষণে “চিম্নী” কি তাহা বোধ হয় সকলেই বুঝিতে পারিয়াছেন। পূৰ্ব্বে বলা হইয়াছে উহাদিগকে ( পোকাগুলিকে ) গৃহমধ্যে বন্ধ করিয়া দরজা জানালা বন্ধ করিয়া চিমনী জালাইয়া রাখা হয়। তাহাতে উছারা বেশ গরমে থাকে। সেই ঘরের উনন নিয়মিতরূপে কুড়ি দিন জালিয়া রাখা হয়। ঐ সময়ের পরে কোষ । হইতে পোকাগুলি বাহির হইয়া পড়ে। কিছু সময় পুরুষ ও স্ত্রীকীট একত্রিত হইয়া বাস করে । অবশেষে চীনের তাহাদিগকে পৃথক পৃথক স্থানে রাখিয়া দেয়। তালপত্রের চুপড়ীমধ্যে স্ত্রীকীটগণকে রাগিয়া দেওয়া হয়। তথায় তাহারা ডিম পাড়িতে আরম্ভ করে । এই কাৰ্য্য ৫ দিন ধরিয়া হয়। গড়ে প্রত্যেক স্ত্রীকীট ৬০টা করিয়া ডিম পাড়ে। গৃহপালিত কীটের ডিম্ব অপেক্ষা ইহাদের ডিম্ব দশগুণ বড় হইবে। পূর্বের স্থায় তাহাদিগকে ১৫ হইতে ২০ দিন পর্য্যস্ত কোন গৃহমধ্যে বদ্ধ করিয়া রাপা হয়। উক্ত ঘরে উত্তাপও পূৰ্ব্বের স্থায় দিতে হয় তাহা বলাই বাহুল্য। ডিম্বগুলির “স্ত দেওয়ার” ব্যবস্থা করিয়া দেওয়া হয়। উহারা ফুটিয়া গেলে চুপড়াতে করিয়া উহাদের যে স্থানে খাদ্য উৎপন্ন হইতেছে তথায় লইয়া যাওয়া হয় । পূৰ্ব্বেই কথিত হইয়াছে উহার ক্ষুদ্র দেবদারু জাতীয় বৃক্ষের পত্র ভক্ষণ করে। ঐ চুপড়াগুলি বৃক্ষের নিম্নে রাধিস্থা দেওয়া হয়। উহা তথাকার অধিবাসিগণ দ্বারা এরূপ কৌশলে রাখা হয় যাহাতে তাহারা নিরাপদে ঐ ক্ষুদ্রায়তন দেবদার বৃক্ষে আরোহণ করিয়া বৃক্ষপত্র ভক্ষণ করিতে পারে । এইরূপভাবে পোকাগুলি দু'মাসকাল তথায় পত্র ভক্ষণ করিয়া বুদ্ধায়তন হইয় উঠে। ঐ সময়ের পরেই তাহার