পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ নিজের ভবিযাংটাও একেবারে ভিন্নমূৰ্ত্তিতে তাহার কাছে দেখা দিতে আরম্ভ করিয়াছে। তাহার ভিতর আর স দরিদ্র পল্লীর মৃৎকুটীর নাই, মাঠ ঘাট বনের অজস্র শামশোভা নাই। মলিনবসন মাত, শীর্ণ শুল্ক মুখ ভ্রাত ভগিনীগুলির ভাবনা এখন গৌণ হইয় দাড়াইয়াছে। কি অপূৰ্ব্ব ইন্দ্রলোকের স্বপ্নে এখন তাহার সমস্ত চৈতন্য মগ্ন ইষ্টয় থাকে! সে জানে ইহা মূর্খতা, ইহা বামন দিবার দুরাকাঙ্ক মাত্র, কিন্তু তবু কিছুতেই সে নিজেকে সংঘত করিতে পারে না। মনে হয় এই আশা যদি তাহাকে ছাড়িতে হয়, তাহার স্বার বাচিয়! থাকিবার কোনে উদ্দেশু, কোনো অবলম্বন থাকবে না। যে-মায়-অঞ্চনমাখা দৃষ্টিতে এখন সে লগতের দিকে তাকাইতেছে, সে-দৃষ্ট যদি হারায় তাহ হইলে আর কি চাহিয়৷ দেখিবার ক্ষমতা তাহার থাকিবে ? জগতের কি মূৰ্ব তখন তাহার চোখে পড়িবে কে জানে ? •লার কঙ্কালটাই হয়ত বিকটভাবে আত্মপ্রকাশ করিবে, উপরের সকল শোভ, সকল সৌন্দর্য্য নিঃশেষে মুছিয়া iাইবে । উঃ, এই মুখস্বপ্ন হইতে, সে কি ভীষণ, কি নিদারুণ জাগরণ । তাহাই কি বিধাত প্রতাপের を হইয়। চাঁদে হাত -- বাংলার রসকলা-সম্পদ Y o'ა হঠাৎ এই মায়া-মরীচিকা কেনই বা অবরোধ করিতে আবির্ভূত হইল । বাড়ি আসিয়া আর ভাবনার অবকাশ রহিল না, তাড়াতাড়ি খাইয়া স্কুলে দৌড়িল । আজ আর তাহার মন কিছুতেই কাজে বসিল না, কতক্ষণে ক্লাস শেষ হইবে তাহারই আশায় প্রতাপ ঘন ঘন ঘড়ি দেখিয়া অস্থির হইয়া উঠিল । বাড়ি পৌছিয়া, সামান্য একটু জলযোগ করিতেও যেন তাহার আর তর সহিতেছিল না। পিসীমাকে বলিল, “পিসীম, তাজরাত্রে আমি বাড়িতে থাবো না।” বৌদিদি মৃদুকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় নেমস্তন্ন হ’ল ঠাকুরপে ?” প্রতাপ একটু অপ্রস্থতভাবে বলিল, “নেমস্তয় ঠিক নয়। আজ ওঁদের ওখানেই থাকতে হবে, মিহিরের মায়ের শুশ্রুয়ার জন্যে, তাই সেখানেই খেতে বলেছেন।" পিসীমা বিরক্তভাবে বলিলেন, “বড়লোকের কাণ্ডকারখানাই আলাদা । নিয়ে গেল ছেলে পড়াতে, এখন জুতোসেলাই চণ্ডীপাঠ সব করিয়ে নিক্‌ ৷” প্রতাপের কানে কথাটা বড়ই রূঢ় শুনাইল, সে আর কথা না বলিয়া তাড়াতাড়ি বাহির হইয় গেল। তাহার দৃষ্টিকে শদুষ্ট্রে লিখিয়াছেন। সে ত শুকাইয়৷ মরিতেই ছিল, ক্রমশ: ब्लु..." বাংলার রসকলা-সম্পদ শ্ৰীগুরুসদয় দত্ত “আত্মানং বিদ্ধি”—“আপনার আত্মাকে চিনিয়া লণ্ড”–এই সারগর্ভ অনুশাসনের অন্তর্নিহিত গভীর সত্যটি ব্যক্তি ও জাতি উভয়ের পক্ষেই সমান ভাবে প্রযোজ্য ; কারণ প্রত্যেক ব্যক্তির যেমন এক একটি স্বতন্ত্র আত্মা আছে, সেইরূপ প্রত্যেক জাতিরও আপনার একটি স্বতন্ত্র আত্মা আছে। যে-ব্যক্তি নিজের আত্মার প্রকৃতির সঙ্গে সম্যক্ পরিচয় স্থাপন করিয়া তাহার সঙ্গে সমন্বয় রাখিয়া জীবন গঠন না করে, সে জীবনে কখনও চরম সার্থকতা লাভ করিতে পারে না । তেমনি আবার মে-জাতি আপনার নিজস্ব আত্মার সঙ্গে সমাকু পরিচয় স্থাপন করিয়া ও তাহার সহিত অবিরত ঘনিষ্ঠ যোগস্থত্র বজায় রাখিয়৷ চলিতে না পারে, সেই জাতির জীবন যে কেবল ব্যর্থতায় পৰ্য্যবসিত হয় এবং বিশ্ব-মানবের সংস্কৃষ্টির ভাণ্ডারে সেই জাতি যে বিশেষ কোন মূল্যবান দান করিতে পারে না তাহা নহে, সেই দুর্ভাগ্য জাতির অন্তর্গত ব্যক্তিসমূহের জীবনও মানুষের আত্মার চরম পরিণতির দিক দিয়া ব্যর্থতায় পৰ্য্যবসিত হয় এবং তাহারা শুধু অন্য কোন স্বসংস্কৃষ্ট জাতির আধ্যাত্মিক দাস-মাত্র হইয়া কালাতিপাত করে । , , ব্যক্তির এবং জাতির তাছাদের স্বকীয় আত্মার সঙ্গে ।